গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক

দেশের পুঁজিবাজারে আসলো চতুর্থ প্রজন্মের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ১৬ই অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে তৃতীয় দিনের মত চলছে ব্যাংকটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন, যা ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান থাকবে।
দ্রুত বর্ধনশীল ব্যাংক হিসেবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক প্রাথমিক গণপ্রস্তাবেও (আইপিও) বিনিয়োগকারীদের জন্য রেখেছে বিশেষ সুবিধা। প্রবাসীদের প্রাধান্য দিয়ে ২৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে বিনিয়োগ করা হবে। যেখানে বিনিয়োগকারীরা ১০,০০০ টাকা বা এর গুণিতক সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আইপিও আবেদন করতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু শক্ত ভিত্তির ওপর দাড়িয়ে থাকে তাই বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এতে করে বাজারের স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় থাকে। সেদিক থেকে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ তিন খাতে ব্যয় করবে জিআইবি গত ১৫ জুন প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ৪২৫ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন পেয়েছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৮২৭তম কমিশন সভায় এ আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ৪২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে শেয়ারবাজার থেকে ৪২৫ কোটি উত্তোলন করবে ব্যাংকটি। উত্তোলিত অর্থ এসএমই, সরকারি সিকিউরিটিজ ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করবে ব্যাংকটি।
দেশজুড়ে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (জিআইবি)। শতভাগ শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ইতোমধ্যে সারাদেশে ব্যাংকটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠিকে ব্যাংকিং চ্যানেলে নিয়ে আসতে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক শহর শাখার পাশাপাশি পল্লী শাখা সম্প্রসারণেও অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছে এবং সিএমএসএমই খাতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। আর্থিক অর্ন্তভুক্তি কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে ব্যাংকের ভূমিকা রয়েছে এবং সেই সাথে কৃষি ও পল্লী খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ -এর লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারি ২০২১ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ব্যাংকটির আমানত, ইনভেস্টমেন্ট (বিনিয়োগ), পরিচালন আয়, শেয়ারপ্রতি আয়ে (ইপিএস) ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। উপরোক্ত ৯ মাসে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছে ৯৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এই বিনিয়োগ আয় থেকে আমানতের ওপর প্রদত্ত মুনাফা বাদ দিয়ে এবং শেয়ার ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ওপর আয়, এক্সচেঞ্জ ব্রোকারেজ কমিশন ও অন্যান্য পরিচালন আয় যোগ করে মোট পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এরপর যাবতীয় পরিচালন ব্যয় যেমন- বেতন ও মজুরি, ভাড়া, ট্যাক্স ইনস্যুরেন্স, ইলেক্ট্রিসিটি, আইন খরচ, স্টাম্প, টেলিকমিউনিকেশন, স্টেশনারী, প্রিন্টিং, বিজ্ঞাপণ, প্রধান নির্বাহীর বেতন ও ফি, পরিচালকদের ফি, অবচয় এবং প্রভিশন সহ অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে কর পূর্ববর্তী মুনাফা দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এই মুনাফা থেকে করবাবদ ৭৬ কোটি ৬০ লাখ বাদ দিয়ে ব্যাংকটির নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আর এতে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৯১ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৪.৪২ টাকা। শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্নক ১০.৬৩ টাকা। এর আগের বছর ব্যাংকটি জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ১ হাজার ২০৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বছরটিতে মোট পরিচালন আয় থেকে পরিচালন ব্যয় ও কর ব্যয় বাদ দিয়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ১০২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর এতে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ২.১০ টাকা। বছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভি) ছিল ১৩.৬৫ টাকা। শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ১৫.১২ টাকা।
বিনিয়োগ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার ফলে ব্যাংকের অনাদায়ী ও কু-ঋণ এর শতকরা হার সন্তোষজনক রাখতে সমর্থ হয়েছে এবং ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততা যথাযথ সংরক্ষণের ফলে তুলনামূলক ভাল অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকটি।
২০১৯ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ১ হাজার ১০৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছিল ০.৭৯ টাকা। অর্থবছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১২.১৭ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ২.২৭ টাকা।
২০১৮ অর্থবছরে বিনিয়োগ ওপর আয় হয়েছিল ৯৩৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর অর্থবছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৫৩ কোটি দুই লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১.২৫ টাকা। এ সময় ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১২.৫১ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপররেটিং ক্যাশফ্লো ছিল ঋণাত্নক ০.৩১ টাকা।
২০১৭ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর আয় হয়েছিল ৭২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর বছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছিল ৩৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ইপিএস ০.৯২ টাকা। অর্থবছরটিতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১১.৭৭ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশফ্লো ছিল ৪.১২ টাকা।
২০১৬ অর্থবছরে বিনিয়োগে আয় ছিল ৪২৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থবছরে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছিল ৪২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ১.০০ টাকা। এসময় ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ১০.৮৬ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশফ্লো ছিল ৫.৪১ টাকা।
জিআইবির লভ্যাংশ বিতরণ : ব্যাংকটি নিট মুনাফার ওপর ২০১৭ অর্থবছরে নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৫ শতাংশ। পরের ২০১৮ অর্থবছরে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ২০১৯ অর্থবছরে ৫ শতাংশ স্টক এবং ২০২০ অর্থবছরে নগদ ৫ শতাংশ ও স্টক ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ব্যাংকটির সম্পদ বিবরণে দেখা গেছে: সর্বশেষ ৯ মাসে ব্যাংকটির মোট সম্পদ রয়েছে ১২ হাজার ৭২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০২০ অর্থবছরে এ সম্পদ ছিল ১২ হাজার ৯০ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২০১৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৬৪০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ২০১৮ অর্থবছরে ৯ হাজার ২১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ২০১৭ অর্থবছরে ৭ হাজার ৯১৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। ২০১৬ অর্থবছরে সম্পদ ছিল ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন রয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৫১৫ কোটি ৪১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
দায়ের বিবরণ: ৯ মাসে ব্যাংকটির দায় রয়েছে ১১ হাজার ৯৮৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ২০২০ অর্থবছরে ১১ হাজার ৪২০ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২০১৯ অর্থবছরে ১০ হাজার ৭১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ২০১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৬৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০১৭ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ২০১৬ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৬৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।
৪২৫ কোটি টাকার শেয়ার বন্টন হবে যেভাবে: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ১৬ জুন ২০২২ নোটিফিকেশন অনুযায়ী এনআরবি বা প্রবাসীরা মোট শেয়ারের ২৫% পাবেন অর্থাৎ এনআরবি বা প্রবাসীরা পাবেন ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১০ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার। অভিবাসী কর্মীদের কর্তৃক ২৫% আইপিও শেয়ার সাবস্ক্রিপশন পরিপূর্ণ না হলে, আনসাবস্ক্রাইবড অংশ অন্যান্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে আনুপাতিক হারে বন্টন করা হবে। যোগ্য বিনিয়োগকারী (ইলিজেবল ইনভেস্টর) পাবেন ৬৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার। মিউচূয়্যল ফান্ডের ১৫ কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫ শত শেয়ার। আর সাধারন বিনিয়োগকারীরা পাবেন ২৩৯ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা বা ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৬২ হাজার ৫ শত শেয়ার।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বর্তমানে সারাদেশে ১৯৯টি শাখা/উপশাখা, ৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং ও ১০১টি এটিএম বুথ-এর মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে ব্যাংকিং সেবার পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করছে ব্যাংকটি।
এমএসএম / এমএসএম

পূবালী ব্যাংকে শেখ হাসিনার লকার জব্দ

বরবটি-করলার সেঞ্চুরি, কাঁচা মরিচের ডাবল সেঞ্চুরি

ব্রয়লার ১৬৫, ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম চড়া

৩০ বছর পর মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে সাংহাই-সিঙ্গাপুরের মতো দেখতে চাই

এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩ টাকা

সবজির পর দাম বেড়েছে মুদি পণ্যের, চড়বে আলুর বাজারও

চট্টগ্রাম বন্দরে জট কমাতে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ১০০০ কনটেইনার বিক্রি

ডিজিটাইজেশন না হওয়ায় সময়ের কাজ সময়ে হয় না: এনবিআর চেয়াম্যান

ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন: এনবিআর চেয়ারম্যান

শাহজালালে নারী যাত্রীর লাগেজ থেকে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন জব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়বে ৪১ শতাংশ, বৈঠকে বসছে নৌ মন্ত্রণালয়

ইলিশের দেখা মিললেও দামে হাত পোড়ার জোগাড়
