ঈদের ছুটি শেষে ক্লাসে ফেরা হলো না তামান্নার, সড়কেই থেমে গেল জীবন
ঈদের ছুটি কাটিয়ে ক্লাসে ফেরার পথে প্রাণ হারালেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার (২৪)। শনিবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ৩টার দিকে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘোড়াঘাট উপজেলার নূরজাহানপুর এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী নাবিল পরিবহনের একটি বাস মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আমবোঝাই মিনি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার পর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা বালুবোঝাই আরেকটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজন মারা যান। আহত হন অন্তত ১৫ জন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তামান্না আক্তার।
পরিচয় শনাক্তের পর তাঁর পরিবারের কাছে খবর পৌঁছানো হয়। পরিবারের স্বপ্ন ছিল, তামান্না স্নাতক শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হবেন। হয়তো তিনিও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মনোযোগী ছিলেন। কিন্তু সব থেমে গেল কয়েক সেকেন্ডের দুর্ঘটনায়।
তামান্নার এক সহপাঠী জানান, "তামান্না খুবই প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল। ঈদের ছুটি শেষে ফিরে এসে গ্রুপ প্রেজেন্টেশনের কাজ করার কথা ছিল আমাদের। ভাবতেই পারছি না সে আর নেই।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান বাবর আহমেদ বলেন, "এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। বিষয়টি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, "দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ চালায়। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।"
তামান্নার মৃত্যু কেবল ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়—এটি দীর্ঘদিনের সড়ক অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে ৬ হাজার ৯২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২৯৪ জন নিহত এবং ১২ হাজার ১৯ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় প্রাণহানি বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা।
ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনায় বিআরটিএ, ডিটিসিএ, পুলিশ, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকলেও তাদের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নেই। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, জবাবদিহির অভাব ও কাঠামোগত সংকটের কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না।
২০১৮ সালে ঢাকায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু থেকে শুরু হয় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন। শিক্ষার্থীরা যানচলাচলে শৃঙ্খলা, চালকের লাইসেন্স যাচাই ও গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিত করার দাবি তুলেছিল। কিন্তু ছয় বছর পার হলেও অধিকাংশ দাবিই আজও বাস্তবায়িত হয়নি। নিরাপদ সড়ক এখনো স্লোগানেই সীমাবদ্ধ।
আজ তামান্না নেই। কাল হয়তো আমাদের কারও ভাই, বোন বা প্রিয়জন হারিয়ে যাবে এই অনিয়ন্ত্রিত সড়কে।
প্রশ্ন রয়ে যায়—আর কত তামান্নাদের হারালে আমরা জেগে উঠব?
এমএসএম / এমএসএম
জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী অবন্তির ভাবনা
জকসু নিয়ে কেন্দ্রীয় পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদপ্রার্থী ইমনের ভাবনা
ছাত্রদলের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল শিশুদের সাপ্তাহিক স্কুল উদ্বোধন
শেকৃবিতে নিয়োগে আওয়ামী পুনর্বাসন, এলাকাপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ
উত্তরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন
জকসুতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করবে সাংবাদিক সম্পদ
দীর্ঘ তিন যুগ পর জাবিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিল
জকসু নির্বাচন: ছাত্রশিবিরের ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা
জকসু নির্বাচন: ছাত্রদল সমর্থিত "ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান" প্যানেল ঘোষণা,
এইচএসসির খাতা পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ
বাকৃবিতে প্রিসিশন ব্রিডিং-ভিত্তিক দুগ্ধ উৎপাদন উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা
স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশই কোটা, অভিভাবকদের আপত্তি