শিগগিরই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সফর করবেন ব্লিনকেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সফরে যাচ্ছেন। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে সম্প্রতি যে ১১ দিন ব্যাপী যুদ্ধ হলো, সে বিষয়ে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও গাজা অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিয়ই এই সফরের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজির সঙ্গে টেলিফোনে এই সফরের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হয়েছে উল্লেখ করে শুক্রবার নেড প্রাইস বলেন, ‘ওই অঞ্চলে বসবাসরত জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে তুলতে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও গাজা ভূখণ্ডের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করা প্রয়োজন বলে মনে করছে মার্কিন প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে শিগগিরই ওই অঞ্চল সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে টেলিফোনে কথাও বলেছেন তিনি।’
এদিকে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম টুইটারে একটি টুইট করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজি। সেখানে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আসন্ন সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছি এবং বলেছি ইসরায়েল ও তার জনগণের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবসময় খোলামেলা আলোচনায় প্রস্তুত ইসরায়েলের সরকার।’
গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বসতকারদের (সেটলার) দখলদারিত্ব ও সেখানে বসবাসরত স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে গত কয়েকমাস ধরে আন্দোলন চলছিল ফিলিস্তিনে। অবশেষে গত ৯ মে পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে শবে কদরের নামাজ আদায় শেষে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন ফিলিস্তিনি মুসলিমরা।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয় হয়ে ওঠে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেদিন রাতে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লাঠিচার্জে আহত হন অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে মসজিদ চত্বর ঘিরে রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর জেরে গাজা ভূখণ্ডের প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস হুমকি দেয় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারকে। হামাসের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলা হয়, ১০ মে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ চত্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিণতির জন্য ইসরায়েল সরকার দায়ী থাকবে।
ইসরায়েল এই হুমকিকে আমল না দেওয়ায় ১০ মে সন্ধ্যার পর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। জবাবে বিমান হামলা ও আর্টিলারি গোলা বর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। শুরু হয় দু-দেশের মধ্যে যুদ্ধ।
যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন আড়ইশ’রও বেশি ফিলিস্তিনি, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় লাখ খানেক এবং ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় গাজা ভূখণ্ড। ইসরায়েলেও নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ জন।
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের হস্তক্ষেপে ১১ দিন পর শুক্রবার দিবাগত রাতে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সরকার।
রিয়াদ / রিয়াদ