ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫

স্ত্রীর সঙ্গে ইমামের পরকীয়া : ঘটনা জানতে এসে ৭ টুকরা হলো স্বামী


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫-৫-২০২১ বিকাল ৭:১৬

রাজধানীর দক্ষিণখান সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমামের কাছে কোনো না কোনো কিছুর জন্য নিয়মিত যাওয়া-আসা ছিল গার্মেন্টসকর্মী আজহারুলের স্ত্রী আসমা বেগমের। কখনো তাবিজ আবার কখনো পানিপড়া আনতে যেতেন তিনি। এই যাওয়া-আসার মধ্যেই একপর্যায়ে ইমামের সঙ্গে সম্পর্ক হয় আসমার। আসমা ও ইমামের এই সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী আজহারুল। এটিই কাল হলো আজহারুলের জন্য। এর জের ধরেই তাকে হতে হলো ৭ টুকরা।

দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং ওই জামে মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়া মুসল্লিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। মো. এরশাদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানের বয়স ৬৫। তিনি গত ৩০ বছর ধরে এই মসজিদে ইমামতি করছেন। আজহারুলের ছেলে গত কয়েক বছর ধরে এই ইমামের কাছে কোরআন পড়া শিখছে। ছেলেকে মসজিদ থেকে আনা-নেয়া করতেন আজহারুলের স্ত্রী আসমা। এ সময় আসমা বেগমের সঙ্গে ইমামের দেখা ও কথাবার্তা হতো। একপর্যায়ে ইমামের কাছে ছেলের জন্য পানিপড়া ও রোগমুক্তির তাবিজ আনার কথা বলে নিয়মিত ইমামের কাছে যেতেন আসমা। কোরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য ইমামও তাদের বাসায় যেতেন।

আজহারুলের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক বছর ধরে আজহারুলের স্ত্রীর সঙ্গে ইমামের পরকীয়ার সম্পর্ক চলছিল। আজহারুল বিষয়টি টের পেয়েছিলেন। এজন্য পাঁচ মাস আগে আজহারুল বাসা পরিবর্তন করে দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকার হাজী মার্কেটের সামনে চলে যান। এতেও চিড় ধরেনি আসমা-ইমামের সম্পর্কে। নিয়মিত দেখা হতো তাদের। ১৫-২০ দিন আগে তাদের ছেলে আসমা ও ইমাম আব্দুর রহমানকে মসজিদে একসঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে দেখে তার বাবা আজহারুলকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়।

পুলিশ জানায়, ছেলের কাছ থেকে মায়ের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাননি আজহারুল। বরং স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তার নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে চলে যান। কালিহাতী থেকে ইমামকে ফোন করেন আজহারুল। ফোনে তিনি ইমামকে বলেন, ‘হুজুর আপনাকে আমি বিশ্বাস করতাম। আপনি কিভাবে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক করলেন?’ জবাবে ইমাম বলেন, ‘তুমি যা ভাবছ ঘটনা তা না, তুমি ঢাকায় আসো আমি তোমাকে সব ঘটনা খুলে বলি।’

স্ত্রীর হুজুর প্রেমিকের কাছে ঘটনা জানতে গত ২০ মে (বৃহস্পতিবার) দক্ষিণখানের সরদার বাড়ির মসজিদে গিয়েছিলেন আজহারুল। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার (২৫ মে) দক্ষিণখানের ওই মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে তার ৭ টুকরা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত রয়েছেন এমন সন্দেহে ইমাম আব্দুর রহমানকে আটক করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। জানতে চাইলে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, আসমা ও ইমাম আব্দুর রহমান তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। বৃহস্পতিবার আজহারুল মসজিদে এলে সুযোগ পেয়ে ইমাম তাকে হত্যার পর টুকরা করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে ঢুকিয়ে রাখেন।

স্থানীয়রা বলছেন, হুজুরের বয়স ৬৫। তার একার পক্ষে আজহারুলকে ৭ টুকরা করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে এমনও হতে পারে তিনি আজহারুলকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে হত্যার পর টুকরা করেছেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক মিয়া বলেন, এ ঘটনায় পরকীয়ার বিষয়ে অনেককিছুই শুনেছি। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু বলতে পারব না। আসামি র‍্যাবের কাছে আছে। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

নিহত আজহারুলের আগের বাসার প্রতিবেশী রাশিদা বলেন, আজহারুল খুব ভালো মানুষ ছিলেন। দেখা হলেই সালাম দিতেন। খুবই শান্ত মানুষ ছিলেন। কারো সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ করতেন না। তাকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা তার হত্যাকারীর বিচার চাই।

আজহারুলের মধুবাগ বাসার প্রতিবেশী শামসুর রহমান ইশা বলেন, তারা বাসায় পাঁচ মাস আগে ওঠেন। মাঝেমধ্যে দেখতাম হুজুর বাসায় আসতেন এবং ভিকটিমকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। স্বামী-স্ত্রীর (আসমা-আজহারুল) মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে তেমন ঝগড়া হতো না। হুজুর তাদের বাসার সবাইকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। আজহারুল ঈদের আগের দিন পরিবার নিয়ে বাড়ি চলে যান। পরে পরিবারের লোকজনকে বাড়ি রেখে ১৯ মে (বুধবার) ঢাকায় আসেন। এর পরদিন অফিস শেষে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আবার বের হন। এরপর আরে ফিরে আসেননি।

মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ৭ টুকরা করা মৃতদেহ উদ্ধারের স্থানটি ঘিরে রেখেছে উৎসুক জনতা। মসজিদের সেপটিক ট্যাংকের কাছে যেতেই গলিত মৃতদেহের দুর্গন্ধ নাকে আসছিল। মসজিদটির প্রবেশপথের একদম সামনেই সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনাটি ভেঙে মৃতদেহের টুকরাগুলো উদ্ধার করে র‍্যাব। ট্যাংকে উঁকি দিয়ে দেখা যায়, মানুষের শরীরের চর্বি ভাসছে এবং পানিতে বিভিন্ন পোকামাকড়। নাকে কাপড় দিয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এবং দেখছেন।

মসজিদ ভবনটি এখনো নির্মাণাধীন। মসজিদের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও সেপটিক ট্যাংকসহ আরো বেশকিছু কাজ বাকি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ধারণা করছেন, সেপটিক ট্যাংকটির কাজ শেষ না হওয়াতে হত্যাকারী মৃতদেহের টুকরোগুলো এখানে ফেলে ঢালাই করে দিয়েছে, যাতে কেউ খুঁজে না পায়।

প্রীতি / জামান

১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না

বাধা উপেক্ষা করে যমুনায় যাওয়ার চেষ্টা, পুলিশের জলকামান-লাঠিচার্জ

রাজধানীর সাততলা বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

বৃহস্পতিবার ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মারা গেছেন

অনেকেই পাচারের টাকা ফেরত দিতে অফার করেছেন: আনিসুজ্জামান

১৭ মিনিটের অবরোধ শেষে ৬ দাবি জানালেন শিক্ষার্থীরা

এবার জনপ্রতি ফিতরা সর্বনিম্ন ১১০ টাকা, সর্বোচ্চ ২৮০৫

দুই মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল শুরু

দূষণে চার নম্বরে ঢাকার বাতাস, শীর্ষে দিল্লি

স্ত্রী-সন্তানের পর দগ্ধ সোহাগও চলে গেলেন

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে শাহবাগে ৩০ কলেজের শিক্ষার্থীরা

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম