ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

আ’লীগের নির্যাতিত নেত্রী পারুর গল্প


সিরাজুল ইসলাম photo সিরাজুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১-১১-২০২২ বিকাল ৭:৫৩

ছোট বেলা থেকেই আওয়ামী লীগের প্রতি ভালোবাসা ছিল পারু পারভীন ভূঁইয়ার। দল কিংবা নেত্রীর প্রতি কেউ বিরূপ মন্তব্য করলে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠতেন তিনি। তাই বলে তিনি দলের কর্মী ছিলেন না। যেতেন না মিছিল কিংবা সভা-সমাবেশে। সেই মেয়েটিই এক সময় স্লোগানে রাজপথ কাঁপাতে থাকেন। সহ্য করেন হামলা-মামলা। জীবনের মায়া উপেক্ষা করেই কাজ করতে থাকেন দলের জন্য। 

আলাপকালে পারু পারভীন ভূঁইয়া বলেন, আমি আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি। ভালোবাসি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। ২০০১ সালের কথা। তখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায়। রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় মগার গলিতে আমার বাসা। সেখানে ভোট চাইতে আসেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করেন। আমি এর প্রতিবাদ করি। তাদেরকে বলি, আপনারা ভোট চাচ্ছেন ভালো কথা। আরেক দলের নেত্রীকে কটূক্তি করার অধিকার তো আপনাদের নেই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদের চেয়ার নিয়ে ধাওয়া করি। সেই থেকে এলাকায় সাহসী মেয়ে হিসেবে পরিচিতি পাই। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আমার সাথে দেখা করতে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোজাম্মেল হক। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডের এই কাউন্সিল আমাকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। স্বামীর মতামত নিয়ে যোগ দিই আওয়ামী লীগে। প্রথম দিনেই শহীদ মিনারে কর্মসূচিতে আমি ১৫টি রিকশায় ৩০ জন নারী কর্মী-সমর্থক নিয়ে যাই। আমাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তখনকার মহিলা লীগ নেত্রী প্রয়াত আইভী রহমান। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত আমি আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যোগ দিতে থাকি। তিনি বলেন, সব সময় মিছিলের অগ্রভাগে থাকতাম আমি। তখন বিরোধী দলের বিক্ষোভ মিছিলের যত ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, সবগুলোতে আমাকে দেখা যায়। একটি ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, দেখুন পুলিশ লাঠি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার পাশে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। 


পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলছে- এমন একটি ছবি দেখিয়ে পারু পারুল ভূইয়া বলেন, মতিঝিলের সে সময়ের এমপি মির্জা আব্বাসের নির্দেশে আমার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা দেওয়া হয়। ২০০৩ সালের সেই মামলায় আমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার দেখানো হয়। থানায় নির্যাতন করা হয়। আমার বাচ্চা দুধের জন্য চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু তাকে দুধ দিতে পারিনি। পরদিন ভোরে আমার শাশুড়ী পুলিশ অফিসার শহিদুল্লাহর পা ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। অবশেষে সেই অফিসার আমার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর অনুমতি দেন। পরদিন কোর্ট আমাকে জামিন দেয়। সেদিন আদালতে আমার পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন অন্তত ৩০ জন আইনজীবী। তারা সবাই আমার দলের লোক। তিনি বলেন, আমি রাজপথে রক্ত দিয়েছি। পুলিশের পিটুনিতে আমার মাথা ফেটে যায়। অনেক সেলাই দিতে হয়। আজও মাথা ঝিমঝিম করে। ভালো ঘুম হয় না। একবার হরতালে পুলিশ আমাকে মেরে রক্তাক্ত করে। আমাকে হাসপাতালে 

ভর্তি করা হয়। সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দেখতে গিয়েছিলেন। আমাকে মাতৃ স্নেহে আগলে রাখেন। বলেন, তোমার হায়াৎ থাকলে তুমি বেঁচে থাকবা। চিকিৎসার অভাবে তোমার মৃত্যু হবে না। প্রয়োজনে তোমাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়। এ নিয়মিত কোর্টে হাজিরা দিতে হতো। ২০০৯ সালে দল ক্ষমতায় আসে। এরপর মামলাগুলোর অবস্থা আর জানি না। ২০০৪ সালে ঢাকা মহানগরের ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে আমাকে মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা করা হয়। আমি সেই দায়িত্ব এখনো পালন করছি। বর্তমান কাউন্সিলর মোজাম্মেল হকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন। দল বা নেত্রীর কাছে কিছু চাওয়ার নেই জানিয়ে পারু পারভীন ভূঁইয়া বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই। আমি চাই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিক। এটাই আমার চাওয়া। আর দলে সম্মানজনক একটা পোস্ট চাই।

কাউন্সিল মোজাম্মেল হক বলেন, পারু পারভীন ভূঁইয়া বিএনপি-জামায়াতের আমলে অনেক হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি সব সময় মিছিল-মিটিংয়ের আগে থাকতেন। তিনি আওয়ামী লীগের নিবেদিত ও ত্যাগী নেত্রী। জননেত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি জানেন। তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখতেন তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা।

   
  

প্রীতি / প্রীতি

কিছু দল নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে, জনগণ সেই ফাঁদে পা দেবে না: মির্জা ফখরুল

এনসিপিকে জুলাই সনদে সই করার আহ্বান করেছে সরকার

সরকারে দলীয় কেউ থাকলে সরিয়ে দিতে হবে: রিজভী

বিতর্কিতদের সরিয়ে সরকারকে সত্বর তত্ত্বাবধায়ক আদলে যেতে হবে: আমীর খসরু

অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় যেতে হবে : মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধি দল

সারজিসের সভা চলাকালে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারিয়ে ফেলেছেন: মির্জা ফখরুল

পিআর আন্দোলন ছিল জামায়াতের পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা : নাহিদ ইসলাম

আন্দোলনে দেশে না থাকায় জুলাই যোদ্ধাদের চিনতে সালাহউদ্দিন আহমদের ভুল হচ্ছে: নাহিদ

‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে’

শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত বিএনপি : মির্জা ফখরুল

কিছু রাজনৈতিক দল জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সনদে সই করছে : নাহিদ