অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য চাপে সরকার

সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণের পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় বিশ্ব মোড়লেরা। যেখানে বাংলাদেশের সকল দলের অংশগ্রনণ নিশ্চিত হবে। তাহলেই কেবল সরকারকে সবধরনের সহায়তা তারা দেবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে একটি দ্রুত জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিচ্ছে পুরো পশ্চিমারা। তারা মনে করেন, জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা না হলে তার সাথে কাজ করা পশ্চিমাদের পক্ষে অসম্ভব। আর এজন্য বাংলাদেশে একটি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাগিদ দিচ্ছে তারা। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষের পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত শক্ত অবস্থান নিয়েছে। বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক চ্যালেনের খবর নিয়ে জানা গেছে যে, পশ্চিমারা বাংলাদেশে দ্রুত জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। এই কাজে সর্তক দৃষ্টি রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বয়ং। আর তার সাথে কাজ করে যাচ্ছে দেশটির কৌশলগত সামরিক মিত্র ভারত। ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী’র একটি বক্তব্যে বোঝা গেছে তারা একটি নির্বাচিত সরকারের সাথেই কাজ করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা আগের মতোই আছে উল্লেখ করে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী তার বক্তব্যে বলেছেন, দুই দেশের পারস্পরিক সার্বিক সম্পর্ক তখনই স্বাভাবিক হবে, যখন সে দেশে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে।
অন্যদিকে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি’র একটি বক্তব্যে বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজনের ব্যাপারে তাগাদার বিষয়টির ফুটে উঠেছে। তাদের ধারণা ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি’ক দেশটি কেবল দ্রুত নির্বাচনই নয় বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনও আদায় করে নিতে কাজ করছে। ভারতও শুধু দ্রুত না বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ঘোরতর সমর্থক।
এছাড়া আমেরিকার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউও দ্রুত নির্বাচনের পাশাপাশি অংশগ্রহমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ দিচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে জাতিসংঘ তৎপরতা শুরু করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তারাও বাংলাদেশে দ্রুত একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার দেখার অধীর অপেক্ষায় আছে। পাশাপাশি তারা চায় সব দলের অংশগ্রহণ। গত ২০ জানুয়ারি ঢাকার গুলশানে জাতিসংঘ ভবনে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। ওই বৈঠকের সূত্র জানায়, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলটি স্পষ্টভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে তারা বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। এমন আভাসও মিলেছে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যে। ঢাকার গুলশানে জাতিসংঘ ভবনে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদরটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না জানতে চেয়েছেন। তবে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের এমন তাগিদের জবাবে জামায়াত নেতারা আসলে কি আশ্বস্ত করেছেন তা-স্পস্ট না হলেও বোঝা গেছে তারা এমন একটি পরিস্থিতিতে দেশের ভেতরের রাজনৈতিক ও বাইরের চাপে আছে। জামায়াত নেতার জবাবে সেটিই ফুটে উঠেছে। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘আমরা বলেছি, কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে আইনগত কোনো বিষয় নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিচ্ছি না। এটা পিপলস উইল ডিসাইড, সোসাইটি উইল ডিসাইড, সিচুয়েশন উইল ডিসাইড।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণের পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে পশ্চিমারা দেড় যুগেরও বেশি ধরে একাট্টা। তারাও বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের সাথে সব সময় এ দাবিতে কূটনৈতিক পরিসীমার মধ্যে থেকেই সোচ্চার ছিলেন। দফায় দফায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে কূটনৈতিক ভাষাতেই বোঝাতে চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণের পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক গুরুত্ব। তবে এর বিপরীতে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হউক বা না হউক তা নিয়ে আওয়ামী লীগের সময় ভারত নিজ দেশের স্বার্থে বাংলাদেশের জনগণের দাবিতে নিশ্চুপ একেবারেই ছিল। সেই ভারত এখন বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে সব ধরনের কলকাঠি নাড়াচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এঅঞ্চলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল তাদের কিন্তু কৌশলগত সামরিক মিত্র হচ্ছে ভারত। সামরিক জোট না করেও তারা সামরিক মিত্র। কারো কারো মতে, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে ভারতের এমন দাবি বা ভূমিকার পেছনে তার নিজস্ব রাজনৈতিক সামরিক স্বার্থও জড়িত। অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতিতে বর্তমানে আমেরিকা যদি এঅঞ্চলে ছড়ি ঘোরাতে চায় সেক্ষেত্রে ভারতকে তার পাশে রাখবেই। সেজন্য বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কতটা সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবে তা সময় বলে দেবে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেই ফেলেছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে সরকার এযাবৎকালের সেরা করার পরিকল্পনা করছে, যাতে এটি গণতন্ত্রের একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
এমএসএম / এমএসএম

জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে

প্রশাসনের কর্তৃত্ব না থাকায় ধর্ষণ বেড়ে যাচ্ছে : রিজভী

আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তিন মানুষ মা, স্ত্রী ও কন্যা

বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে

জাতীয় নির্বাচন আগে চাইঃ শরীফ উদ্দিন জুয়েল

আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না: সারজিস

‘পুরোনো সংবিধান ও শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়’

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়ন প্রাথমিক লক্ষ্য

দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করলেন নাহিদ ইসলাম, যা যা রয়েছে...

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ; আহ্বায়ক নাহিদ, সদস্য সচিব আখতার

‘লক্ষ্য ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া’
