ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

থ্যালাসেমিয়া কেন হয়, আক্রান্ত হলে করণীয় 


নিশাত শাহরিয়ার photo নিশাত শাহরিয়ার
প্রকাশিত: ১০-৭-২০২৩ রাত ৮:৫৮
ডা.শামীমা শারমীন শোভা
ডা.শামীমা শারমীন শোভা

থ্যালাসেমিয়া একটি অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্র”ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রক্তের রোগ। থ্যালাসিমিয়াকে মেডিটেরিয়ান এনিমিয়াও বলা হয়। ভূমধ্যসাগরীয় অধিবাসীদের মধ্যে এ রোগ বেশী হয় বলে এ নামকরন। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা “অ্যানিমিয়া”তে ভুগে থাকেন। থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেডের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা.শামীমা শারমীন শোভা। সাক্ষাতকার নিয়েছেন দৈনিক সকালের সময়ের প্রতিবেদক নিশাত শাহরিয়ার। 

সকালের সময়: থ্যালাসেমিয়া রোগ কেন হয় ? 

ডা.শামীমা শারমীন শোভা: ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিনের জিনের কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। বাবা অথবা মা, কিংবা বাবা-মা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়া জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানের মধ্যে ছড়ায়। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাবা এবং মা উভয়ের থ্যালাসেমিয়া জিন থাকলে ভূমিষ্ট শিশুর শতকরা ২৫ ভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়।

সকালের সময়: থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলো কি কি ?

ডা.শামীমা শারমীন শোভা: থ্যালাসেমিয়া রোগের বেশকিছু লক্ষণ রয়েছে যার ফলে সহজেই বোঝা যায় থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্তের বিষয়টি। তবে জন্মের পর পরই এ রোগ ধরা পড়ে না। শিশুর বয়স এক বছরের বেশি হলে বাবা-মা খেয়াল করেন শিশুটি ফ্যাকাসে হয়ে যা”েছ। শিশুর দুর্বলতা বাড়ছে, শিশু অবসাদ অনুভব করছে। শ্বাসকষ্ট হওয়া, মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়াসহ ত্বক হলদে হয়ে যাওয়ার মত বিষয়গুলিও চোখে পড়ে। মুখের হাড়ের বিকৃতি হওয়া, ধীরগতিতে শারীরিক বৃদ্ধি ঘটা, পেট বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়া বা বৃদ্ধি পাওয়া, গাঢ় রঙের প্রস্রাব হওয়াসহ শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণগুলি প্রকাশ করে। 

সকালের সময়:  থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর শরীরে কি ধরনের জটিলতা দেখা দেয় ? 

ডা.শামীমা শারমীন শোভা: মানুষের রক্তের লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল থাকে তিন মাস। লোহিত রক্ত কণিকা অস্থিমজ্জায় অনবরত তৈরি হচ্ছে এবং তিন মাস শেষ হলেই প্লীহা এ লোহিত কণিকাকে রক্ত থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল অনেক কমে যায়। তাদের হিমোগ্লোবিন ঠিকমতো তৈরি না হওয়ায় লোহিত কণিকাগুলো সহজেই ভেঙে যায় এবং অস্থিমজ্জার পক্ষে একই হারে লোহিত কণিকা তৈরি সম্ভব হয়ে ওঠে না। এতে একদিকে যেমন রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হয় অন্যদিকে প্লীহা আয়তনে বড় হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত আয়রন জমা হয়ে হার্ট, প্যানক্রিয়াস,  লিভার, অণ্ডকোষ ইত্যাদি অঙ্গের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। বার বার রক্ত পরিবর্তনের কারণে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের রক্ত বাহিত বিভিন্ন রোগ যেমন-হেপাটাইটিস হতে পারে,  অস্থিমজ্জা প্রসারিত হয়ে যায় এবং এতে হাড় পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। এতে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

সকালের সময়: কারা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকে ? 

ডা.শামীমা শারমীন শোভা: যাদের শরীরে থ্যালাসেমিয়া রোগের জিন আছে কিš‘ রোগের কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না তাদের থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক বলা হয়। এরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। তবে এরা এদের সন্তানদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার ঘটায়। পিতা-মাতা উভয়েই বাহক হলে থ্যালাসেমিয়া শিশুর জন্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যে কেউ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হতে পারে। কাজেই বিয়ের আগে সবারই জেনে নেয়া দরকার তিনি থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক কিনা।

সকালের সময়: থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হলে করণীয় কি ? 

ডা.শামীমা শারমীন শোভা: দেশের প্রতিটি নাগরিককেই এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি অন্যদেরও সচেতন করে তুলতে হবে। যদি পরিবারের কোনো সদস্যের থ্যালাসেমিয়া রোগের ইতিহাস থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভধারণ করার আগেও  অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটা  জরুরি। থ্যালাসেমিয়া থেকে বাঁচতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো এ রোগের বাহকগুলো আগে শনাক্ত করা। এজন্য স্ক্রিনিং কর্মসূচি গ্রহণ করে বাহকদের চিহ্নিত করার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। দুজন বাহক যদি একে অন্যকে বিয়ে না করে তাহলে কোনো শিশুরই থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করার সুযোগ নেই। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করা। থ্যালাসেমিয়ার জিন বহনকারী নারী গর্ভধারণ করলে তার সন্তান প্রসবের আগে অথবা গর্ভাবস্থায় ৮ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রি-মেটাল থ্যালাসেমিয়া নির্ণয় করিয়ে নিতে হবে। এ পরীক্ষার যদি দেখা যায়, অনাগত সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে তবে সন্তানটির মারাত্মক পরিণতির কথা ভেবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সন্তান গ্রহণ থেকে বিরত থাকা যেতে পারে। 

ডা.শামীমা শারমীন শোভা
সহকারী অধ্যাপক
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ
আলোক হেলথকেয়ার লি.
রজনীগন্ধা টাউয়ার, কচুক্ষেত 
ঢাকা সেনানিবাস, মিরপুর, ঢাকা। 

 

 

এমএসএম / এমএসএম

বিএসএমএমইউয়ে নতুন নামের ব্যানার, বাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

মেডিকেলে থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যাচাই-বাছাই ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত

ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৭ রোগী

ডেঙ্গুতে ঢাকায় কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু বেশি

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৮

বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় অশনি সংকেত অটোমেশন; ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ

ক্যানসার রহস্যের জট খোলার নতুন ‘সূত্রের’ সন্ধান মিলেছে

বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির ইসি গঠনে সাত সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটি

বিশ্ব হার্ট দিবস ২০২৪ উদযাপন করলো এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা

আঘাতপ্রাপ্ত রেটিনায় চোখের চিকিৎসা ও সম্ভাবনা

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য সংস্কার কমিটির সভাপতি এম এ ফয়েজ