প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি‘র হঠকারী সিদ্ধান্তের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারীরা
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনস্থ মহাখালী ঔষধানাগারের জন্য মেডিসিন ও আরো কিছু মালপত্রসহ প্রায় ২১ কোটি টাকার ৩১টি প্যাকেজে মালামাল কেনার জন্য গত ৪ ডিসেম্বার ওটিএম(ওপেন টেন্ডার ম্যাথোট) দরপত্র আহবান করা হয়। প্রকিউরমেন্ট অনুসারে যাচাই-বাচাই শেষে কয়েকজনকে কাজের নোয়া দেয়া হয় এবং চুক্তিপত্র সম্পূর্ণ করা হয়। কিন্তু টু ডে এগ্রো টেডিং নামে একটি কোম্পানির আবেদনের প্ররিপ্রেক্ষিতে সকল কাজের নোয়া বাতিল করে পূনঃদরপত্র আহবান করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মো. আবু সুফিয়ান। যার ফলে পূর্বে কাজ পাওয়া কোম্পানিগুলো সহ প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন এর সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা। কারন ওষুধ কেনার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন লেগে যেতে পারে, যার ফলে খামারিদের কাছে ওষুধ পৌঁছাতে বিলম্ভ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, টু ডে এগ্রো ট্রেডিং কোম্পানি যে অভিযোগ মন্ত্রণালয় জমা দিয়েছে তা সঠিক নয়। তারা মন্ত্রনালয় ১৫ডিসেম্বার উপদেষ্ট বরাবর দরখাস্ত জমা দিয়েছে । ওই দরখাস্ত ১৩ জানুয়ারি উপদেষ্টর নজরে নেয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় প্রাণিসম্পদ ডিজিকে বিধিনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেন। ১৬ জানুয়ারি মহাপরিচালক, মহাখালী ঔষধানাগার ও গবেষণা পরিচালক ড. মোস্তাফা কামালকে তদন্ত করে সুপারিশ দিতে বলেন। তদন্তে টেন্ডার প্রক্রিয়া কোন অনিয়ম না পেলেও সীমিত সংখ্যাক ঠিকাদার দরপত্রে অংগ্রহণ করার অযুহাতে গত ২০ জানুয়ারি মহাপরিচালক কাজের চুক্তিপত্র বাতিল করে পূন:দরপত্র আহবানের নির্দেশ দেন। যার ফলে পূর্বে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। তারা বলেন, ১৫ ডিসেম্বার দেয়া অভিযোগ যদি আগেই সমাধান করা হত তা হলে আমরা এত ক্ষতিগ্রস্ত হতামনা। এ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় এত দিনে আমরা কাজের চুক্তিসহ মালামাল ক্রয়ের জন্য অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি। এ ক্ষতি আমরা কীভাবে পূরণ করবো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আগের ডিজি অবসরে যাওয়ার পূর্বে এ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে গেছেন। এ কারনে বর্তমান ডিজি ড.মো. আবু সুফিয়ান এ কাজ থেকে কোন ভেনিফিট পাবেনা বলে আগের কাজের চুক্তি বাতিল করেন।
ভুক্তিভোগী ঠিকাদারেরা জানান, তারা বর্তমান দরপত্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন সে ক্ষেত্রে মেডিসিন কেনায় বিলম্বিত হবে। যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ বিষয় তদন্ত কর্মকর্তা ড. মোস্তফা কামাল বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় তেমন কোন অনিয়ম পাওয়া যায়নি শুধু একক কোম্পানি টেন্ডারে অংশগ্রহণ করছে। তদন্ত রির্পোটে তাই উল্লেখ করা হয়েছে।
ঠিকাদারদের অভিযোগের বিষয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মো. আবু সুফিয়ান বলেন, সরকার চাচ্ছে টেন্ডারে আরো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে, যাতে কোন বির্তক না থাকে। তাই এটা বাতিল করা হয়েছে। খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা আমরা দেখব,যাতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিষয়টি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্তণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব, মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালকে পিপিআর ও পিপিএ নিয়মনুসারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর ব্যাতয় ঘটলে তখন আমরা দেখবো। বিষয়টি আমাদের নলেজে আছে।
এমএসএম / এমএসএম