ঢাকা শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অনলাইনকে প্রাধান্যের ঘোষণা দিয়েও পশুর ১০ হাট বসাবে ডিএনসিসি


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২-৭-২০২১ দুপুর ২:২৭

করোনাকালে জনসমাগম এড়াতে অনলাইন ডিজিটাল হাটকে প্রাধান্য দেওয়ার ঘোষণা দিলেও ফের স্থায়ী, অস্থায়ীসহ পশুর ১০টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। অনলাইন হাট চালু করার পরেও শেষ সময়ে এসে ৯টি অস্থায়ী এবং একটি স্থায়ী হাট বসাতে যাচ্ছে সংস্থাটি। সেই লক্ষ্যে ইজারাদাররা হাটের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত কোরবানির পশুর হাটের একটি সর্বশেষ তালিকা প্রণয়ন করেছে সংস্থাটি। সে হিসেব অনুযায়ী ডিএনসিসি এলাকায় মোট ৯টি অস্থায়ী হাট এবং একটি স্থায়ী হাটে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।

হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাব নগর) ব্লক ই-সেকশন ৩ এর খালি জায়গা, কাওলা শিয়াল ডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ওয়ার্ড নম্বর ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাঈদ নগর) অস্থায়ী পশুর হাট, মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফুট সড়ক সংলগ্ন রাজধানী হাউজিং-স্বপ্নধারা হাউজিং ও বসিলা গার্ডেন সিটির খালি জায়গা এবং ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশে সালাম স্টিল লিমিটেড ও যমুনা হাউজিং কোম্পানি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন খালি জায়গায়- এই নয়টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসানো হবে। এছাড়া স্থায়ী হাট হিসেবে গাবতলী গবাদি পশুর হাট বসবে। এসব মিলিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ১০টি হাটে কোরবানির পশু ক্রয় বিক্রয় হবে এবার।

হাটগুলোতে ঈদুল আজহার ঘোষিত দিনসহ পাঁচ দিন পশু বিক্রি করা যাবে। এছাড়া পশু বিক্রির তারিখের দুই দিন আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করা যাবে। 

এদিকে রোববার (১১ জুলাই) গুলশানের নগর ভবনে কোরবানির পশুর হাট মনিটরিং কমিটির সদস্য ও ইজারাদারদের সঙ্গে এক সমন্বিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধিগুলো যথাযথভাবে মেনে কোরবানির পশুর হাট পরিচালিত হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি স্থায়ী ও নয়টি অস্থায়ীসহ মোট ১০টি পশুর হাট বসানো হবে।

পশুর হাটগুলো মনিটরিং করার জন্য এরইমধ্যে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে ১২ জন কাউন্সিলর ছাড়াও ডিএনসিসির দুই জন ভেটেরিনারি কর্মকর্তা রয়েছেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে বজায় রাখতে হবে, ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হাটগুলোর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা হবে। কোরবানির হাটের পশুগুলো সর্বসাধারণের জন্য অনলাইনে প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করা হবে।

তবে হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি কি আদৌ মানানো সম্ভব হবে? এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, হাট মানেই প্রচুর লোকের সমাগম। যে কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতিতে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানানো একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। খুব ভালোভাবে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানানো অতটা সহজ কাজ নয়। হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। সরকারি আয়োজনে কোনো দামাদামি না করে একদামে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি করা যেতে পারে। তারপরও যদি হাট বসাতেই হয়, সেক্ষেত্রে কার্যকরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। করোনায় হাট যত কম করা যায়, ততই উত্তম। হাট মানেই অতিরিক্ত মানুষের আনাগোনা আর করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।

যেভাবে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চায় ডিএনসিসি

গতবছর করোনাকালে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর লক্ষ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল কর্তৃপক্ষ। এবারও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে- কোরবানির পশুর হাটের নির্ধারিত সীমানা বহাল থাকবে। ইজারা নেওয়া ব্যক্তিকে নিজ ব্যবস্থাপনায় হাটের সীমানা সংরক্ষণ করে এর বাইরে যাতে পশুর হাট প্রসারিত না হয় তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া হাটের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব কর্মী নিযুক্ত করবে। হাটের মধ্যে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা যাবে না। একটি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনা রাখতে হবে। ইজারা নেওয়া ব্যক্তিকে হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন করতে হবে। হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সাবান রাখতে হবে। গায়ে জ্বর থাকলে কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। হাটে প্রবেশকারীকে গ্লাভস, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাটে প্রবেশ করতে হবে।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার টানানোসহ মাইকে ধারাবাহিকভাবে প্রচারণা চালাতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে হাটের সর্বত্র ও আশপাশের সংশ্লিষ্ট জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ক্রেতা, বিক্রেতা ও ইজারাদারের নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরে হাটে আসতে হবে। হাটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাবান, পানির ড্রাম ও বেসিন রাখতে হবে। হাটে প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য পৃথক গেট করতে হবে এবং নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাটে প্রবেশ-বের হতে হবে। বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিকে হাটে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।

যেভাবে অনলাইন ডিজিটাল হাটকে প্রাধান্য দিচ্ছে ডিএনসিসি

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন হাটকেই বেশি প্রধান্য দিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সেই লক্ষ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তারা কোরবানির পশুর ডিজিটাল হাট চালু করেছে। ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটে ই-ক্যাব এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের খামারিরা পশু বিক্রি করতে পারবেন।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, পশু ক্রয়-বিক্রয়ের নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এতে পশু বিক্রির কী কী নিয়ম মানতে হবে, কী কী তথ্য থাকতে হবে তা উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রাহককে সময়মতো কোরবানির পশু দিতে না পারলে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এই প্লাটফর্মে ই-ক্যাব এবং বিডিএফএ’র অনুমোদিত সদস্যের প্রতিষ্ঠান কেবল অংশ নিতে পারবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকদের অনুমোদিত বিক্রেতারা তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন। ক্রেতার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ ধরনের রক্ষণশীল কৌশল রাখা হয়েছে। হাটের ওয়েব ঠিকানা- www.digitalhaat.net। ক্রেতার আর্থিক নিরাপত্তা দিতে  বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তার সাময়িক স্ক্রো (ESCROW) সেবা ব্যবহার করা হবে।

অনলাইনে কেনার পর পশু কোরবানি করে মাংস নগরবাসীর কাছে পৌঁছে দেবে ডিএনসিসি। আর এক্ষেত্রে অন্তত এক হাজার গরু কোরবানি করে মাংস হোম ডেলিভারি করার সক্ষমতা ডিএনসিসির বর্তমানে রয়েছে বলে দাবি তাদের। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পশু কোরবানি করে মাংস কেটে ফ্রিজার গাড়ি দিয়ে হোম ডেলিভারি করবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সশরীরে কোরবানির পশুর হাট এড়ানোর লক্ষ্যেই ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট-২০২১’ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিএনসিসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্লটারিং হাউজে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এবার এক হাজার কোরবানির পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গতবার ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটে ৩ সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৭ হাজার গরু। আর এবার এক লাখ গরু অনলাইনে বিক্রি করার টার্গেট রয়েছে। এক লাখ গরু বিক্রি করতে পারলে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে হাটে আসা থেকে বিরত রাখতে পারবে বলে আশা করছে ডিএনসিসি।

এছাড়া অনলাইনে যারা ডিজিটাল কোরবানির হাট থেকে পশু কিনবেন তাদের ডিএনসিসিতে কোনো হাসিল দিতে হবে না। তবে যারা হাটে গিয়ে সশরীরে পশু কিনবেন তাদের অবশ্যই হাসিল দিতে হবে।

এবারের ডিজিটাল হাটে স্ক্রো পদ্ধতি মানা হবে। এর মাধ্যমে পশু বিক্রেতা তাৎক্ষণিক টাকা পাবেন না। এটি চলে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে। যখন ক্রেতা নিশ্চিত করবেন পশু হাতে পেয়েছেন এবং কোনো অভিযোগ নেই, তখনই বিক্রেতা টাকা পাবেন। এই পদ্ধতিটি এবারই প্রথম ডিজিটাল হাটে যুক্ত করা হয়েছে।

এমএসএম / এমএসএম

বিশেষ ফ্লাইটে নেপাল থেকে রওনা হয়েছে জাতীয় ফুটবল দল

নেপালে আটকেপড়াদের ফেরাতে আজ দু‌টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান

গণভোট ও অধ্যাদেশসহ ৪ উপায়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ

সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস

ধেয়ে আসছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘ঈশান ২’

জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যাবে না

ডাকসুর মধ‍্য দিয়ে নির্বাচনের ট্রেনে উঠলো বাংলাদেশ

ডাকসু নির্বাচন গণতন্ত্র অভিমুখী বিশাল পদযাত্রা : আসিফ নজরুল

সারাদেশে ৩৩ হাজার পূজামণ্ডপ, বসানো যাবে না মদ-গাঁজার আসর

রাজধানীতে ‘মঞ্চ ৭১’ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাবেক সচিবসহ গ্রেপ্তার ৬

৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম অনুভূত হচ্ছে ৪১ ডিগ্রির

ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে: ইসি আনোয়ারুল ইসলাম

জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করুন, পুলিশকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা