বাঘা পৌর মেয়র রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ
পুরাতন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের বেতন-ভাতা বাকি রেখে নতুন করে জনবল বৃদ্ধি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক। এ নিয়ে বাঘার সচেতন মহলে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিযেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার রাজস্ব তহবিল শূন্য। এডিপি ফান্ডেও নেই কোনো টাকা। তিন মাস থেকে বেতন-ভাতা বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরগণ। জ্বালানি তেলের বকেয়া ৩ লাখ ২ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। পিএফ ও গ্রাচুইটির দেনা প্রায় ৩০ লাখ। মুক্তিযোদ্ধা সাতভূমি খাতে বকেয়া ৪ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। রাজস্ব খাতে আয়ের টাকা জমা বাকি প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ঠিকাাদারি বিল বাকি অর্ধকোটি টাকা।
নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় এখন নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তার অবস্থা করুণ। বিভিন্ন এলাকার লাইটিং ব্যবস্থাও নাজুক। সব মিলিয়ে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ধরে রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার। এমতাবস্থায় পৌরসভায় জনবল বৃদ্ধিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক। সমস্যার সমাধান না করে পৌরসভায় জনবল বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে পড়েছেন পৌর স্টাফসহ সচেতন নাগরিকরা।
পৌরসভার তিন নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি মেয়রের সমস্ত অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরসহ আদালতে অভিযোগ করেছি। এজন্য গত ১১ মাস থেকে মেয়র আমার ভাতা বন্ধ রেখেছেন। আমাকে মাসিক মিটিংয়ে ডাকা হয় না। এমনকি আমার এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শুধু আমি নই, মেয়রের বিরুদ্ধে ভুয়া প্রকল্প দাখিল করে বিল উত্তোলন, হাট-বাজার ও পৌর মার্কেট ইজারার অর্থ লোপাট, এডিপি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, বিমান ট্রাভেল এজেন্সিতে বাকি পরিশোধ না করা, ডেঙ্গু ও চলমান করোনা সংকটের নামে ভুয়া ভাউচার দাখিল এবং তৎকালীন সময়ে চলমান ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬টি কাজে অনিয়মের অভিযোগের কারণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা প্রশাসকসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে এর আগে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক ফোরামের নেতা সৈকত মাহমুদ ও স্থানীয় এক ঠিকাদার।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৮-২০১৯ এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে পৌরসভার চণ্ডিপুর গরুহাট, মেয়র তার নিজস্ব ঠিকাদারকে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকায় ইজারা দেন। ওই ইজারার ৬০ লক্ষ টাকা রাজস্ব তহবিলে জমা হয়নি। অনুরূপভাবে বাঘার হাট দুইবারে ৮০ লক্ষ টাকায় ইজারা দেয়া হলেও অনাদায়ী রয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা।
অন্যদিকে বাঘা বাজারে পৌরসভার অর্থায়নে পৌর মার্কেট নির্মাণের পর ২৩টি দোকান বাবদ ১ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলেও ব্যাংকে জমা হয়েছে মাত্র ৬০ লক্ষ টাকা। বাকি ৪০ লক্ষ টাকা মেয়র আব্দুর রাজ্জাক তার নিজ প্রয়োজনে খরচ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জানা যায়, পৌরসভায় জনবল বৃদ্ধির জন্য মেয়র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি (২০২০) স্বারক নাম্বার-৪৬.০০.০০০০.০৬৩.১১.০২৩. ১৯.১৮৯ প্রথম বার নিয়োগ দানের অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে নিয়োগ দানে ব্যর্থ হন তিনি। পুনরায় মেয়রের আবেদনের প্রেক্ষিতে সময় বৃদ্ধি করে দ্বিতীয়বার পত্র প্রেরণ করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের জন্য দ্বিতীয় বারেও নিয়োগ দানে ব্যর্থ হন মেয়র। ফলে মেয়রের সময় বৃদ্ধির আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বশেষ গত ২৯ আগষ্ট (২০২১) তৃতীয় বার নিয়োগ প্রদানের অনুমতি পত্র দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর বলেন, মেয়রের দুর্নীতির বিষয়ে মুখ খুললেই রোষানলে পড়তে হয়। তাই আমরা এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইনা। পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এত অভিযোগের পরেও কেন তদন্ত করা হচ্ছেনা সে বিষয়েও তারা বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।
পৌরসভার বকেয়া বিল সম্পর্কে জানতে চাইলে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বাঘা সাব জোনাল অফিসের ডিজিএম সুবির কুমার দত্ত বলেন, গত জুন মাসে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়। কিন্তু তারা বিল পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
পৌরসভার কাছে টাকা পাওনা থাকার বিষয়ে বাঘা পেট্রলিয়াম এজেন্সির সত্তাধিকারি লুৎফর রহমান বলেন, পৌরসভার নিকট ৩ লাখ টাকা পাব। বারবার বলার পরেও মেয়র টাকা পরিশোধ না করায় বাধ্য হয়ে তেল দেয়া বন্ধ করে দিয়েছি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মেয়রের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, লোকবল বৃদ্ধির জন্য আমি দুই বছর আগে আবেদন করি। তখন পৌরসভায় কোনো বকেয়া ছিল না। করোনাকালীন অবস্থায় অনেক প্রতিষ্ঠানেই বেতন-ভাতা বাকি রয়েছে। তবে আমার পৌরসভার বকেয়া বেতন-ভাতা আমি খুব অল্প সময়েই পরিশোধ করতে পারব বলে মনে করছি। আমি এখন ঢাকায়, আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য এসেছি। আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে অফিস চলাকালীন সময়ে আসবেন, আমি উপযুক্ত নথিপত্রসহ দেখাতে পারব।
শাফিন / জামান
চুয়াডাঙ্গা জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামাল হোসেন এর দিনব্যাপী প্রশাসনিক কার্যক্রম
বাগেরহাট টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নব-নির্মিত ৫ তলা ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮ বছর
কুমিল্লা-৯ আসনে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
কুমিল্লায় প্রায় দেড় কোটি টাকার অবৈধ ভারতীয় শাড়ি জব্দ
নিসচার ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জয়পুরহাটে র্যালি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল
টুঙ্গিপাড়ায় শিক্ষকদের পদসোপান আন্দোলন: দুই বিদ্যালয়ে বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত
কুমিল্লায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হাজী ইয়াছিনের উদ্যোগে ধারাবাহিক কুরআন খতম ও দোয়া
ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন : শফিকুর রহমান
আমরা হিন্দু-মুসলিম নয় আমরা বাঙ্গালী এটাই আমাদের পরিচয়ঃ মহিত তালুকদার
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মুজিবনগরে দোয়া মাহফিল
ময়মনসিংহ রিয়াদ হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন, পিতার আহাজারি
ভূরুঙ্গামারীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
Link Copied