দেশব্যাপী টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম মূলহোতা হাকিমসহ গ্রেফতার ৬
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় কালোবাজারি চক্রের সক্রিয় সদস্যরা কাউন্টার হতে এবং অনলাইনে টিকিট ক্রয় করে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। ইতোপূর্বে ঈদুল আযহার পূর্ববর্তী সময়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের ০৬ জন এবং ২০ অক্টোবর আরো ০৫ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করেছিল র্যাব-৩। সাম্প্রতিক সময়ে এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য এবং অভিযোগের ভিত্তিতে আবারও এই চক্রের মূলহোতাসহ বেশ কয়েকজন কালোবাজারিদেরকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩) ।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ ডিসেম্বর ২২ ইং বিকাল হতে রাত পর্যন্ত চলমান র্যাব-৩ এর দুটি পৃথক অভিযানে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা হতে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা মোঃ আব্দুল হাকিম(৩৭)মোঃ জয়নাল আবেদীন(৫৯)মোঃ শামীম (২৭)মোঃ আব্দুল জলিল (১৯)মোঃ খোকন মিয়া(৫৫)মোঃ উজ্জল ভূইয়া(৩৩)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে ২১ টি কালোবাজারি টিকিট, মোবাইল ফোন ০৫ টি, সীমকার্ড ০৩টি, মানিব্যাগ ২টি আইডিকার্ড ১ টি এবং টিকিট বিক্রয়ের নগদ ৯,৮১৮/-টাকা উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩) এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান ,রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনসহ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে অধিক মুনাফার আশায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের তৎপরতা চালিয়ে আসছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে এই কালোবাজারি চক্রটির একজন অন্যতম মূলহোতা মোঃ আব্দুল হাকিম এবং অন্যান্য সদস্যরা মিলে রেলস্টেশনে লাইনে দাড়িয়ে এক একটি এনআইডি ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করে।
তারা সাধারণত দিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করে থাকে। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দেয়। এই চক্রটি মূলত তূর্ণা নিশিথা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, চট্টলা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এই সকল ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে থাকে। এই চক্রটির আরও সদস্য ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ৫-৭ জন করে সক্রিয় সদস্য রয়েছে যারা তাদের টার্গেটকৃত ট্রেনসমূহের টিকিট কালোবাজারি করে সাধারন যাত্রীদের নিকট চড়াদামে বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে।
উক্ত চক্রের মূলহোতা আব্দুল হাকিম নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে এবং রেলস্টেশনে কর্মরত অসাধু একটি চক্রের যোগসাজসে ২০১৮ সাল থেকে টিকেট কালোবাজারির ব্যবসা শুরু করে। সে মূলত নিজে টিকেট কাটার কাজ না করে তার অধিনস্ত অপরাপর ৪/৫ জন কর্মী দ্বারা বিভিন্ন মাধ্যমে টিকেট সংগ্রহ পূর্বক চড়ামূল্যে বিক্রি করে থাকে।
বিভিন্ন সময়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও সে কখনো গ্রেফতার হয়নি। কারণ সে অত্যন্ত সুকৌশলে তার কর্মীদেরদ্বারা দীর্ঘদিন যাবৎ টিকেট চোরাকারবারের ব্যবসাটি চালিয়ে আসছিল। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ চক্রের মূলহোতা হাকিম এর নেতৃত্বে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীদের নিকট হতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
এমনকি অনেক সময় তারা রিক্সাওয়ালা, কুলি, দিনমজুর এদেরকে অল্প টাকার বিনিময়ে লাইনে দাড় করিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করে। এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করেও টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। সংগ্রকৃত টিকিট নিয়ে এরা রেলস্টেশনের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে। এরা রেলস্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া যাত্রীদের নিকট তাদের কালোবাজারি টিকিট বিক্রির জন্য ঘুরতে থাকে। ট্রেন ছাড়ার ঘন্টা দুয়েক আগে যাত্রী সমাগম শুরু হলে তাদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। তারা তখন দিগুন মূল্যে টিকিট বিক্রি করে থাকে।তারা ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে ৫০০ টাকার টিকিট সর্বোচ্চ ২০০০ টাকায়ও বিক্রি করেছে বলে জানায়। তারা প্রত্যেকে দীর্ঘদিন যাবৎ এই পেশার মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ এবং যাবতীয় খরচ চালিয়ে আসছে বলে জানায়।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃত মূলহোতা হাকিম জানায়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাকিমের ক্লায়েন্ট রয়েছে যাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তারা মানুষের সুযোগ বুঝে চড়ামূল্যে কখনো দিগুন তিনগুন মূল্যে টিকেটগুলো বিক্রয়ের ব্যবস্থা করে থাকে। এভাবেই দীর্ঘ ৫ বছর ধরে হাকিম দেশব্যাপী টিকিট কালোবাজারির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরীর মাধ্যমে তার কালোবাজারির ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্য খোকন মিয়ার নামে টিকিট কালোবাজারির দায়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ০৫ টি মামলা রয়েছে এবং সে র্যাব-৩ কর্তৃক গত ২০ অক্টোবর গ্রেফতার হয়ে ৩২ দিন জেল খেটে জামিনে মুক্তি পায়।কালোবাজারির কাজে লিপ্ত হয়।
গ্রেফতারকৃত অপর আসামী শামীমের নামে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে এবং সে বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধৃত হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খাটে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ফারজানা হক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩) ।
এমএসএম / এমএসএম
ফের গ্রেপ্তার দেখানো হলো আনিসুল-সালমানসহ ৮ জনকে
শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
মাওলানা সাদের অনুসারী মোয়াজ বিন নুর গ্রেপ্তার
৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর খালাস
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিলেন মাইকেল চাকমা
সাকিব আল হাসানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতের সমন জারি
৫ বিলিয়ন ডলার লোপাট : হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রুল
হাবে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ: হাইকোর্ট
১২ বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ, পাঠানো হলো রাষ্ট্রপতির কাছে
শমী কায়সারের জামিন স্থগিত
চিন্ময়ের আইনজীবীকে নিয়ম মেনে আসতে বললেন বিচারক
আরও এক মামলায় খালাস পেলেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন
Link Copied