ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাচারিতায় চরম সংকটে বাংলাদেশ গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশন


জাহিদুল ইসলাম শিশির photo জাহিদুল ইসলাম শিশির
প্রকাশিত: ২৫-৫-২০২১ বিকাল ৭:৩৬

চরম অব্যবস্থাপনা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশ গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক কাঠামো। নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ক্ষোভ হতাশা বিরাজ করলেও মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না কেউই। প্রতিষ্ঠানের ন্যাশনাল কাউন্সিলর (এনসি) নির্বাচিত হওয়ার পর ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ নিয়মনীতি ভেঙে স্বেচ্ছাচারিতা কতৃত্ববাদী এক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন কাজী জেবুন নেসা জানা গেছে এখানে নিয়ম ও কার্যনির্বাহী কমিটির মতামতের কোনো মূল্য নেই ক্ষমতার অতিদাপুটে জেবুনেচ্ছার ইচ্ছাই এখানে শেষ কথা।

সংস্থার এনসি (ন্যাশনাল কাউস্নিলর) নির্বাচিত হওয়ার পরই অ্যাসোসিয়েশনের গঠন বিধি লঙ্ঘন করে ডেপুটি জাতীয় কমিশনার পদে সাবিনা ফেরদৌস নামে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে তিনি দায়িত্ব দেন। সংস্থার নির্ধারিত বিধি ২৮() অনুযায়ী নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। কিন্তু সাবিনা ফেরদৌস সংস্থার নির্বাচিত কোনো সদস্য নন। তাছাড়া পূর্বে গার্লস গাইডের সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল এমন তথ্যও নেই। আবার সংস্থার ২২() বিধি অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটি একজন আইনবিদ, একজন চিকিৎসাবিদ এবং দুজন সমাজবিদকে কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করবেন। জেবুনেচ্ছা এনসি হওয়ার পর বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে সমাজের এই তিনটি ক্ষেত্রের কোনো সদস্য নেয়া হয়নি।

এনসি নির্বাচিত হওয়ার হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল এক সভায় সংস্থার নবনির্মিত দশতলা ভবনে অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কার্যালয় স্থানান্তরের জন্য ৬০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বাজেট বরাদ্দ করান কাজী জেবুন্নেচ্ছা। এরপর নিজের পছন্দের লোকদের দিয়ে কাজ শুর করেন। এর মাঝে দুই বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কমিশনারগণের জন্য বসার কক্ষ বা অফিস স্পেস দেয়া হয়নি। এই বরাদ্দ দ্বারা শুধু তিনি নিজের তার কয়েকজন স্টাফের অফিস স্পেস তৈরি করে নিয়েছেন। নিয়ে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাথে আর কোনো আলোচনার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।

এর বাইরে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত কোটি টাকার অর্থ ব্যয়ে নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। জানা যায়, বিদ্যালয়ে গাইডিং কার্যক্রমহলদে পাখি কর্মসূচিপরিচালনার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ওই বরাদ্দের মধ্যে ৮৫ লাখ টাকা ছিল গাড়ি ক্রয় বাবদ। গাইডের প্রয়োজনে মালামাল বা স্টাফদের আনা-নেয়ার কাজে গাড়ি ব্যবহার হওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে জেবুনেচ্ছা বরাদ্দপ্রাপ্ত ৮৫ লাখ টাকার সাথে গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের ফান্ড থেকে আরো ১৫ লাখ টাকা নিয়ে জিপ গাড়ি কিনেছেন এবং সে গাড়িটি তিনি নিজেই ব্যবহার করছেন। 

আবার প্রাথমিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত কোটি টাকা খরচের খাত বরাদ্দ নির্ধারণে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তা অনুমোদন হওয়া নিয়ম। কিন্তু কোনো সভা বা কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো অনুমোদন ছাড়াই নিজের পছন্দের স্টাফ হিসাবরক্ষককে দিয়ে তিনি নিজের খেয়ালখুশিমতো সব কাজ করেছেন। নিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে অনেককেই তার রোষানলে পড়তে হয়েছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়েছেন দায়িত্ব থেকে সরে যেতে।

জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চ হলদে পাখি কর্মসূচি নিয়ে জাতীয় কার্যালয়ে একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হলেও খাতের জন্য বরাদ্দ কোটি টাকার বিভাজন সম্পর্কে সেদিনও কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। 

ওই একই দিনে ( মার্চ ২০২০) সন্ধ্যায় জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় জাতীয় কমিশনার ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি জিপ ক্রয়ের প্রস্তাব করেন। সভায় হলদে পাখি কমিশনার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, ‘হলদে পাখি কর্মসূচিতে এধরনের জিপ কোনো কাজে লাগবে না। প্রশিক্ষণের কাজে লাগে এমন যানবাহন যথা পিকআপ, মাইক্রোবাস কেনা যেতে পারে।’ সভায় হলদে পাখি কমিশনারের প্রস্তাব প্রশিক্ষণ কমিশনার সমর্থন করেন। কিন্তু সভার কার্যবিবরণীতে হলদে পাখি কমিশনার প্রশিক্ষণ কমিশনারের কোনো বক্তব্যই রাখা হয়নি। তাছাড়া সভায় জেবুন্নেচ্ছার ইচ্ছার বাইরে গিয়ে বক্তব্য রাখার কারণে তিনি রোষানলে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি হলদে পাখি কমিশনারের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ২০১৯-২০ অর্থবছরের হলদে পাখি কর্মসূচির সবকিছু এনসি জেবুনেচ্ছার ইচ্ছা নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। বর্তমানে বেলা রানী সরকার নামে একজনকে হলদে পাখির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ক্রয়কৃত জিপটি কিনতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পর্যন্ত নেয়নি জেবুন্নেছা। বিষয়ে কথা বলতে গেলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোনো সদস্যকে বলেছেন এটা আমার ব্যাপার। আমি দেখব। নিয়ে আপনাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। তাছাড়া সংস্থার ক্রয়-বিক্রয় সাব-কমিটি বা অন্য কোনো সাব-কমিটিতে ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। জিপ ক্রয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত ৮৫ লাখ টাকার সাথে আরো প্রায় লাখ টাকা অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব তহবিল হতে নেয়া হয়েছে। সে টাকা খরচের ব্যাপারে কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক হলেও তাও করেননি তিনি। এছাড়া সভায় আলোচনা হয়নি এমন কথা সভার বিবরণীতে জুড়ে দেন তিনি। আবার তার পছন্দ না হলে আলোচিত কথা তিনি সভার বিবরণী থেকে ফেলে দিয়ে তাতে স্বাক্ষর করতে সংশ্লিষ্টদের বাধ্য করেন জেবুন্নেছা।

জানা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারীকালে ২০২০ সালের ২৮ জুন জাতীয় কমিশনার তড়িঘড়ি করে একটি জুম মিটিংয়ের আয়োজন করেন। এটি ছিল অ্যাসোসিয়েশনের ১০ অঞ্চলের বাজেট মিটিং। কিন্তু জুমে মিটিং করার আগে সদস্যদের জন্য কোনো ট্রেনিংয়ের আয়োজন করা হয়নি। ফলে অনভ্যস্ত অনেকেই সে জুম মিটিংয়ে অংশ নিতে পারেননি। সেই জুম মিটিংয়েও জিপ কেনা এবং সে কাজে অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব তহবিল হতে বাড়তি আরো প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হবে- এ ধরনের কোনো কথাই আলোচনা হয়নি। কিন্তু কার্যবিবরণীতে জাতীয় কমিশনার এসব কথা অন্তর্ভুক্ত করে স্বাক্ষর করেছেন।

কয়েকজন কমিশনারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এমন প্রস্তাব উঠলে অব্যশই তারা বিরোধিতা করতেন। অথচ আলোচনা হয়নি এমন বিষয়টি কার্যবিবরনীতে লেখা হয়েছে। ২৮ জুনের জুম মিটিংয়ের ভিডিও ক্লিপের সাথে সভার লিখিত কার্যবিবরণী খতিয়ে দেখলেই সব পরিষ্কার হযে যাবে।

বিষয়ে গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ খায়রুননেসা শিল্পী গার্লস গাইডের আঞ্চলিক কমিশনার রওশন ইসলামের সাথে ঘটনা বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেই সাথে কাজী জেবুন্নেছার সাথে কথা বলার অনুরোধ জানান। কাজী জেবুন্নেছার মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এমএসএম / এমএসএম

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ প্রকোপ হতে পারে

অমীমাংসিত বিষয় সমাধানে বাংলাদেশ-পাকিস্তান একমত

৫ স্মারক ও এক চু‌ক্তি সই করল বাংলাদেশ-পা‌কিস্তান

পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি : সিইসি

একাত্তরের অমীমাংসিত ইস্যুর দুইবার সমাধান হয়েছে

তৌহিদ-ইসহাক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু

১৩ বছর পর ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেঙ্গুতে আরো ৪ জনের মৃত্যু

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনে যেসব ইস্যুতে আলোচনা হবে