ইবিতে বহিরাগতের বাইকে আহত শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগের মারামারি
ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ে বহিরাগত ও শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগত’র বেপরোয়া বাইকে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় বহিরাগতের স্ট্যাম্পের আঘাতে বিশ^বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভূক্তভোগী সূত্রে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী হাসিব এবং তার বন্ধুরা জিয়া মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় বহিরাগত রকি ও শান্ত বেপরোয়া গতিতে বাইকে চালিয়ে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় রকির বাইক হাসিবের হাতে লাগে। এতে আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাৎক্ষণাৎ রকিকে কয়েকবার বাইক থামাতে বলেন হাসিব। রকি একটু সামনে গিয়ে একটি দোকানের সামনে বাইক থামালে হাসিব সেখানে গিয়ে এভাবে বাইক চালানোর কারণ জানতে চান। এসময় রকি তার কথায় তোয়াক্কা না করে বলে ‘তো কী হয়েছে?’। এতে হাসিব ক্ষিপ্ত হয়ে রকিকে থাপ্পড় মারেন। পরে রকি দোকানের পিছন থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে হাসিবকে মারতে উদ্যত হন। এসময় হাসিব হাত দিয়ে আটকাতে গেলে তার হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসিবের বন্ধুরা মিলে রকিকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে রকি পাশের ড্রেনে পড়ে গিয়ে জখম হয়। এসময় সেখানে অবস্থানরত রকির সহযোগী অন্য বহিরাগত এবং হাসিবের বন্ধুদের মধ্যে স্ট্যাম্প ও লাঠিসোঁঠা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। হাসিব ও তার সহযোগীরা শাখা ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের কর্মী ও বহিরাগত রকি শাখা ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খানের শ্যালক বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে রকি ও হাসিবের পক্ষ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতারা মীমাংসার জন্য আসেন। এর কিছুক্ষণ পর আবারো হট্টগোল শুরু হয়। এসময় সেখানে প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ও সবাই ইফতারে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর শেখ রাসেল হল মোড়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায় কয়েকজন বহিরাগতকে। সেসময় সোহাগের কর্মীরা ক্রিকেট মাঠে অবস্থান করছিলেন।
হাসিবের দাবি, রকি আমাকে স্ট্যাম্প দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। আমি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে হাতে প্রচন্ড আঘাত পাই। পরে আমাকে বিশ^বিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়। এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসক হাত এক্স-রে করাতে বলেন। পরীক্ষা করার পর ডাক্তার একটি হাড় ভেঙ্গে গেছে বলে জানান। এদিকে এ ঘটনায় প্রক্টরের কাছে অভিযুক্ত বহিরাগতদের বিচারে দাবি জানিয়েছে ভূক্তভোগী হাসিব। এছাড়া ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অনিয়ন্ত্রিত বাইক চালানো ও তাদের দৌরাত্ম্য রোধ করার দাবি জানান তিনি।
বহিরাগত রকি বলেন, আমি ও আমার বন্ধুরা ইফতার কিনতে গিয়েছিলাম। বাইক থামানোর পর কিছু বলার আগেই হাসিব আমাকে থাপ্পড় মারে। এসময় আমি ও আমার বন্ধুদের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়। তারা আমাকে মারতে মারতে ড্রেনে ফেলে দেয়।
বিশ^বিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে দায়িত্বরত মিজান বলেন, সন্ধ্যার দিকে হাতে গুরুতর আঘাত পাওয়া একটি ছেলে মেডিকেলে আসছিলো। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়ায় এক্স-রে করার জন্য পাঠানো হয়।
এবিষয়ে প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযুক্ত বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এমএসএম / এমএসএম