ক্ষমতাসীনদের দিকে তাকিয়ে শরিকরা

দ্বীর্ঘ সময়ের বিশ্বস্ত ১৪ দলীয় জোট। ২০০৮ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছে তারা। তবে এবারে চিত্র ভিন্ন। গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিলের পর ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। সেই থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েই চলছে। এই সময়ের মধ্যে বা আগেও আওয়ামী লীগ শরিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার কার্যক্রম শেষ করেছে দলটি। তারপরেও ১৪ দলের নেতারা আশায় আছেন। তবে আশার কথা হলো, শরিকদের বিষয়ে আজ বৈঠকে বসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অনুযায়ী আগামী ১৭ ডিসেম্বরের আগে সমঝোতার আশায় চুপ রয়েছেন। গত শনিবার জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু তার বাসায় বৈঠক করেছেন, কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, আমির হোসেন আমু কোন কোন আসনে শরিকেরা তাদের দলীয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে, সেই তালিকা দেওয়ার অনুরোধ জানান। এর মধ্য থেকে শরিকদের অগ্রাধিকারের আসন কোনগুলো, সেটাও জানাতে বলেন। বেশ কয়েকটি শরিক দল তালিকা জমাও দিয়েছে।
জোটের কয়েকজন নেতা জানান, শরিকদের মধ্যে বর্তমানে যাদের সংসদ সদস্য আছে, তাদেরই বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। অন্যদের বিষয়ে খুব একটা তাগিদ নেই আওয়ামী লীগের। বর্তমান সংসদে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব আছে ওয়ার্কার্স পার্টির তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তিনটি এবং তরীকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টির (জেপি) একটি করে আসন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে আটটি আসন রয়েছে তাদের।
১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর ৪ জন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ আসলে কি চায়, সেটি তারা পরিস্কার করছে না। আমাদের সঙ্গে সর্বশেষ যে বেঠক হয়েছিল, ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জোট নেত্রী শেখ হাসিনা যে ওয়াদা করেছিলেন, তার প্রতিফলন লক্ষ্য করছি না। এতে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগের পাশাপাশি ক্ষোভও বাড়ছে।
ইতোমধ্যে শরিক দলগুলো এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। কারণ, আওয়ামী লীগ যদি মনে করে মুক্তিযুদ্ধে স্বপক্ষের শক্তি ও অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোকে বাইরে রেখে তারা নির্বাচনী বৈতরণী পাড় হবে, সেটি তারা করতেই পারে। কিন্তু এদেশের রাজনীতিতে ১৪ দলীয় জোট শরিক দলগুলোর ভূমিকা কোনো অংশে কম নেই। সাম্প্রদায়িক শক্তি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শরিক দলগুলোর অনেক অবদান রয়েছে।
১৪ দলীয় জোটের শরিকরা তো আগেই জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাবে। শুধু তাই নয়, নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার কথাও বলেছে। অথচ, নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিলো ৩০ নভেম্বর। তারপরেও তারা কিছু জানায়নি। এছাড়া আজ ৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন। কিন্তু এখনও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো সারা পাওয়া যায়নি। যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর। ফলে এখনও সময় আছে। কিন্তু আদর্শিক জোট করে আবার ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কেন? তারা যদি মনে করে, ১৪ দলের শরিকদের ছাড়াই নির্বাচনে যাবে, তাহলে সেটি জানিয়ে দিলেও হয়।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হলেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জোট নেত্রী ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে বসবেন। কারণ জোটের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ আওয়ামী লীগের নেই। আর আমরাও করতে চাই না। খুব শিগগিরই জোট নেত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। আশার বিষয় আমি নৌকা প্রতীকেই নির্বাচন করবো। এর বাইরে কিছু বলার নেই।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আসন বন্টন নিয়ে আওয়ামী লীগ বা জোট নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এখনও কোনো কথা হয়নি। হয়তো হবে। তবে কবে সেটি জানি না। ওয়ার্কার্স পার্টি অনেকেই মনোয়নপত্র দাখিল করেছে। যেহেতু আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আছে, তাই আলোচনারও সুযোগ আছে। জোট নেত্রী নৌকায় যাদের মনোনয়ন দেবেন, তার বাইরের সবাই ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতীকে নির্বাচন করবে। ফলে ক্ষোভ থাকলেও এখনও ১৪ দলের শরিকরা আশা করছে জোটবদ্ধভাবেই আগামী নির্বাচনে সবাই অংশ নেবে।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমরা তো চাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। বাড়ছে উদ্বেগ ও ক্ষোভ। যা ভবিষ্যতে খারাপ দিকেও যেতে পারে। জোট নেত্রী আমাদের সঙ্গে যে ওয়াদা করেছিলেন, তা তিনি যে রাখবেন, এখনও এমন কোনো পরিস্থিতি দেখছি না।
জাতীয় পার্টি (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটকে নিয়েই মূলত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। আজ ৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন মনোয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবে। এরপর ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। ফলে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সময় আছে। কারণ প্রতীক বরাদ্দের আগে জোট নেত্রী নির্বাচন কমিশনকে বলে দেবে কে কে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে যাবে। ফলে এটা কোনো সমস্যা। কিন্তু নির্বাচনি একটা প্রস্তুতি রয়েছে, তাই আগে থেকে ১৪ দলের শরিকদের আসন বন্টনগুলো হলে প্রস্তুতিটা ভালো হতো। এতে শরিকদলগুলোর মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ ও ক্ষোভ রয়েছে। তবে সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি। ১৪ দলের সবাইকে তো আর নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না। নৌকা প্রতীকের বাইরেও অনেকে নির্বাচনে যাবে।
এমএসএম / এমএসএম

গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে সরকারের ভেতরের মহল : ফখরুল

রমজানের এক সপ্তাহ আগে নির্বাচনের প্রত্যাশা সালাহউদ্দিনের

রুমিন ফারহানাসহ যে কোনো নারীর প্রতি স্লাটশেমিংয়ের বিরুদ্ধে হাসনাত

শোকজের জবাব দেবেন বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান

কাঠামোগত পরিবর্তন না এলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করব: নাহিদ ইসলাম

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ফিরোজায় পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী

পাঞ্জাবি পরা একজন আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছেন : রুমিন ফারহানা

বিএনপির আ.লীগ বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা : হাসনাত আবদুল্লাহ

রাষ্ট্রের সিস্টেমটাই হয়ে গেছে ‘দখলের’ : মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি দিতে হবে, সংস্কার না করে পুর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পরে না-পীর সাহের চরমোনাই

যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র ফিরবে না: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
