ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ
প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হাই একজন নিউরোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ। তবে তিনি দিয়ে থাকেন হার্টের চিকিৎসা, যা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি রোগী। এভাবে হাজার হাজার রোগীকে অনৈতিক অপচিকিৎসা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই চিকিৎসক বলে অভিযোগ তুলেছেন এক রোগী।
ওই রোগী জানান, এতে যেমন রোগীর অর্থ ব্যয় হচ্ছে তেমনই জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। খুব সূক্ষ্ম প্রক্রিয়ায় এই অপচিকিৎসায় কিছু অভিজ্ঞ ডাক্তারের সহযোগিতায় হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট মিলে একটি চক্র তৈরি করেছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রায়ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয়।
তিনি বলেন, রাজধানীর ধানমন্ডির ‘ইডেন মাল্টি কেয়ার হসপিটাল’-এর রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হাই একজন নিউরোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ। কিন্তু টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য তিনি হার্টের ইনজিওগ্রাম করতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, নিউরোলজিস্ট ডাক্তার হয়েও তিনি কিভাবে হার্টের চিকিৎসা করেন। এর প্রধান কারণ হিসেবে মনে হচ্ছে সহজ-সরল রোগীদের বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালই নয়, রাজধানীর এমন অনেক বেসরকারি হাসপাতাল গ্রাম থেকে সরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে আসা রোগীদের দালালের মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়ে ভর্তি করেন। এরপর তাদের গলাকাটা বিল ধরিয়ে দেন। এমন অভিযোগে মাঝেমধ্যেই অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। করা হয় জরিমানা ও সিলগালা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জানান, আসলে ভাই এসব হাসপাতাল গ্রাম থেকে আসা রোগীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়। সাইনবোর্ডে যেসব ডাক্তারের নাম দেয়া আছে তারা বসেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এসব ডাক্তার বসেন না, অনেক নাম হুদাই দেয়া থাকে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রায়ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুখপাত্র হাসিবুল ইসলাম জয় গত কয়েক দিন আগে হার্টের সমস্যা নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসিবুল ইসলাম জয় বলেন, আমার মতো মানুষকেই তাদের এই চক্রের হাতে জিম্মি করতে চেয়েছিল। একজন নিউরোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ কিডনি, ইসিজি ও হার্ট পরীক্ষা ছাড়াই কিভাবে এনজিওগ্রাম করতে চান। এটা আমার বোধগম্য নয়। এই চিকিৎসা কোন ধরনের অপচিকিৎসা? এই কয়দিনে আমি নিজে দেখেছি, তিনি (ডা. আব্দুল হাই) প্রত্যেক রোগীকে এভাবেই এনজিওগ্রাম করতে বাধ্য করছেন।এতে রোগীরা ভীষণভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
যেভাবে এই ফাঁদ থেকে বেঁচে গেলেন জয়
জয় জানান, তার প্রবাসী ভাই ডাক্তার এবং অন্যান্য কনসালট্যান্টের সাথে আলোচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে সময় চেয়ে আবেদন করেন। এতে প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হাই তার প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন- যে কোনো জিনিসের কোয়াইট সিন্ধান্ত নেয়া উচিত। এর পাশাপাশি আরো রাগান্বিত হয়ে বলেন- আমার দেয়া প্রেসক্রিপশনে ডেল্টা কোম্পানির ওষুধ কেন পরিবর্তন করা হলো? একপর্যায়ে আমি ওনাকে প্রশ্ন করি- আপনি তো নিউরোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ। আমাকে রেফার করবেন কার্ডিওলজিস্ট বিশেষজ্ঞের কাছে। এতে ডাক্তার আরো ক্ষুব্ধ হয়ে তার কক্ষ থেকে চলে যান। আমি মূলত হার্টের রোগী।
মধ্যরাতে রোগীদের বিরক্ত করার অভিযোগ
ঘুমালে ডাক্তার আব্দুল হাই দেখতে আসেন রাত ১টা৩০ মিনিটের দিকে। হুট করে ঘুম থেকে তুলে প্রেসার মাপেন ও ঠিকমত ওষুধ খাচ্ছি কিনা জিজ্ঞাসা করেন। এতে যে কেউ অসুস্থ হতেই পারেন। আবার এনজিওগ্রাম করার জন্য আমাকে চাপ চাপ সৃষ্টি করেন। আমি ওনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করি ও কনজারভেটিভ ট্রিটমেন্ট করার অনুরোধ করি।
জয় জানান, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট ও সুপারভাইজারকে তৈলাক্ত ও মশলাযুক্ত খাবার পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ করি। তৃতীয় দিনে আমাকে ঘুম থেকে ওঠাতে নিষেধ করি। এরপর চতুর্থ দিন থেকে ডাক্তার আর আমাকে দেখতে আসেননি। এসেছেন উনার সহাকারী। কথা ছিল উনি সকালে ও রাত্রে ঘুমানোর আগে আমাকে দেখে যাবেন। এরমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ ১০ দিনে ৫০ হাজার টাকা বিল করেন।
নিম্নমানের ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ
এই অভিজ্ঞ ডাক্তাররা খুব সস্তা দামের ডেল্টা কোম্পানি ও অন্যান্য নিম্নমানের কোম্পানিগুলোর ওষুধ দিয়ে থাকেন রোগীদের। নিম্নমানের এই কোম্পানি থেকেও তারা হয়তো কমিশন নিয়ে থাকেন। ওষুধ পরিবর্তন করতে চাইলে রোগীরা ক্ষুব্ধ প্রক্রিয়া দেখান।
নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ
জয় জানান, ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে অ্যাকাউন্ট এবং ম্যানেজমেন্টে নিয়োজিত ব্যক্তি নুরুল হুদা উনাকে তথ্য এবং খাদ্যের বিষয়ে নানাবিধ অভিযোগ করা সত্ত্বেও নিম্নমানের বাসি-পচা খাবার প্রদান করেন। খাদ্য পরিবর্তন তো দূরের কথা, আমলেই নেন না রোগীদের কোনো অভিযোগই।
উল্লেখ্য, ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে বাংলাদেশের বহু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। এই হাসপাতালের রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে খাদ্য, রোগীর নিরাপত্তা, রোগীর সুযোগ-সুবিধা এমনকি ঘুমন্ত রোগীকে রাত দেড়টার দিকে ডেকে চিকিৎসা প্রদান করা নিয়মবহির্ভূত বলে মনে করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
এই বিষয়ে জানতে প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হাইয়ের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জামান / জামান
মেডিকেলে থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যাচাই-বাছাই ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত
ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৭ রোগী
ডেঙ্গুতে ঢাকায় কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু বেশি
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৮
বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় অশনি সংকেত অটোমেশন; ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা
ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ
ক্যানসার রহস্যের জট খোলার নতুন ‘সূত্রের’ সন্ধান মিলেছে
বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির ইসি গঠনে সাত সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটি
বিশ্ব হার্ট দিবস ২০২৪ উদযাপন করলো এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা
আঘাতপ্রাপ্ত রেটিনায় চোখের চিকিৎসা ও সম্ভাবনা
২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট
পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য সংস্কার কমিটির সভাপতি এম এ ফয়েজ
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে ওএসডি
Link Copied