ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ঝুলে আছে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতি


শাওন হুসাইন  photo শাওন হুসাইন
প্রকাশিত: ২৪-১১-২০২৫ রাত ১১:২৬

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ঝুলে আছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের যুগ্ম সচিবদের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি। ২০তম ব্যাচসহ কয়েক ব্যাচের যোগ্য কর্মকর্তাদের নাম এসএসবির (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) যাচাই-বাছাইয়ে নির্বাচিত হলেও মাসের পর মাস ধরে প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে প্রশাসনে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির প্রস্তুতি শুরু করে এসএসবি। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকে কর্মকর্তাদের দীর্ঘ চাকরি-জীবনের রেকর্ড, শৃঙ্খলা ও অভিযোগ-সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনার পর শতাধিক যুগ্ম সচিবের নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়।

এসএসবির তালিকায় মূলত এমন কর্মকর্তারাই স্থান পান যারা গত সরকারের সময় রাজনৈতিক তদবির বা সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ থেকে মুক্ত ছিলেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানোর আগেই একটি বিশেষ মহলের হস্তক্ষেপে প্রক্রিয়াটি থমকে যায় বলে জানা গেছে।

একজন পদোন্নতিপ্রত্যাশী যুগ্ম সচিব বলেন, “আমি সারাজীবন সততার সঙ্গে কাজ করেছি। কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। এখন মনে হচ্ছে সেই সততাই যেন আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াল। ২০০১ সালে যোগদানকারী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২০তম ব্যাচ ২০১৫ সালে উপসচিব এবং ২০২১ সালে যুগ্ম সচিব হন। অতীতে রাজনৈতিক কারণে অনেকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হলেও ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তারা পদোন্নতি পেলেও এবার অতিরিক্ত সচিব হওয়ার প্রক্রিয়ায় আবারও আটকে গেছেন।

২০তম ব্যাচের আরো একজন কর্মকর্তা বলেন, চার বছরের বেশি সময় ধরে আমরা যুগ্ম সচিব আছি। এবারও পিছিয়ে পড়ছি। এতে হতাশা বাড়ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—এসএসবির অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ,মন্ত্রণালয়ভিত্তিক চাপ, রাজনৈতিক প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট বিতর্ক, স্বার্থসংঘাতজনিত সিদ্ধান্তহীনতা কেই দুষছেন।   

সাবেক আমলা ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা। কিন্তু পদোন্নতির ফাইল দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় সেই লক্ষ্য প্রশ্নের মুখে পড়ছে। তাদের মতে, দ্রুত শূন্য পদ পূরণ না হলে প্রশাসনিক গতি আরও কমে যাবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী—অনুমোদিত অতিরিক্ত সচিবের পদ: ৪১৮টি কর্মরত রয়েছেন ৩৩০ জন ওএসডি ৩৮ জন ফলে কার্যত শূন্যপদ দাঁড়িয়েছে ১২৬টি।

শূন্যপদের কারণে অনেক মন্ত্রণালয়ে একজন অতিরিক্ত সচিবকে তিন থেকে চারটি বিভাগ একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে। এতে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের গতি কমে আসছে।পদোন্নতি আটকে যাওয়ার বড় কারণগুলোর একটি হয়ে উঠেছে বিসিএস ২০তম ব্যাচের প্রকাশনা ‘অনুভবে বঙ্গবন্ধু’। বইটির ২৫ জন লেখক এবং ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন কর্মকর্তাকে ‘রাজনৈতিক আনুগত্যের প্রমাণ’ হিসেবে বিবেচনা করে তালিকা থেকে বাদ দেয় এসএসবি। কিন্তু বাদ পড়াদের মধ্যে কয়েকজন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকায় সেখানে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, যিনি এসএসবির সদস্যও, এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে পরে বিদেশ সফরে যান। তার অনুপস্থিতিতে চূড়ান্ত সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করাও সম্ভব হয়নি। ফলে সারসংক্ষেপ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠাতে না পারায় পদোন্নতি প্রক্রিয়া কার্যত পুরোপুরি থেমে গেছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “এসএসবির সারসংক্ষেপ প্রস্তুত। শুধু চূড়ান্ত বৈঠক ডাকলেই প্রক্রিয়া এগোবে।”এদিকে যোগ্য, পেশাদার ও সৎ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ঝুলে থাকায় প্রশাসনে অসন্তোষ, অনিশ্চয়তা ও কাজের ধীরগতি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এমএসএম / এমএসএম

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ঝুলে আছে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতি

ভূমিকম্প প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক

কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের সামনে গাড়িতে আগুন

ঢাকা ছাড়লেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

ডেঙ্গুতে একদিনে ৮ মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৭৮

সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে সেনাবাহিনী

৮০ দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে সংলাপে বসছে ইসি

নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা নেই

সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের ঘোষণা আজ

ঢাকায় ফের ভূমিকম্প

স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ও ইন্টারনেট সংযোগে ভুটানের সঙ্গে দুই সমঝোতা

একইদিনে গণভোট করতে ইসিকে চিঠি সরকারের

ঢাকার পাশেই ভূমিকম্পের আঘাত, উৎপত্তিস্থল বাইপাইল