মৎস্য সপ্তাহ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
মাথা উচ্চ করা বাংলাদেশে রক্ত ঝরবে কেন?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করে বলেছেন যে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উচ্চ করে দাঁড়িয়েছে, সেই বাংলাদেশে আজ রক্ত ঝড়বে কেন?
মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠেন সকাল ১১টা ৩৫মিনিটে। মুহুর্তেই উপস্থিতিদের করতালিতে মুখরিত হয় অনুষ্ঠানস্থল। উপস্থিত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, শুরুতেই শ্রদ্ধা জানাই জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতার প্রতি। জারা জীবন দিয়ে এদেশের বিজয় এনে দিয়েছে সেই মহান শহীদের প্রতি। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়তে মাত্র সারে ৩ বছরের মতো সময় পেয়েছিলন বঙ্গবন্ধু। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যখনই বড় বড় পরিকল্পনা শুরু হয় তখন ঘাতকের আঘাতে নির্মম গণহত্যার স্বীকার হয়। সেই বিভীষিকাময় গণহত্যার বর্ণনা করে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যের মাঝখানে কোটা আন্দোলনের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন-
কোটা সংস্কার আমি সম্পূর্ণ বাতিল আগেই করে দিয়েছি। ওই বিষয়টি নিয়ে কেউ হাইকোর্টে গেছে, আবার হাইকোর্ট রায় দিয়েও দিয়েছে তবুও আন্দোলন থামেনি। এটা আসলে কিসের আন্দোলন! স্বজন হারিয়ে আজ দিশেহারা। এরপরেও আজও স্বজন হারানোর কষ্ট সইতে হচ্ছে। ৬ বছর আমি ও আমার ছোট বোন রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর আমলে প্রবৃদ্ধির ৯ শতাংশ হয়েছিল সেই দেশ পুনরায় অতীতের দিকে ফিরিয়ে নিতে একটি গোষ্ঠী তৎপর। যে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উচ্চ করে দাঁড়িয়েছে, সেই বাংলাদেশে আজ রক্ত ঝড়বে কেন? যারা তাজা তাজা প্রান হত্যা করেছে তারা কি চায়? আমি গতকাল একটি ছোট্ট শিশুকে আহত অবস্থায় দেখেছি...... এ কথা বলে কিছুক্ষণ নিরবতায় আবেগাপ্লুত হন। আমি তো ক্ষমতার মোহে নেই, আমি তো বার বার গুলির মুখোমুখি হয়েছি। আমাকে হত্যা করার জন্য ২১ বার আক্রমণ হয়েছে। আমি তো মৃত্যুর পরোয়া করিনি। আমি ছাত্রদের দবির আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করেছি। জাতিসংঘের সহায়তা আমি চেয়েছি, তার আমার সরকারকে সহায়তা করার কথা দিয়েছে। একাত্তরের অপরাধীরা আজ বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করেছে তা পুনরায় স্থাপন করা যাবে যে প্রানগুলি গেছে তা আমরা আর ফিরে পাবো না.... এই কথা বলার পরে কান্না করতে দেখা গেছে।
৫০ মিনিটের বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন একটি বাড়ি একটি খামারে প্রকল্প সম্প্রসারণ করা হবে। তিনি অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক কিছু বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ১৯৭৪ সালে সমুদ্র সীমা আইন বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে যান, এটাই বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টির উদাহরণ। দুঃখের বিষয় ৭৫ পরবর্তী যে সরকার এই দেশ পরিচালনা করছে তার এ দেশের উন্নয়ন করেনি। আমরা ক্ষমতায় এসে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে আমরা আমাদের সমুদ্র সীমা বুঝে নিয়েছি। সমুদ্র সীমা অর্জনে আমরা বিজয় পেয়েছি। আগে মানুষ নুন ভাত আশা করতো, এখন মাছ ভাত আশা করে। এটা আমাদের মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির ফল। কৃষি গবেষণায় বড় অংকের বরাদ্দ দেয়ার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন বরাদ্দ অনুযায়ী আমরা ফল পেয়েছি। আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সূচনা আওয়ামী লীগ সরকার করছে। এর মাধ্যমে অনাবাদি জমি চাষ করে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়তার কথা জানান। অনুষ্ঠানের শেষে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি বলেন, রাত পোহালেই আমাদের সামনে ভয়াবহ মাস আগষ্ট মাস। যে মাসে আমরা হারিয়েছি আমাদের জাতির পিতাকে ও তার পরিবারের প্রায় সব সদস্যদের। ১৯৮১ সালে অন্ধকারে নিমজ্জিত বাংলাদেশ জাতির পিতার কন্যা এসেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ৫ বারের প্রধানমন্ত্রী। তার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব ২০০৯ সাল থেকে আজ-অব্দি এই দেশে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করছি। প্রায় ৫০ লক্ষ মেট্রিকটন রপ্তানি করছি। ২০৪১ সালে আমরা ৬৫ লক্ষ মেট্রিকটন মাছ রপ্তানি করার লক্ষ মাত্র, ২০৫০ সালে ৮৫ লক্ষ মেট্রিকটন মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা আমাদের এই মন্ত্রণালয় গ্রহণ করছে। ৪০০ অভয়াশ্রম বৃদ্ধি করে মাছ চাষের পরিকল্পনাও এই মন্ত্রণালয়ের আছে। নতুন একটি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন বাঁশের খাঁচা তৈরি করে মাছ চাষ সম্প্রসারণ আমাদের মন্ত্রণালয়ের আছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মাছে ভাতে ভাঙালি। আমারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথে এগুচ্ছি। ঘোলা ভরা ধান পুকুর ভরা মাছ থাকবে, আমরা সেই দিকেই ফিরে যাবো। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেও একজন মৎস্য চাষি। সে নিজেই মাছ ধরেন, মাছের সাথে তার আত্মার বন্ধন।
সচিব সাইদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নে মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে মৎস্য শিল্পের ভূমিকা থাকবে। মৎস্য সম্পদ সম্প্রসারণের লক্ষে প্রয়োজন উম্মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। মৎস্য চাষিদের সবধরনের সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি এই খাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন সচিব। তিনি মাছ উৎপাদনের একটা সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় মহৎ বিভাগের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা জানান। উপকূলীয় জেলেদের জন্য স্মার্ট কার্ড তৈরির মাধ্যমে জেলেদের সার্বিকভাবে নিরাপত্তার কথা নিশ্চিত করে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের কথাও উল্লেখ করেন সরকার এই সচিব।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে মৎস্য খাতে অবদানের জন্য স্বর্ন ও রৌপ্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। ৭ ক্যাটাগরিতে স্বর্নপদক রৌপ্য পদক ও ব্রঞ্জ পদক পেয়েছে সোনালী মৎস্য খামারি, স্পেক্টা হিকজা, মেসার্স জোয়াদ্দার মৎস্য খামার, ক্রিমশন রোজেলা, জেলা টাস্কফোর্স বরগুনা, মৎস্য অধিদপ্তর খুলনা, কুলসুম এগ্রি ফার্ম, মায়ের দোয়া মৎস্য ফার্ম বগুড়া, সোনার মদিনা মৎস্য খামার, আবুল ফিস প্রডাক্ট লিমিটেড, প্রিমিয়াম ফিস, মাসুদ রানা শেকৃবি, প্রদীপ কুমার মৎস্য কর্মকর্তা খুলনা, তারিকুল ইসলাম, এম আর তেলাপিয়া হ্যাচারী, রাইয়ান পর্ল হারবাল, আমানুল্লাহ মৎস্য প্রকল্প ইউনিক একোরিয়া, জাপান ফাস্ট ট্রেড লিমিটেড, ফিস ফার্ম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মৎস্য প্রকল্প পরিচালক। এর পরে দুজন জেলেদের মাঝে স্মার্ট কার্ড বিতরণ। জেলে দুজন রতুল বিশ্বাস গোপালগঞ্জ ও অসীম কুমার সরকার ফরিদপুর।
এমএসএম / এমএসএম

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

নতুন দলের নিবন্ধন দিতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি ইসির

পাচার করা টাকা ফেরাতে দ্রুত একটি বিশেষ আইন করা হবে : প্রেস সচিব

৭ মাসে কারাগারে ১২ জনকে চাকরিচ্যুত, শাস্তি পেয়েছে ২৭০

ডিসেম্বর টাইম লাইন যাতে মিস না করি সেভাবেই প্রস্তুতি: সিইসি

শেখ হাসিনা-রেহানা পরিবারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু, সড়ক অবরোধ

১০ বছর বন্ধ দুই পানি শোধনাগার প্রকল্প : প্রধান উপদেষ্টার উষ্মা

ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ

ঈদুল ফিতর : মাস শেষের আগেই বেতন পাবেন সরকারি কর্মচারীরা

৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার করতে হবে : আইন উপদেষ্টা

নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ
