ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে মডেল মসজিদ ভূমিকা রাখবে : প্রধানমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০-৬-২০২১ দুপুর ১:৩৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।  ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও মূল্যবোধের প্রচার এবং উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী প্রচার করার লক্ষ্যেই দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের এই প্রকল্প সরকার নিয়েছে। সারাদেশে নির্মাণ করা ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের অনেক খেদমত করে গেছেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবং তিনিই ইসলামিক ফাউন্ডেশনটা তৈরি করে গিয়েছিলেন। ইসলামের প্রচার-প্রসারে বাংলাদেশও যেন ভবিষ্যতে অবদান রাখতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ৫০টি মসজিদের উদ্বোধন করছি। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমরা লেবাসসর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী ইনসাফের ইসলামে।

তিনি বলেন, আমরা মুসলিম অধ্যুষিত দেশ, এই ইসলামের চর্চা এবং মূল্যবোধের চর্চা যেন ভালোভাবে হয়, ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ যেন হয়, ইসলামের মর্মবাণীটা যেন মানুষ ভালোভাবে বুঝতে পারে সেটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। আমরা দেখেছি ধর্মের নাম দিয়ে কীভাবে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী দেখেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা এবং মানুষকে খুন করলে নাকি বেহেশতে চলে যাবে; আমার প্রশ্ন- যারা এ পর্যন্ত খুন-খারাপি করেছে তারা কে কে বেহেশতে গেছে সেটা কি কেউ বলতে পারবে? কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু সবথেকে সর্বনাশ করে গেছে পবিত্র ইসলাম ধর্মের, যে ধর্ম শান্তির ধর্ম, যে ধর্ম মানুষকে অধিকার দিয়ে গেছে। আমি মনে করি সারাবিশ্বে সব থেকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো এই মুষ্টিমেয় লোক জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, মানুষ হত্যা করে, বোমা মেরে, খুন-খারাপি করে আমাদের এই পবিত্র ধর্মের নামে বদনাম সৃষ্টি করছে। এটা আমাদের ধর্মের পবিত্রতা শুধু নষ্ট করছে না, ইমেজটাও নষ্ট হচ্ছে সারাবিশ্বে।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত ওলামা, অভিভাবক, শিক্ষক সকলকে অনুরোধ জানাব- এই পথ সর্বনাশা পথ, এটি হতে সকলে যেন দূরে থাকে সে জন্য সকলকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ধর্মের চর্চা করতে হলে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে, মানুষের কল্যাণ করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের অকল্যাণ করে, মানুষ হত্যা করে, একটা পরিবারকে ধ্বংস করে বেহেশতে যেতে পারবে না। এটা ভুল কথা। মডেল মসজিদ, এই মসজিদের মাধ্যমে আমাদের ইসলাম, আমাদের সংস্কৃতি, ধর্মীয় শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দাওয়াতি কার্যক্রম সেগুলো যেন সঠিকভাবে প্রচার-প্রসার, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, এগুলো থেকে মানুষ যেন দূরে থাকে।

তিনি বলেন, বরং মানুষ যেন আমাদের ধর্মের যে মূলকথা সেটা যেন মানুষ সঠিকভাবে শিখতে পারে, জানতে পারে। ধর্মের চর্চা করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষ যেন জানতে পারে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সবদিকে আমাদের ব্যাপ্তি সারাবিশ্বে। সবকিছুতেই তো মুসলমানরা আগে এগিয়ে এসেছে। সবসময় মুসলমানরাই সামনে ছিল। সভ্যতার দিক থেকে মুসলমানরা সবসময় আগে ছিল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে মুসলমানরা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে, জোত্যির্বিদ্যা- সবকিছুতেই মুসলমানরা এগিয়ে ছিল। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে- বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে। আজ কেন মুসলমানরা পিছিয়ে থাকবে। সেটিই আমার প্রশ্ন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা এই মসজিদগুলো পেয়েছি, আমরা এটাই চাচ্ছি- প্রতিটি জেলা-উপজেলায়। আমরা চাই যে আমাদের পবিত্র ধর্ম সম্পর্কে মানুষ সচেতন হবে। এই মসজিদগুলোতে সে ব্যবস্থা রয়েছে। আপনাদের এই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে যেন ধর্মীয় দৃষ্টিতে বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতা, মাদক, মাদকের হাত থেকে মানুষ যেন মুক্ত হতে পারে তার জন্য সকলকে আরও সচেতন হতে হবে। এসবের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই মসজিদকে আমরা সেইভাবে তৈরি করেছি।

তিনি বলেন, ইসলাম সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান যাতে বৃদ্ধি পায় সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা মসজিদগুলো করেছি। আজ আমি সত্যিই খুব আনন্দিত, মডেল মসজিদগুলো হতে ইসলামের সঠিক মর্মবাণী প্রচার হবে, ইসলামের সঠিক জ্ঞানচর্চা হবে, মুসলমানরা আরও সচেতন হবে, জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চায় এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবুর রহমান বলেন, এটাই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম কোনো সরকারের একই সময়ে একসঙ্গে এত বিপুল সংখ্যক মসজিদ নির্মাণের ঘটনা, যা বিশ্বে বিরল। সারাদেশে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আগামী অর্থবছরের মধ্যে আরো ১০০ মডেল মসজিদ চালু করা যাবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের মোট কাজের ৩৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫৬০টি মডেল মসজিদের সবগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

‘এ‘ ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এসব মসজিদের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার।

আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন এসব মসজিদের প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। সারাদেশে নির্মাণাধীন এসব মসজিদের ভৌত অবকাঠামো গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ১২০০ মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৯০০ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা থাকছে।

জামান / জামান

ফজলুর রহমানের দলীয় সব পদ ৩ মাসের জন্য স্থগিত

শুভাঢ্যা খালকে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গার সঙ্গে প্রবাহমান করে সমৃদ্ধ করতে চাই: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ে জোর বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা, মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী

পরিবর্তন হচ্ছে বাংলাদেশ জেলের নাম, জানালেন আইজি প্রিজন

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট

চারটি করে আসন চান মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধিরা

চারটি করে আসন চান মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধিরা

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ

সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত মানুষের কাজে আসবে না : রাশেদা কে চৌধুরী

৭ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার

দেশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা

সরকারের হাজার প্রকল্প থাকলেও ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত তথ্য নেই