শেখ হাসিনার পরিবারসহ অন্যদের বরাদ্দ প্লট বাতিলে হাইকোর্টের রুল

শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যের নামে পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৬০ কাটা প্লট ও রাজউকের অন্যান্য প্রকল্পে বরাদ্দকৃত প্লট কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের প্লট বরাদ্দের অনিয়ম তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মজিবুর রহমান।
এর আগে, বুধবার (২৩ অক্টোবর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
গত ১০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন এ রিট করেন। অন্য আইনজীবীরা হলেন- রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, বেলায়েত হোসেন সোজা, কামরুল ইসলাম রিগান, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান শাহীন এবং জিল্লুর রহমান।
রিটে এসব অবৈধ বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত এবং সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়। এছাড়া এসব বরাদ্দের বিষয়ে তদন্তের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে বিবাদী করা হয়।
মিসবাহ উদ্দীন রিটের বিষয়ে বলেন, রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে স্বয়ং নিজের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
তিনি আরও জানান, প্লট বরাদ্দ পাওয়াদের তালিকায় আরও আছেন- শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলে-মেয়ে। ২০২২ সালে তারা প্লট বুঝে পান। পরে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া খোদ রাজউকেরই অনেকে এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১০ কাঠা আয়তনের প্লট নিয়েছেন। প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনে সব প্লট একত্রে সন্নিবেশিত করার সুযোগ দেয় রাজউক।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দীন জানান, নিজেকে অসহায় বলে সভা-সমাবেশে রাজনৈতিক বক্তব্য দিলেও শেখ হাসিনা স্বয়ং নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। পূর্বাচলে প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোন ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে তার প্লট নম্বর ০০৯। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির ৫৪ সুধা সদনের ঠিকানায় বরাদ্দপত্র পাঠানো হয়।
রাজউকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেকর্ডরুমে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাইলগুলো বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। হাসিনার প্লট বরাদ্দের ফাইলের ওপর বড় ইংরেজি হরফে লেখা রয়েছে ভি-৩, পাতা ১৪১। ফাইলে তার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্রের কপি, বরাদ্দপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ অন্য কাগজপত্রও রয়েছে।
রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফের সই করা চূড়ান্ত বরাদ্দপত্রে লেখা হয়- ‘কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকা হিসাবে ১০ কাঠার প্লটের মোট মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো।’ শেখ হাসিনা ছাড়াও ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তাদের প্লট নম্বর যথাক্রমে ০১৫ এবং ০১৭।
এর মধ্যে জয়ের নামে প্লটের বরাদ্দপত্র জারি করা হয় ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর। পরে ওই বছরের ১০ নভেম্বর প্লটের মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এর আগে ২ নভেম্বর পুতুলের নামেও ১০ কাঠা প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। এতে এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার তৎকালীন উপপরিচালক হাবিবুর রহমানের সই রয়েছে।
শুধু শেখ হাসিনা ও তার ছেলেমেয়ে নন; পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলেমেয়েও। তাদের নামেও যথারীতি রাজউকের আইন ও বিধি অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শুধু এই ৬টি প্লট নয়, এরকম অন্যান্য প্লটের বরাদ্দ চ্যালেঞ্জ করে এ রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।
প্লট বরাদ্দ করা হয় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের একই জায়গায়। সেখানে শেখ রেহানার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির প্লট নম্বর ০১১ ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর প্লট নম্বর ০১৯।
এমএসএম / এমএসএম

ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য দিলেন খোকন চন্দ্র

শেখ হাসিনা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার : অ্যাটর্নি জেনারেল

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য রাখছেন চিফ প্রসিকিউটর

তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে চলছে দ্বিতীয় দিনের আপিল শুনানি

হাসিনা-জয়-পুতুলের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে রিভিউর রায় ৬ আগস্ট

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আ.লীগ নেতা মোবারককে খালাস

আসাদুজ্জামান নূরের ৫ কোটি টাকার সম্পদ, লেনদেন ১৫৯ কোটি

হতাহতের ঘটনায় দুপুরের পর বন্ধ থাকবে হাইকোর্টের বিচারকাজ

জনবহুল এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট
