জুলাই বিপ্লবে আহতদের পুনর্বাসনে কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিচালক ডা. আবুল কেনান বলেছেন, জুলাই বিপ্লবে আহতদের পূনর্বাসনের কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে অলরেডি তারা কাজ করছেন। আহতদের পূর্বাসনের জন্য সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, সচিব অনেক তৎপর, বিশেষ করে তাদের পুনর্বাসন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন জুলাই বিপ্লবে আহতদের পুনর্বাসনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিচালক ডা. আবুল কেনানের কার্যালয় একান্ত স্বাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট অভ্যূত্থানে মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের আগে পরে যত লোক আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসা দিয়েছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর)। এখানে ৮৯৪ জন ভর্তি হয়েছিল তবে এখনো ১১০জন ভর্তি আছে। ৬০২ জন ছিল গুলিবিদ্ধ আর বাকিটা অন্যান্য। এই ১১০ জন বাদে বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি গেছে। তারা প্রয়োজনে বর্হির বিভাগে এসে যোগাযোগ করে। বাহিরে যারা আছে তারা মোটামুটি চলাফেরা করতে পারে। ২১ জন আছে যাদের হাত অথবা পা কাটা গেছে। হাতের অংশ কাটা হয়েছিল ৪ জন। পায়ের হাটুর উপরে কাটা হয়েছিল ১৭ জন। যাদের হাত-পা কাটা হয়েছে তাদের কৃতিম হাত-পা সংযোজন করা হয়েছে। এখনও ১১০জন রোগী ভর্তি আছে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তাদের অবস্থা এমন যে তাদের হাসপালে থাকা জরুরি। বাকি যারা আছে তারা কতটুকু ভাল হবে তা বলা মুশকিল। তবে তারা পুরাপুরি সুস্থ্য হবে কিনা তা বলা যায় না। তাদের অঙ্গ-প্রতঙ্গ সঠিক ভাবে কাজ করবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। আর কিছু আছে যাদের আমরা উপদেশ দিয়েছি বিদেশে চিকিৎসার জন্য। এদের চিকিৎসা দেশে নাই এমন নায়। যদি উন্নত প্রযুক্তি টেকনিক্যাল সার্পোট এগুলো থাকে সে যায়গায় একটু ভাল সুযোগ সুবিধা তারা পায় তাহলে কিছুটা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ইতিমধ্যে ৫ জন বিদেশে অবস্থান করছে তাদের চিকিৎসা চলছে, ৩ জনের অপারেশন হয়েছে, চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরে ফিরে আসবে। তাদের মানসিক অবস্থা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এরা অসুস্থ্য আছে এটা একটা ব্যপার, আর একাটা ব্যপার হলো তারা যে বিভিশিকাময় পরিস্থিতির সামনে তারা হয়েছিল মেন্টালি ট্রমাটাইজ হয়ে গেছে। এই যে মানসিক একটা আঘাত, পুলিশি আঘাত, গুলির মুখে, আঘাতের মুখে তারা যে পড়েছিল তারপর থেকে যারা হাসপাতালে আছে, তাদের কয়েক দফায় বিভিন্ন অপারেশন হয়েছে। সঙ্গত কারণেই তারা কিছুটা হলেও ট্রমাটাইজ। অনেক অস্থিরতা কাজ করে তাদের মধ্যে, তাদের আচার আচরণে আমরা বুঝতে পারি। মানসিকভাবে থেরাপি দেয়ার জন্য তাদের মানসিক ডাক্তার দেখেছে, এই পদ্ধতিগুলো চালু আছে। ভালো হয়ে যাওয়ার ব্যপারে বললেন কত পার্সেন্ট সেটা সময় বলে দেবে এখনই পার্সেন্টটিজ বলা যাবে না, কত পার্সেন্ট ভালো। কৃত্রিম অঙ্গপ্রতঙ্গ সংযোজন প্রসঙ্গে ডা. আবুল কেনান বলেন, যাদের হাত বা পা কাটা গেছে তাদের কৃতিম অংগ সংযোজন করা হয়েছে তাদের অবস্থা কেমন হতে পারে আপনারা দেখেছেন যেমন ১৯৭১ সালে যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছিল। কৃত্রিম পা দিয়ে চলছে, তবে আল্লাহর দেয়া পায়ের মতো তো আর হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করেছে ব্রাক। বর্তমানেও ১১০ জন ভর্তি আছে তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই রোগীরা কতদিনের মধ্যে সুস্থ্য হবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। এর আগে আমি বলেছি, কিছু আছে এমন যারা হসপিটালে জরুরি নয় তারা কেবল বর্হিঃবিভাগে যোগাযোগ করলে তাদের পরামর্শ দেয়া হবে। কিছু রোগী আছে আপনারা দেখবেন অনেক তার জড়ানো আছে, তারা উন্নতির পথে আছে, নিদিষ্ট করে বলা মুশকিল কবে তারা সুস্থ হয়ে ফিরবে। এর জন্য সময় লাগবে। অনেক রোগীর হাড় নেই আস্তে আস্তে হাড় আসছে, কারো রগ নেই এই রগ ফাংশনাল হয় কিনা দেখা হচ্ছে, যদি না হয় তাহলে আবার অপরেশন করতে হবে। এই ধরনের একটা জটিল অবস্থার মধ্যে যারা আছে তাদের ব্যপারে হলফ করে বলা মুশকিল কত দিনের মধ্যে তারা সুস্থ্য হবে। পুরাপুরি সুস্থ্য হয়তো তারা হবে না কিছুটা অসুবিধা থেকেই যাবে। কর্মক্ষম কতদিনে হতে পারবে তা এই মূহুর্তে বলা মুশকিল। চিকিৎসা ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল তা আপনারা জানেন, তবে এই ব্যয় সমস্ত বহন করছে সরকার। বাহিরের কোন সার্পোট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের দরকার পরেছে তারা সমাজক্যান থেকে সহযোগিতা নিয়েছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে পারিবারিকভাবে সর্বশান্ত বা চিকিৎসা চলছে না এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আবুল কেনান বলেন, এই কথা ঠিক না, এই বিপ্লবে যারা আহত এবং নিটোরে এসেছে তারা বিনামুল্যে চিকিৎসা পেয়েছে। তবে বাহিরে যারা আছে তাদের কথা আমি বলতে পারবো না। এখানে যারা আছে তাদের শতভাগ আমরা চিকিৎসা করছি।
সমাজসেবা অধিদপ্তর যে সহযোগিতা করছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই রোগীদের ক্ষেত্রে যতটুকু সহযোগীতা প্রয়োজন ছিলো তা তারা করছে। আমরা প্রয়োজনটা মোটামুটি মেটাতে পারছি। অর্থপেটিক্সের জন্য যে ওষুধের প্রয়োজন তা কি বাংলাদেশী ওষুধ দিয়ে সম্ভব কিনা জানতে চাইলে আবুল কিনান বলেন, ওষুধ বাংলাদেশে যা উৎপাদন হয় তাতে আর বাইরে থেকে আনতে হয় না। এক কথায় বাংলাদেশ ওষুধে শয়ংসম্পূর্ণ। টেকনিক্যাল সার্পোট যে সেটা বাহিরে ভাল। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে ডা. আবুল কেনান বলেন, এটা ১হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, বাংলাদেশ তথা এশিয়া মহাদেশের সবচাইতে বড় হাসপাতাল। এটার কার্যক্রম পরিচালনায় সব সময় আমাকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হয়। বর্তমানে আমরা অন্তর্বর্তী সময় অত্রিক্রম করছি। এই প্রতিষ্ঠান যাতে ভালো চলে ডাক্তাররা আমাকে সেভাবে সহযোগীতা করছে। ভবিষতে এটি একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি আর্ন্তজাতিক হাসপাতালে যাতে পরিনত হয় সেটা নিয়ে কাজ করছি। আর আমার পরিকল্পনা রয়েছে যদি আমি সুযোগ পাই সেটি করার। এমনিতে একটি আস্থাশীল চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে পারি সেই চেষ্টা করছি। যাতে দেশের মানুষ এই হাসপাতালে অত্যন্ত আশা নিয়ে আসে, তারা যাতে মান সম্মত চিকিৎসা পায় এই ব্যবস্থাটা করার প্ল্যান আমার আছে। হাসপাতালে দালালদের দৌরত্ম্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি শুনেছি এমন ঘটনা এখানে আছে, দালাল যদি থাকে তাদের ধরে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কাছে সোপর্ধ করা হবে। আইন প্রয়োগকারি সংস্থাসহ সবাইকে আমরা আহবান জানিয়েছি, জুলাই যোদ্ধা যারা আছে তাদের আমরা অনুরোধ করেছি যাতে এরকম কেউ করে তাদের আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কাছে সোপার্ধ করেন। যাতে প্রতিষ্ঠানটি স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পারে।
এমএসএম / এমএসএম

সরানো হলো জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানকে

দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

এবার জানুয়ারিতেই নতুন বই পাবে শিক্ষার্থীরা: অর্থ উপদেষ্টা

রিজার্ভ চুরির ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত : সিআইডি

চট্টগ্রাম, নরসিংদী ও নওগাঁয় নতুন ডিসি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে আজ নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

১৬ বছরের দুঃশাসনের চিত্র থাকবে জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে

বিমান ভাড়ায় আটকে আছে হজ প্যাকেজ

পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

প্রাথমিকে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ

শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দায়িত্বে ফিরছে এপিবিএন

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি শুরু, শেষ হবে দুপুর ১২টায়
