ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চের সামনে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী সাদেক


শামীম আহমদ photo শামীম আহমদ
প্রকাশিত: ২-২-২০২৩ রাত ৯:৩২
দৈনিক সকালের সময়ে সংবাদ প্রকাশের পরে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে অপসারণ হওয়া চিহ্নিত সেই যুদ্ধাপরাধী সাদেক আবারও শুরু করছে নানান কৌশলে প্রতারণা। ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২ উপলক্ষে লেট এডিশন নামের এসএ টিভি আয়োজিত একটি টকশো অনুষ্ঠানে উপাচার্য পরিচয় দিতে দেখা গেছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সেই ভুয়া উপাচার্য সাদেককে। এইবছর তাকে দেখা যাচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাড়িয়ে ছবি করতে।
 
বিষয়টি নিয়ে বাংলা একাডেমির মুহম্মদ নূরুল হুদা কথা বলছেন দৈনিক সকালের সময়ের সাথে, তিনি বলছেন যুদ্ধপরাধী সাদেক সদস্য পদ বাতিলের কাজটি প্রক্রিয়াধীন। বাংলা একাডেমি কাউন্সিল সাদেকের অভিযোগ পর্যবেক্ষণ করছে। একজন যুদ্ধাপরাধী কিভাবে একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাওয়াত কার্ড পেলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন এটা ভুলক্রমে হয়তো গিয়ে থাকতে পারে। এই যুদ্ধপরাধী সাদের এতো আধিপত্যের রহস্য জানতে চাইলে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম আনিছুর রহমান বলেন- সাদেক তার নিজের পরিচয় থেকে "যুদ্ধপরাধ" উপাধি আড়াল করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত সমস্ত পয়েন্টে গিয়ে পাঞ্জাবির ওপর মুজিবকোট লাগিয়ে ছবি করছেন। এযেন মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের লোকের শুটিং করার ন্যায় অভিনয়। এছাড়াও অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তিনি আওয়ামী লীগের সংশ্লেষ সবকটি স্টলের সামনে গিয়ে ছবি করে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করছে। সকল স্টলে তিনি পরিচয় দিয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য। এই যুদ্ধাপরাধীর কয়েকজন সঙ্গী আছে কেউ শিবির ক্যাডার আবার কেউ জঙ্গি। জঙ্গি নেতা এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাকির হোসেন এবং বর্তমান উপাচার্যের পিএস শিবির ক্যাডার মাহাবুব এই যুদ্ধাপরাধী সাদের সাথে সাথেই থাকে।
 
সাদেক নানান কাজে সমস্ত অফিসে নিজের ভূয়া পরিচয় ব্যবহার করে অনৈতিক ভাবে সুবিধা নেয়। একই ভাবে তিনি ভুয়া উপাচার্য পরিচয়ে গত একযুগ ধরে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা রকমের অনৈতিক ও অবৈধ কাজে লিপ্ত ছিল। সরকার তাকে অপসারণ করলেও ভুয়া পরিচয় দিয়ে তিনি ২০২২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী এসএ টিভি আয়োজিত টকশোতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রধান সম্পাদক সন্তোষ কুমার ঢালীর সাথে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং অবৈধ। সকলে বিষয়টি জেনেও কিছু অবৈধ পয়সার দাপটে সাদেকের মুখোমুখি হয়না সাংবাদিকরা। ড. আনিছ দূখপ্রকাশ করে সকালের সময়কে বলেন গণমাধ্যম বিষয়টি এড়িয়ে চলছে।
 
ভার্চ্যুয়াল ভাবে যুক্ত ছিলেন সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান। এমন সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের মধ্যেই সাদেক ভুয়া উপাচার্য পরিচয় দিয়ে তার প্রতারণা অব্যাহত রাখছে। টিভি টকশোতে সাদেকের পরিচয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে উপস্থাপন করে উপস্থাপক সোনিয়া হক। সাদেক তখন সোনিয়া হকের দিকে মাথা নেড়ে ইশারায় সম্মতি জানায়। টিভির কোটি দর্শক শ্রোতা সাদেককে উপাচার্য হিসেবে পরিচয় পেলেও বাস্তবে তিনি উপাচার্য নয়। এটা সবচেয়ে বড় প্রতারণা। এর আগেও তিনি নামের শুরুতে ইমিরেটাস অধ্যাপক উপাধি ব্যাবহার করে প্রতারণা করছে। মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাশ করা ছদ্মবেশী মাওলানা আবুল হাসান মোহাম্মদ সাদেক একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। ১৯৭১ সালে সাদেক মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপক বিরোধী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তিনি পাকিস্তান টেলিভিশনে (বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশন) টকশো অনুষ্ঠান করে পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। তার নামে অভিযোগের স্তুপ ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়াও সরকারের সকল পর্যায়ের দপ্তরে। কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আমলে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। কমিশন তার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার সুপারিশ করছে। অজানা কারনে ১২ বছর মন্ত্রনালয় নিরব থাকলেও দৈনিক সকালের সময়ে সংবাদ প্রকাশের পরে সকল দপ্তর নড়েচড়ে ওঠে।
 
২০২০ সালের পহেলা ডিসেম্বর দৈনিক সকালের সময় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে মাওলানা সাদেকের ইমিরেটাস উপাধি সম্পর্কে ব্যাখ্যা চাইলে বেরিয়ে তার নানাবিধ কুকর্মের ইতিহাস। সনদ জালিয়াতি অর্থ পাচার নারী কেলেঙ্কারি ছাড়াও সাদেকের নানাবিধ কুকর্মের ইতিহাস নিয়ে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সাদেকের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়। কমিশন ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে চিঠি দিয়ে তার নামের সাথে ইমিরেটাস উপাধি ব্যাবহার করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দৈনিক সকালের সময়ের সংবাদপত্রের রেফারেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়টির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাহাবুব হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরে মন্ত্রনালয় সাদেককে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে ইউজিসিকে নির্দেশ দেয়।
 
১০ মার্চ ২০২১ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে। একই তারিখে শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রারকে সনদ জালিয়াতির অভিযোগে আইনের আওতায় আনতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়। রেজিস্ট্রার ফারুখ চাকুরীচ্যুত হলেও তাকে আইনের আওতায় আনতে দেখা যায়নি। সীমাহীন দুর্নীতি ও সনদ জালিয়াতির অভিযোগে অবশেষে ভুয়া ভিসি সাদেককে অপসারণ করেছে সরকার। বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ নতুন ভিসি পেয়েছে।
 
প্রায় বছরখানেক আগে থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে শাজান নামের এক লোক বিদেশি শিক্ষক পরিচয় দিয়ে উপাচার্য পদে বসে আছে। রাষ্ট্রপতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শাজাহান খান নামের কাউকে ভিসি পদে নিয়োগ দিয়েছেন এমন কোন প্রজ্ঞাপন খুজে পাওয়া যায়নি। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির নতুন ভিসি অবৈধ ভিসি সাদেকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেখানে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও ইউজিসির নির্দেশ অমান্যকারীর একজন। নতুন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি সাদেক পুত্রের অধীনস্থ একজন কর্মচারীর মতো আচরণ করছেন। তিনিও বিদেশ থেকে পাওয়া এক নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের "ইমেরিটাস" উপাধিতে ভূষিত হয়েছে বলে প্রচারণা চালায়। ট্রাউজার নুরুল ইসলাম সাবেক ভিসি যুদ্ধাপরাধী সাদের নিকট থেকে কালোটাকার ভাগ নিয়ে নিজেও অবৈধভাবে বহু সম্পদশালী হয়েছে। পারিবারিক উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সম্পদের মতো পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ করেছে সাদেকের পুত্র মুহাম্মদ জাফর সাদেক। পিতা পুত্রগং নিয়ন্ত্রিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্টি বোর্ডে আছে বোমা হামলার আসামি এবং চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ইয়াসিন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকলেও তারা বিশেষ সুবিধা নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে। 

এমএসএম / এমএসএম

রাষ্ট্রপতিকে প্রধান বিচারপতির শপথ পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট

জেলা ও দায়রা জজ,ঢাকার সাথে কোর্ট রিপোর্টাস এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কমিটির সৌজন্যে সাক্ষাৎ

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ

ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি অপসারণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

অর্থপাচার মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকায় প্রধান বিচারপতিকে হেয় করা হয়েছে

অর্থপাচার মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩৯ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মানিক রিমান্ডে নতুন মামলায় গ্রেফতার মন্ত্রী এমপিসহ ৯ জন

আগামী নির্বাচনের জন্য দোয়া চাইলেন শাজাহান খান

আদালতে সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান

অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমান ও মামুনের আপিলের রায় ৬ মার্চ

অর্থপাচার মামলায় সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান গ্রেপ্তার