উপেক্ষিত সরকারি নির্দেশনা
কর্তৃপক্ষের কারখানা খোলার বার্তায় কর্মস্থলে ফিরছেন শ্রমিকরা
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি কমাতে সারাদেশে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করলেও সোমবার (২৬ জুলাই) কারখানা খোলার খবরে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন শ্রমিকরা। কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পিকআপ, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেলযোগে রোববার থেকে কাজে ফিরতে গ্রাম থেকে শহরে আসতে শুরু করেছেন শ্রমিকরা।
গ্রাম থেকে গাজীপুরে ফেরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের মুঠোফোনে কাজে যোগদানের নির্দেশনা দিয়েছে। এতে ঝুঁকি ও ভোগান্তি নিয়েই ফিরছেন তারা। গত শুক্র ও শনিবারের তুলনায় রোববার সড়কে শ্রমিকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শ্রমিকরা অটোরিকসা, ভ্যানগাড়ি, সিএনজি ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে গাজীপুরে আসছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। আর ভ্যানগাড়ি কিংবা মোটরসাইকেলে আসা শ্রমিকরা পুলিশ চেকপোস্টের সামনে নেমে হেঁটে যাচ্ছেন। চেকপোস্ট হেঁটে অতিক্রম করে ফের গাড়িতে উঠছেন। মহাসড়কের জৈনাবাজার, নয়নপুর, মাওনা চৌরাস্তা, রাজেন্দ্রপুর, গাজীপুর চৌরাস্তা, টঙ্গী ও আবদুল্লাহপুর এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট থাকলেও অনেকটা নিষ্ক্রিয়। এই সুযোগে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল ছিল চোখে পড়ার মতো।
নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের ডিজি সোয়েটার লিমিটেড কারখানার শ্রমিক মো. মনসুর আহমেদ, মো. তারেক ও রিফাত আহমেদ ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে কাজে ফিরছেন। তারা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ সোমবার থেকে কারখানা খুলবে বলে মুঠোফোনে জানিয়েছে। তাই ঝুঁকি ও ভোগান্তি নিয়েই রওনা হয়েছেন। গণপরিবহন না চলায় অটোরিকসা ও সিএনজিযোগে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন। চালকরা পুলিশ চেকপোস্ট দেখেই নামিয়ে দিচ্ছেন। একই ভাবে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ ফোন করে শ্রমিকদের কাজে ফেরার কথা জানিয়েছে।
নোমান গ্রুপের শ্রমিক মো. হিমেল আহমেদ বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও শ্রমিকদের পাঁচ দিনের ছুটি দিয়ে রোববার কারখানা খোলার তারিখ বলে দেয়া হয়। শুক্রবার শ্রমিকদের বার্তা দেয়া হয়। বরিশাল থেকে ঝুঁকি নিয়ে এসে দেখি কারখানা বন্ধ। তার মতো কয়েকশ শ্রমিক এমন ভোগান্তি নিয়ে ফিরে এসেছেন।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. আলী আহমদ বলেন, মহাসড়কে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। এরপরও যারা নিয়ম ভঙ্গ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কমাতে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত কারখানা খোলার সুযোগ নেই। শিল্প-কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ছুটির ঘোষণা না দেয়াটা হতাশাজনক। অনেকেই ঈদের পর কারখানা খোলার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তা বন্ধ করে দিয়েছি।
জামান / জামান