ঢাকা শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দেশবিরোধী গোষ্ঠী ক্ষমতায় যেতে চায়ঃ বিএইচপি


ইউসুফ আলী বাচ্চু photo ইউসুফ আলী বাচ্চু
প্রকাশিত: ৮-৬-২০২৩ দুপুর ৩:২৫

বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির মহাসচিব ড. সুফি সাগর সামস্ বলেছেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে শতকোটি টাকার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে দেশবিরোধী জনবিচ্ছিন্ন একটি গোষ্ঠী। তাদের প্রধান এজেন্ডা-যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা এবং বাংলাদেশকে আমেরিকার প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের অনুকুলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী সামরিক চুক্তি সম্পাদন করা। দেশবিরোধী ওই চুক্তি বাস্তবায়নের নেপথ্যে কাজ করছেন ড. মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দেশে-বিদেশে বেশকিছু রাজনীতিক, কুটনৈতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজ নামধারী কিছু উচ্চাভিলাসী মানুষ। 

দেশবিরোধী গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশকে সামরিক চুক্তিতে বাধ্য করে কারসাজির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে জনঅসন্তোষ সৃষ্টির মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা যার যার অবস্থান থেকে সরকার উৎখাতের লক্ষ্য নিয়ে বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এই অপতৎপরতার ফলে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের জন্য কলঙ্কজনক ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। 

বৃহস্পতিবার  রাজধানীর পল্টনে বিএইচপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়ে দলটির মহাসচিব এসব কথা বলেন। 

ঢাকা জেলা বিএইচপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ড. সুফি সাগর আরো বলেন, প্রতিদিন বলগাহীন ঘোড়ার মতো বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে করে সীমাহীন কষ্টে আছেন নিন্ম আয়ের মানুষ। জীবন জীবিকায় হিমশিম খাচ্ছেন তারা। 

সুফি সাগর বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তিন বেলার খাদ্য কমাতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, খাচ্ছেন আধাপেট। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আমিষ। অপুষ্টিতে ধুকে ধুকে বেচে আছেন দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠী। অপুষ্টি নিয়ে জন্ম নিচ্ছে নবজাতক শিশু। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির চলমান পরিস্থিতি দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকলে, সরকারের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ চরম আকার ধারণ করতে পারে। 

ড. সাগর শামস্ আরো বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবেই নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে বাস্তবে পণ্যের মূল্য যতটা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে। 

সুফি সামস্ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দোষি ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেও প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অসাধু এসব ব্যবসায়ী জরিমানা পরিশোধ করে পূর্বের ভূমিকায় অটল থাকছেন, যেন কিছুই হয়নি। বরং পণ্যমূল্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছেন। 

বিএইচপির মহাসচিব ড. শামস্ জানতে চান, এসব ব্যবসায়ীদের অর্থের উৎস কোথায়? রহস্যটা কী? তিনি বলেন, বাড়তি দামের জন্য ব্যবসায়ীরা আমদানি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধিকে দুষলেও, মূল কারণ তা নয়। সরকার উৎখাতে দেশবিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে একশ্রেণী অতিমুনাফালোভি ব্যবসায়ী হাত মিলিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে তোলা। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলা, জনঅসন্তোষ সৃষ্টি করা। 

ড. শামস্ দাবি করে বলেন, সরকার উৎখাতে দেশবিরোধী গোষ্ঠীর শতকোটি টাকার বাজেট থেকে অসৎ ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের অর্থ দেয়া হয়েছে। ওই টাকা থেকেই মোবাইল কোর্টের জরিমানা পরিশোধ করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। 

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএইচপি মহাসচিব বলেন, সরকারি দলের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা অসৎ ব্যবসায়ীদের বিষয়ে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। অসৎ ব্যবসায়ীদের কোনো ধর্ম নেই, কোন আদর্শ নেই। এরা কোনো দলের হতে পারে না। সুতরাং স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী অসৎ ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, কুটনৈতিক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। অন্যথায়, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত গোষ্ঠী পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ড. সুফি সাগর শামস্। 

মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএইচপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার নাজমুল সিদ্দিকী অপু, মজিবুর রহমান চিশতী, আবদুল করিম, যুগ্ম মহাসচিব ফররুখ খসরু, অ্যাড. মকবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বাদল, মো. রেজাউল করিম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. মনির হোসেন, দফতর সম্পাদক মো. খুরশীদ আলম সরকার ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. আইয়ুব খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

এমএসএম / এমএসএম