১০ম কাউন্সিল ঘিরে জাপায় উত্তেজনা
জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে কোন্দল অনেকটা আইনী লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। এখন কে থাকবেন সংসদে বিরোধী দলের নেতা এ নিয়ে কোন্দলটা প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। জানা গেছে দলের চেয়ারম্যান জিএন কাদের ইতোমধ্যে সংসদে তাকে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে মর্যাদা দিতে স্পীকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। সে চিঠির পক্ষে রয়েছে অধিকাংশ দলীয় সংসদ সদস্যের সমর্থন। এ বাস্তবতায় জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ এমপির নেতৃত্বে কাউন্সিল আহ্বান করা হয়েছে। সে কাউন্সিলে জিএম কাদের দলের চেয়ারম্যান থাকবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ দিকে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে ৯ম কাউন্সিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের পার্টির গঠনতান্ত্রিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, নিয়মাবলী এবং পার্টির মূল আদর্শ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করছে না বলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং গঠনতন্ত্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতাদানকারী বেগম রওশন এরশাদের কাছে নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ তোলায় শেষ পর্যন্ত কাউন্সিল আহ্বান করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রমতে, জি এম কাদের পার্টির গণতান্ত্রিক গৃহীত আদর্শ, নিয়ম ও নীতিমালা থেকে সরে গিয়ে বেশ আগে থেকেই ভ্রান্ত পথে অগ্রসর হচ্ছে। এমনই অভিযোগে ৩১ আগস্ট সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপির সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির ১০ম কাউন্সিল আহ্বান করা হয়েছে। এ কাউন্সিলকে ঘিরে সারা দেশে এখন চলছে রাজনৈতিক চুলচেরা বিশ্লেষণ। আসন্ন ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব-মুহূর্তে জাতীয় পার্টির জন্য এ কাউন্সিল অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে এমনই ধারণা রাজনৈতিক বোদ্ধাদের।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন পেরিয়ে সারা দেশের চায়ের দোকানে ও জাতীয় পার্টির কাউন্সিল কে ঘিরে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ কাউন্সিল রাজনীতির নতুন মেরুকরণ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। আলোচনা যাই হোক না কেন চায়ের কাপের চুমুকে সবার দৃষ্টি ২৬ নভেম্বর জাতীয় পার্টি ১০ম কাউন্সিল। দৈনিক সকালের সময় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাউন্সিল নিয়ে কথা বলছে। বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সিংহভাগ ৩০ অক্টোবরের সংসদ অধিবেশনের দিকে তাকিয়ে আছে। এর পূর্বেই বর্তমানে বিদেশে চিকিৎসাধীন বেগম রওশন এরশাদ এমপি দেশে ফিরে আসবে এবং আগামী সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলীয় নেতার আসনে সংসদে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, জাতীয় পার্টির অধিকাংশ বর্তমান সংসদের সদস্য জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করেছে। এ নিয়ে ঘোর সমস্যা পাকিয়ে উঠেছে দলটির ভেতর বাহিরে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কি হতে যাচ্ছে আগামী সংসদ অধিবেশনে, কে বসবে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে! সরকারের মর্জির উপর এর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এ দিকে এসব বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হচ্ছে না দলের সংসদ সদস্যদের কেউই। তাদের মত হচ্ছে যিনি সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারে বসবেন তার দিকেই থাকবে অধিকাংশ সংসদ সদস্যর সমর্থন। সারা দেশে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বলে দাবি করেন এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ১০ম কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির অন্যতম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি দেশের সাধারণ জনগণের হৃদয়ের স্পন্দন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির মধ্যে কোনো বেইমানের স্থান হবে না। কাজী মামুনুর রশীদ আরও বলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সংসদ সদস্যের অধিকাংশই আগামী কাউন্সিল অধিবেশনে যোগদান করবেন। ১০ম কাউন্সিল হবে জাতীয় পার্টির জন্য ঐতিহাসিক কাউন্সিল। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে এক বিরাট রাজনীতি নেতৃত্বের শূন্যতা বিরাজ করছে। আমাদের পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ এমপি দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর যাবত রাজনীতির মাঠে পথে প্রান্তে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি আজ অনেক বেশি শক্তিশালী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ স্যারের জীবদ্দশায় পার্টির শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জি এম কাদেরকে একাধিকবার পার্টি থেকে বের করে দিয়েছিল। বর্তমানে তিনি দলের চেয়ারম্যান পদে আসিন হওয়ার পর পার্টিকে বাণিজ্যিক সংগঠনে রূপান্তরিত করেছে। পার্টির ভেতরে নিজস্ব বলয় তৈরি, গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টিকে পরিচালিত না করার কারণে পার্টি থেকে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দকে সরে যেতে হয়েছে অথবা পার্টির কার্যক্রম থেকে নিজেকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ এমপি নিষ্ক্রিয় ও পার্টি থেকে যে সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতারা অভিমান করে দূরে চলে গিয়েছে তাদেরকে পুনরায় পার্টিতে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়ে পার্টির কার্যক্রম ও দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছে। অতএব, আগামী ১০ম কাউন্সিল জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের মিলনমেলায় পরিণত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ৯ম কাউন্সিলে পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ এমপি। জি এম কাদের সাহেব রাতের অন্ধকারে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য পার্টির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। অথচ ৯ম কাউন্সিলের পাশকৃত সর্বশেষ গঠনতন্ত্র আমাদের হাতে রয়েছে। কাউন্সিল ব্যতীত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করার এখতিয়ার কারো নেই। পার্টির গঠনতন্ত্র কারো ব্যক্তি বা পারিবারিক সম্পত্তি নয়। অতএব ১০ম কাউন্সিলেই জি এম কাদেরের ব্যাপারে কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
এ দিকে দলীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দলীয় পোর্ট ফোলিও ব্যবহার জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে করে নমিনেশন বাণিজ্য করা একটি মামলার তদন্ত করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন। একটি সূত্র বলছে ঘটনা প্রবাহ যে দিকে যাচ্ছে তাতে পরিস্থিতি বুঝে যেকোনো দিন দেশ ছাড়তে পারেন জি এম কাদের। তবে ঘটনা যাই ঘটুক স্পষ্ট বিভক্তির দিকেই এগোচ্ছে দেবর ভাবীর টানাটানিতে সংসদের বিরোধী দলের আসনে থাকা জাতীয় পার্টি ।
এমএসএম / এমএসএম
চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা, বিএনপির এমপি প্রার্থী গুলিবিদ্ধ
এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম
শাপলা কলিসহ নিবন্ধন পেলো এনসিপি
এই নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে
বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষে লড়বেন তারেক রহমান
বগুড়া-৭, দিনাজপুর-৩ ও ফেনী-১ আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া
৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি ও গণমিছিলের ঘোষণা
গুপ্ত স্বৈরাচার ওত পেতে আছে, ঐক্যবদ্ধ হোন : তারেক রহমান
‘শাপলা কলি’ প্রতীক মেনে নেবে এনসিপি
৭১ আমাদের জন্মের ঠিকানা : মির্জা ফখরুল
ইসির প্রতীকের তালিকায় যুক্ত ‘শাপলা কলি’