ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

যেসব ঘিরে বিতর্কিত চবির সাবেক উপাচার্য শিরীণ


চট্টগ্রাম অফিস photo চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ২৪-৩-২০২৪ দুপুর ৪:১৭

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নতুন উপাচার্য নিয়োগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার অধ্যায়। চবির ইতিহাসে ১ম নারী উপাচার্য হিসেবে তার কাছে ভালো কিছুর প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তুু সবাইকে হতাশ করে নানা কারনেই আলোচিত সমালোচিত অধ্যাপক শিরীণ হয়েছেন খবরের শিরোনাম। কখনো বেফাঁস মন্তব্য, কখনো শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি কিংবা কাছের মানুষদের মাঝে পদ বন্টন, প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগে জর্জরিত ছিল তার মেয়াদকাল। 

ফারসি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে
অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁস :- ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে টাকা লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় নিয়োগ বোর্ড বাতিল করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের ৫৩৭তম সভায় ফারসি বিভাগের নিয়োগ বাতিল করা হয়। সিন্ডিকেট সভার পর সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য শিরীণ আখতার নিজেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ঐ কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণির চাকরির জন্য দিতে হবে ১০ হতে ১২ লাখ টাকা, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে লাগবে ৮ লাখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হতে প্রয়োজন ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা। আর শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সবোর্চ্চ সম্মানের পদ তাই ১৬ লাখের কমে হবে না।

পালি বিভাগে বিধিবহির্ভূতভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা :-  বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাতিলযোগ্য, মিথ্যা তথ্যসম্বলিত,  অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ দরখাস্তের পরও নিজের আস্থাভাজন সহকারি প্রক্টর অরূপ বড়ুয়ার স্ত্রী অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দানের চেষ্টায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে তাকে নিয়োগ দানে বিরত থাকতে হয়।

বাংলা বিভাগ ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম :-  ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাংলা ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ চেষ্টায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন অধ্যাপক শিরীণ ও তার প্রশাসন। পরবর্তীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে অর্ধশতাধিক শিক্ষক অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন শিক্ষক সমিতির তোপের মুখে এবং চার সদস্য বিশিষ্ট বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনি বোর্ডে বাংলা বিভাগের ২ সদস্য অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম (সভাপতি চবি বাংলা বিভাগ) এবং অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ (সাবেক ডিন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, চবি) নির্বাচনী বোর্ড সভায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিতর্কিত এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।

উপাচার্যের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে একযোগে ১৮ পদ থেকে ১৬ জনের পদত্যাগ :-  উপাচার্যের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ প্রক্টরসহ একযোগে ১৮ পদ থেকে ১৬ জনের পদত্যাগ ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে ছিল। যেখানে ১৮ পদের মধ্যে একটি প্রক্টরের, পাঁচটি সহকারী প্রক্টরের, ১১টি বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ ও হাউজ টিউটর পদ ও একটি আইকিএসির অতিরিক্ত পরিচালক পদ ছিল।

সাংবাদিক নির্যাতনের সাথে জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের মানবিক কারণে ক্ষমা :-  চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও ঢাকা স্টেট পত্রিকার প্রতিনিধি দোস্ত মোহাম্মদের উপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অনেকটা বাধ্য হয়েই ৬ মাসের সাময়িক বহিষ্কার আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে মানবিক কারন দেখিয়ে ৪ মাস না যেতেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেন অধ্যাপক শিরীণ আখতার। 

এক সেমিনারেই খরচ ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা :- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে ২০২৩ সালের  ৪  জুন ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। উপাচার্য শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এতে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছিল অধ্যাপক শিরীণের প্রশাসন।

এক ভবন উদ্বোধনেই সাড়ে ৪৪ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে সমালোচিত :-

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের একাডেমিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্ভরযোগ্য সংস্থা দিয়ে এর তদন্তের দাবিও উঠেছিল তখন।পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ব্যয়ের সঠিক হিসাব জানতে চেয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতার বরাবর চিঠি পর্যন্ত পাঠায়।

দুই মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চবি উপাচার্যের বিজ্ঞাপন :- দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও  শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন অধ্যাপক শিরীণ আখতার। এই বিজ্ঞাপনের ব্যয় কোন খাত থেকে নির্বাহ করা হবে— তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। পরবর্তীতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিজ্ঞাপনের ব্যয় নিজেকেই বহন করতে হয় অধ্যাপক শিরীণের।

বারবার ঘোষণা দিয়েও সমাবর্তন আয়োজনে ব্যর্থতায় হাস্যরসের সৃষ্টি :-
 দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চার বছরে পাঁচ থেকে ছয়বার সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই, ২০২৩ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছর আরও একবার সমাবর্তনের ঘোষণা দেন অধ্যাপক শিরীণ। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে চবির পঞ্চম সমাবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও হাস্যরস সৃষ্টি করে।

শেষ কর্মদিবসেও গণহারে নিয়োগ :- শেষ কর্মদিবসে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ-শত জনকে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে । এরা সবাই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। অস্থায়ী ভিত্তিতে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনি উপাচার্য থাকাকালে দীর্ঘ সাড়ে চার বছরেরও বেশি মেয়াদকালে প্রায় সাড়ে ৫০০ শিক্ষক কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন বলে জানা যায়।

এমএসএম / এমএসএম

চবিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চাকসু নির্বাচনের দাবিতে চবি বিপ্লবী ছাত্র সমাজের মানববন্ধন

বুটেক্সে সনদ ও নম্বরপত্র উত্তোলনে চরম ভোগান্তি

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ইবির শান্তার মৃত্যু

চার দিনের মধ্যে রাকসুর তফসিল ঘোষণাসহ ২০ দাবিতে ১২৫ প্রস্তাব রাবি শিবিরের

বদরুন্নেসাকে হারিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন ডিআইইউ

চবির সিইউএসএস এর নেতৃত্ব সিফাত, ওজায়ের

চবির মায়ালেক এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

চবি শিবিরের উদ্যোগে শহীদ মোঃ ফরহাদ হোসেন হলে বৃক্ষরোপণ

জবিতে গনতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে ফয়সাল-শাহিন

প্রাথমিক শিক্ষকদের ফেসবুক ব্যবহারে অধিদপ্তরের কঠোর নজরদারি

টাইমস হায়ার ইমপ্যাক্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা ১২ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ডিআইইউ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘিরে বিতর্ক