বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে সহায়তা দেবে চীন
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণকারী দল হামাস ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে চলা ১১ দিনের সংঘাতে বিধ্বস্ত সেই অঞ্চলের পুনর্গঠনে সহায়তা দেবে চীন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তাসংস্থা সিনহুয়া নিউজকে এই তথ্য জনিয়েছেন চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্তৃপক্ষের (সিআইডিসিএ) মুখপাত্র তিয়ান লিন।
শুক্রবার সিনহুয়াকে তিয়ান লিন বলেন, ‘গত ১১ দিনের যুদ্ধে গাজা ভূখণ্ডের অবকাঠামোগত অবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ প্রচুর সংখ্যক বাড়িঘর, আবাসিক ও বাণিজ্যিক গুড়িয়ে গেছে। এই অবস্থায় চীন সরকারের সম্মতিক্রমেই সিআইডিসিএ ওই এলাকা পুনর্গঠনে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানহামালা ও গোলাবর্ষণের কারণে যাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, সবার আগে তাদের সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন আবাসন গড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করা হবে।’
টানা ১১ দিনের যুদ্ধে প্রায় আড়াইশ প্রাণহানির পর মিশরের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার সংঘাত অবসানে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি দল হামাস। শুক্রবার ভোর থেকে কার্যকর হয় এই যুদ্ধবিরতি।গাজায় আল জাজিরার প্রতিনিধি ইয়োমনা আল সাইদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলা শুরু করার পর গাজার বিপুল সংখ্যক মানুষ হামলা থেকে বাঁচতে সেখানে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া বেশিরভাগ মানুষের বর্তমানে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
কারণ বিমান হামলায় তাদের বসতবাড়িসহ প্রায় সর্বস্ব খুইয়ে গেছে এবং নতুন আবাসন করার মত আর্থিক সামর্থ্য তাদের অধিকাংশেরই নেই।
গাজার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, অব্যাহত বিমানহামলায় সেখানে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিপুলসংখ্যক আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, অন্তত তিনটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গাজার বিশাল এলাকা এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।
বিদ্যুৎ না থাকায় সবচেয়ে বিপন্ন অবস্থায় আছেন গাজার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থাকা করোনা রোগীরা। জ্বালানী সংকট চলার কারণে হাসপাতলগুলো জেনারেটর চালু করতে পারছে না।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় গাজার এলাকার অধিকাংশ সড়ক ও মহাসড়ক ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানে স্থানে পড়ে আছে ধ্বংসস্তুপ। এ কারণে গাজার বেশিরভাগ এলাকায় জ্বালানী সরবরাহ বর্তমানে বন্ধ আছে, যেসব যায়গায় সরবরাহ চালু আছে তাও একেবারেই অনিয়মিত।
ইয়োমনা আল সায়িদ বলেন, ‘দারিদ্র্য, উচ্চ মাত্রায় বেকরত্ব ও কর্মহীনতা এবং করোনা মহামারিতে আগে থেকেই এ অঞ্চলের অবস্থা টালমাটাল ছিল। যুদ্ধের ফলে এখন এটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।’
সূত্র: আল জাজিরা
রিয়াদ / রিয়াদ