ঢাকা সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জঙ্গি গোষ্ঠীর মামলা থেকে সকালের সময় বিশেষ প্রতিনিধিকে খালাস দিয়েছে আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক photo নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২-৭-২০২৪ দুপুর ১১:৩১

"এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদেক ও মামুনল হককে গ্রেফতার করতে হবে" এবং এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গির প্রশিক্ষণ নিন, ঠাকুর ঘরে কে আমি কলা খাইনা" এমন দুটি সংবাদ প্রকাশের কারনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের সম্মানের ক্ষতি হয়েছে এমন অভিযোগে ২০২০ সালে সাইবার নিরাপত্তা কোর্টে মামলা করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয়টির ভুয়া প্রক্টর জামাত শিবিরের ক্যাডার ভূমিদস্যু ও জঙ্গি মোবারক হোসেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত সেই মামলা থেকে গতকাল ১১ জুলাই দৈনিক সকালের সময়ের বিশেষ প্রতিনিধি শামীম আহমদকে বেকসুর খালাস প্রদান করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে ২০২০ সাল থেকে দৈনিক সকালের সময় যেসকল সংবাদ প্রকাশ করছে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ভুয়া উপাচার্য এবং ভূয়া এমিরেটস অধ্যাপক সাদেক জঙ্গি সংগঠনে অর্থায়ন করে, বিদেশে টাকা পাচার করে, সরকারবিরোধী কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেয় এবং যুদ্ধপরাধসহ নানাবিধ অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সকালের সময়ের সংবাদের পরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যে নতুন ভিসি ও ট্রেজার নিয়োগ দিলেও তার দুর্নীতিগ্রস্থ। তবে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে জঙ্গি অধ্যুষিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সুত্র বলেছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক গোয়েন্দাদের নজরদারিতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে গ্রেফতার করার সম্ভাবনার কথাও পুলিশের নিকট থেকে শোনা গেছে। পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের ঢাকার অংশের ধোলাইখাল এরিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের সমালোচনা করে মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক ফেসবুকে লিখেছিলেন- "ধোলাইখালে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি স্থাপন বঙ্গবন্ধুর আত্মার সঙ্গে গাদ্দারি করার শামিল। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে তারা বঙ্গবন্ধুর সু-সন্তান হতে পারে না।" তখন বিষয়টি নিয়ে হেফাজত ইসলাম নেতা মামুনুল হক ঢাকায় বড় বড় প্রতিবাদ সভা করেছিলো। কয়েকদিনের মধ্যেই ফেসবুক থেকে মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক বঙ্গবন্ধু ভাষ্কর্য নিয়ে ফেসবুকে থেকে তার মন্তব্য মুছে দেয়।

২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি রবিবার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুল হককে গ্রেফতার করার সময় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ভুয়া উপাচার্য পরিচয় দেয়া জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক আত্মগোপনে ছিলো। তখন গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, মামুনুল হক যে বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া উপাচার্য মাওলানা সাদেকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবে অর্থায়ন করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে আন্দোলন ও সহিংসতা করা অভিযোগ ছিলো এই জঙ্গি নেতা সাদেকের বিরুদ্ধে। একাধিক অভিযোগে তখন মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেককে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা শোনা গেলেও অজানা কারনে এই সাদেক গ্রেফতার হয়নি। সম্প্রতি দৈনিক সকালের সময়ে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তদন্ত করে সাদেকের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা এবং বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য ছাড়াও সনদ জালিয়াতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে। তাই নতুন করে আবারও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে জঙ্গি নেতা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক।

মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাশ করা যুদ্ধপরাধী মাওলানা সাদেক ২৫ বছর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য! পৃথিবীর ইতিহাসে এতো দীর্ঘ সময় উপাচার্য থাকার ঘটনা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর রহস্যময় উপাচার্য যুদ্ধাপরাধী মাওলানা সাদেককে নিয়ে দৈনিক সকালের সময়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় পরে দায়সারাভাবে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিদেশে বসবাসরত শাহজাহান খান নামের এক লোককে উপাচার্যের দ্বায়িত্ব দেয়। ভাইস চ্যান্সেলরের দ্বায়িত্ব পাওয়া ব্যাক্তি কখনও বাংলাদেশে শিক্ষকতা করেনি, করেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছে পুরাতন উপাচার্য মাওলানা সাদেকের দাসত্ব করতেই নতুন উপাচার্য শাহজাহান খান তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। এই শাহজাহান খান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী, তার শক্ত অবস্থান ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। গোপালগঞ্জ সদরের পুখরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা বলছে মোকসেদ আলী খান ছিলো কুখ্যাত রাজাকার, সেই রাজাকার পুত্র এই শাহজাহান খান। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান দৈনিক সকালের সময়কে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া কেবল সরকারের কাজ নয়, পাশাপাশি তা নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা সরকারেরই দ্বায়িত্বের মধ্যে পরে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে কিনা সরকারের তা দেখা দরকার। সনদ জালিয়াতির করে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বানিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে এগুলো বলেও মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান।

পশ্চিম পাকিস্তানপন্থী হওয়ায় মাওলানা সাদেক ও শাহজাহান খান ছাত্র জীবনে পরস্পরের বন্ধুত্ব। মাওলানা সাদেকের পিতাও নরসিংদী অঞ্চলের কুখ্যাত রাজাকার। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পরেই সাদেক জামাত- জঙ্গি সংগঠনের সাথে প্রকাশ্যে কার্যক্রম শুরু করে। দুর্নীতি ও জঙ্গি দমনে শূন্য সহনশীলতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এই সাদেক সরকারের প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে গিয়ে ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অবৈধ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করছে। ২০২২ সাল থেকে উপাচার্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে শাহজাহান নামের আরেক যুদ্ধপরাধী। সবমিলিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ ২৮ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়টি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির হাতে আসেনি। জঙ্গি অধ্যুষিত অবৈধ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় তিন দশকে ঘুরেফিরে এক যুদ্ধপরাধীর হাত থেকে অন্য যুদ্ধপরাধীর হাতেই রয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অর্থসম্পদ লুটে খাচ্ছে মাওলানা আবুল হাসান সাদেক ও শাহজাহান খান নামের দুই যুদ্ধাপরাধী।

৪ জানুয়ারি ১৯৯৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৫ বছরের জন্য সাময়িক অনুমোদন পাওয়ার পরে ২৪ বছর অবৈধভাবে সনদ বিক্রির দোকান হিসেবে পরিচালা করছে জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী মাওলানা সাদেক। এই জঙ্গি শুরুতে কয়েক বছর উপাচার্য হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করলেও পরবর্তীতে তার পদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় দু'টোই অবৈধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ ব্যাবহার করে নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগে জঙ্গি নেতা মাওলানা সাদেক ও তার বিশ্ববিদ্যালয়টি কমিশন কালো তালিকাভুক্ত করে। নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগ পেয়েও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাবেক ও বর্তমান সব মিলিয়ে তিন মন্ত্রী সাদেকের অপকর্মের মৌন সমর্থন দিয়েছে। যেকারণে সাদেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কোন দপ্তর। কিছুদিন আগে যুদ্ধপরাধী সাদেকের বিরুদ্ধে ১২ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কাছে পেশ করলেও অজানা কারনে মন্ত্রী সচিব নিরবে আছে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভুয়া উপাচার্য যুদ্ধাপরাধী মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং দীপু মনি। এই দুই মন্ত্রীর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই চলতে দেখা যায় বর্তমান সরকারের চতুর্থ মেয়াদের শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসানকে। জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী সাদেকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সাদেকের দ্বিতীয় সংসারে একটি ছেলে আছে আনাস সাদেক যার মায়ের পরিচয় অজ্ঞাত। ৫ আগষ্ট ২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন সাদেক বিরুদ্ধে জমা হওয়া একটি অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা সুন্দরীদের বেতন মওকুফ করার কথা দিয়ে শতাধিক ছাত্রীর সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছে। বিষয়টি বেতন মওকুফের সাথে জড়িত হওয়ায় কোন ছাত্রী বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ প্রাপ্তির আশায় ছাত্রীর মুখ বুঝে সহ্য করছে। সাদেকের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার আজমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ গ্রামের সোলেমান মৃধা সাদেককে বহু নারী সরবরাহ করছে সেই ঘটনা ২০১১ সালে বহু পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। দুদকে দেয়া অভিযোগে দেখা যায় শাহিদা খানম ও রিটা আশরাফ নামের দুই মহিলাকে নিয়ে সাদেক একত্রে বিভিন্ন হোটেলে রাত্রিযাপন করে। শাহিদা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করতো। সাদেকের সাথে শাহিদার যৌন সম্পর্ক প্রকাশ্যে এলে শাহিদার স্বামী মনিরুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের স্ত্রীর অব্যহতি পত্র জমা দেয়। এছাড়াও লাইব্রেরীয়ান রাবেয়া বেগম, সহকারী মঞ্জুশ্রী দত্ত, আয়া সুলতানা এবং অনেক খন্ডকালীন শিক্ষিকা এই সাদেকের যৌনতার বলি হয়েছে।

২০১২ সালে জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী মাওলানা সাদেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের একটি শ্বেতপত্র জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাংশের ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নানাবিধ গ্রুপিংয়ের কারনে একাধিক অংশীদার সাদেককে কোনঠাসা করে ফেলেছিলো। সাদেক সকলকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে খুনিদের ভাড়া করে সব মিটমাট করে ফেলেছে। দুদক থেকে সংগ্রহ করে সেই অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায় এই জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী সাদেক ছাত্র জীবন থেকেই ইসলামি ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সাথে সাদেক ঘনিষ্ঠ মিত্র। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল মাওলানা নিজামীকে ফাঁসি দিয়েছে। মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত জঙ্গি নেতা সাদেক মাওলানা নিজামীকে সবধরনের সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধী সাদেক প্রচারণা চালিয়েছে। ১৯৬৮ থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত সাদেকের উপস্থাপনা ও পরিচালনায় টেলিভিশনে "জীবনের আলো" অনুষ্ঠানে পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো এই যুদ্ধপরাধী সাদেক। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মাওলানা সাদেক তার ও তার আপন ভাই আবুল ফারহ ফারুক নিজের জেলা নরসিংদী এলাকায় "ইমান আকিদা সংরক্ষণ কমিটি" নামে একটা যুদ্ধবিরোধী সংগঠনের সূচনা করে। যুদ্ধবিরোধী ওই সংগঠনের উপদেষ্টা ছিলো জেলার শান্তি কমিটির সভাপতি চিহ্নিত রাজাকার মাওলানা মজিবুর রহমান ও জঙ্গি সাদেককের মামা রায়পুরা জামাতের সাবেক আমির রাজাকার সোলায়মান মৃধা। নরসিংদির শান্তি কমিটির সভাপতি মাওলানা মজিবুর এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার নিযুক্ত করেছিলো জঙ্গি এই সাদেক। ১৯৭১ ডিসেম্বরে মহান বিজয়ের পরে মুক্তিযোদ্ধারা নরসিংদির যেসকল যুদ্ধপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করছে তাদের মধ্যে মাওলানা মজিবুর রহমান, সোলেমান মৃধা, মাওলানা সাদেক ও তার ভাই ফারুকের নাম উল্লেখযোগ্য। কিছু মুক্তিযোদ্ধার সহানুভূতির কারনে প্রাণে বেঁচে যায় সাদেক ও তার সঙ্গীরা। এর পরে বহু বছর গ্রামছাড়া হয়ে আত্মগোপনে থাকে এই যুদ্ধাপরাধী চক্র। ৭৫ সালে জাতির পিতা হত্যার পরে এই সাদেক পুনরায় এলাকায় ফিরে আসে। পরবর্তীতে মেজর জিয়াউর রহমানের আমলে "ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ" একটি রাজনৈতিক দল গঠন হলে সেই দলের ব্যানারে সকল যুদ্ধপরাধীদের আশ্রয় দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড মুক্ত হয়ে সাদেক চলে যায় মালয়েশিয়ায়। সেদেশের জঙ্গি সংগঠন "মুসলিম এইড" এর সভাপতি নিযুক্ত হয়। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০০১ সালে ঢাকায় ফিরে এসে তিনি জামাতের রোকন সম্মেলন, ছাত্র শিবিরের সাথী সম্মেলন, শিবিরের সদস্য সম্মেলন এবং জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এর সকল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ গ্রহণ করতো। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অনুষ্ঠানে যুদ্ধপরাধে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে আনা হতো প্রধান অতিথি হিসেবে। জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী সাদেকের সভাপতিত্বে ২০০৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আলোচনা সভা আয়োজন করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর তৎকালীন শিল্প মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী।

জঙ্গি সাদেক এশিয়ান ইউনিভার্সিটি রাজাকারের পূনঃবাসন কেন্দ্রে পরিনত করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দ্বায়িত্ব দিয়েছে রাজশাহীর কুখ্যাত রাজাকার মুহাম্মদ আবদুল্লাহকে। রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছে জামাতের কেন্দ্রীয় মজলিস শুরা সদস্য ও রোকন ক্যাপ্টেন (অব:) আবদুস সামাদকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাত নেতা শাহাদাৎ হোসেনকে দিয়েছে পরিচালক প্রশাসন পদের দ্বায়িত্ব। ২০১২ সালের পরে অবৈধ ভিসি সাদেক অবৈধভাবে প্রক্টর হিসেবে দ্বায়িত্ব দেয় ছাত্র শিবির থেকে বহিস্কৃত এবং কালোতালিকাভুক্ত খুনি ভূমিদস্যু মোবারক হোসেনকে। সাদেক তার নিজের পিএ হিসেবে রেখে দেয় রংপুরের বিখ্যাত শিবির সংগঠিত কলেজ কারমাইকেল কলেজের শিবির সভাপতি বহু মামলার আসামি মাহাবুবকে। খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে এবং শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদকে। মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে কথিত স্ত্রীসহ আটক হওয়ার পরে আর এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে যায়নি। ১/১১ পল্টনে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বোমা হামলার কুশলি পল্টন থানা জামাত নেতা মাওলানা জাকির হোসেনকেও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে এই জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী সাদেক। জঙ্গি নেতা যুদ্ধপরাধী মাওলানা সাদেকের কিছু বই আছে, পাকিস্তান পন্থিদের উৎসাহীত করে সেই গ্রন্থ তিনি প্রকাশ করছে। তার লেখা "ইকোনমিক গ্রোথ ইন ইসলামিক ইকোনমিক" (১৯৯১ সাল) "আওকাফ ইন বাংলাদেশ" (২০০২ সাল) "কংকর নিক্ষেপ" (২০১০ সাল) "নৈতিকতা ও মূল্যবোধ" এসব লেখায় তার মৌলবাদী চিন্তাধারা ফুটিয়ে তুলছে। abul hasan sadeq নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে সরাসরি সম্প্রচারে যুক্ত হয়ে তিনি এখন মানুষকে ইসলামি জ্ঞান দিয়ে থাকেন। কিছু নারীদের নিয়ে সুইমিংপুলে আছে এমন ছবিও তার ফেসবুকে দৃশ্যমান থাকলেও এখন তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে তা অদৃশ্য হয়ে যায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরী ছাত্রীদের সাথে নানান ঢংয়ের ছবি এখনও শোভা পায় ফেসবুকে।

এমএসএম / এমএসএম

কুষ্টিয়ায় ৬ হত্যা : ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি ১৪ অক্টোবর

আবু সাঈদ হত্যা : ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

শেখ হাসিনার মামলায় মূল তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

শেখ হাসিনার সঙ্গে তাপস-ইনু-কামালের ফোনালাপ শুনলেন ট্রাইব্যুনাল

বিসিবি সভাপ‌তির চি‌ঠির কার্যকারিতা স্থগিত, নির্বাচনে বাধা নেই

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

বিচারের মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের ফয়সালা করতে হবে : ট্রাইব্যুনালে নাহিদ

৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি শেখ হাসিনা, দাবি স্টেট ডিফেন্সের

ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন আবু সাঈদকে বাঁচাতে আসা সেই আয়ান

শেখ হাসিনার মামলায় নাহিদ ইসলামের জেরা আজ

ইভ্যালির রাসেল-শামীমার তিন বছর কারাদণ্ড

হাসিনার পতনের আগেই ড. ইউনূসকে সরকারপ্রধান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়