ঢাকা সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

বাজেট প্রতিক্রিয়া


সাদিক হাসান পলাশ photo সাদিক হাসান পলাশ
প্রকাশিত: ১০-৬-২০২২ বিকাল ৭:৪

বাজেটে ধনী ও অর্থপাচারকারীদের জয় হয়েছে : সিপিডি

‘২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ধনী ও অর্থপাচারকারীদের জয় হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে যাদের টাকা-পয়সা আছে, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী, যারা টাকা পাচার করে; এই শ্রেণির জয় হয়েছে। গরিবের জন্য বাজেটে তেমন কিছু নেই। সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হয়েছে মধ্যবিত্ত।

‘সরকার ধরেই নিয়েছে করোনা চলে গেছে। করোনার সামগ্রীর ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। কোনো কারণে করোনা মহামারি আবার ফিরে এলে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা করবে।’ এই মুহূর্তে ল্যাপটপের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩, সিপিডির পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তৌফিকুল ইসলাম খান।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ সময় বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বাজেটে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চাল, ডালসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দরকার ছিল, কিন্তু করা হয়নি। সিপিডির পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটিও রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আগামী এক বছরে মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমবে? কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় চলে যাবে। তাহলে কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমবে, এটাই বড় প্রশ্ন।

‘বর্তমানে জনজীবনের ওপর চাপ রয়েছে। বাজেটে প্রত্যাশা ছিল নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হবে, কিন্তু দেওয়া হয়নি। উল্টো বিত্তবানদের কর কমানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট যে লক্ষ্য নিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে তা পূরণে নেওয়া পদক্ষেপগুলো পরিপূর্ণ নয়। নীতিকৌশলের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ অসম্পূর্ণ এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তা অপর্যাপ্ত।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনীতির নানা চাপ রয়েছে। চাপ মোকাবিলায় ছয়টি লক্ষ্যের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থায়নের সংস্থান, বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার নিশ্চিত করা, টাকার বিনিময় মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং রিজার্ভ সন্তোষজনক রাখা।

‘আমরা দেখেছি বাজেটে মূল্যস্ফীতি কথাটি অনেকবার এলেও এটি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। কর কাঠামোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাবনা যথেষ্ট নয়। অনেক পণ্যেই কর রয়ে গেছে। বাজেটে গম ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যে করছাড় নেই। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা হয়নি, ভর্তুকি ও সামাজিক সুরক্ষার আওতা ওই অর্থে বাড়েনি।’

ড. ফাহমিদা বলেন, বিদেশ থেকে অর্থ আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক। আর একটি বিষয় হচ্ছে, এটা কখনই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তারচেয়ে বড় কথা হলো, এটা অনৈতিক। একদিকে অর্থপাচারের সুযোগ দিয়ে আবার অর্থ ফিরিয়ে আনার সুযোগ করে দেব; অন্যদিকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য করছাড় থাকবে না এটা সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।


তামাকপণ্যের ব্যবহার বাড়বে : প্রজ্ঞা- আত্মা
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কম দামি সিগারেটের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে এবং তামাকবিরোধীদের দীর্ঘদিনের দাবি সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রচলনে কোনো নির্দেশনা নেই।

‘প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকপণ্যের ব্যবহার বাড়বে। একইসঙ্গে বাড়বে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয়। বাড়তি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছে তামাকবিরোধী সংগঠন ‘প্রগতির জন্য জ্ঞান-প্রজ্ঞা’ ও ‘অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা’।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠন দুটি বলেছে, জাতীয় বাজেট প্রণয়নে তামাকবিরোধীদের কোনো দাবি আমলে নেয়া হয়নি এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য মাত্র এক টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এ স্তরে সিগারেটের দাম বাড়বে মাত্র ২.৫৬ শতাংশ, যা ১০ শতাংশ মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় খুবই সামান্য। ফলে এ স্তরের সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমবে এবং তরুণ ও নিম্ন আয়ের জনগণের মধ্যে কম দামি সিগারেটের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে।

এতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশই নিম্ন স্তরের দখলে, যার প্রধান ভোক্তা মূলত দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী। অন্যদিকে সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে কেবল খুচরা মূল্য এক টাকা বাড়ানোর কারণে বর্ধিত মূল্যের একটা অংশ কোম্পানির পকেটে চলে যাবে।

সংগঠন দুটি বলছে, বাজেটে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিড়ি, জর্দা ও গুলের দাম এবং কর হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এটা হতাশাজনক।

প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে কম দামি সিগারেটের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে এবং তামাকবিরোধীদের দীর্ঘদিনের দাবি সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রচলনের কোনো নির্দেশনা নেই। চূড়ান্ত বাজেটে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’


বাজেট কল্যাণমূলক :  এফবিসিসিআই
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে কল্যাণমূলক বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। কর্পোরেট করে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্তকে খুবই ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠন থেকে বাজেটোত্তর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, এই বাজেটের সবচেয়ে ভালো দিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। এটি সবাইকে আশান্বিত করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
রাজধানীর মতিঝিলে সংগঠনের পক্ষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটটি এমন এক সময়ে পেশ করা হয়েছে যখন করোনার বিশ্বব্যাপী সমস্যাগুলো রয়ে গেছে। এখন আবার এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এর মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতি সমন্বয় করে অর্থমন্ত্রী যে বিশাল সামাজিক সুরক্ষামূলক বাজেট দিয়েছেন সেটি নিঃসন্দেহে কল্যাণমূলক বাজেট হয়েছে।’
এফবিসিসিআই সভাপতির দাবি, এই বাজেটটি করার সময় অর্থমন্ত্রীকে অনেক চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সেই পরিস্থিতিতে তিনি যেভাবে সামাজিক সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ মনোনিবেশ করেছেন সেটিই বাজেটের সবচেয়ে ভালো দিক; যা আমাদের আশান্বিত করেছে। তবে ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি নিতে গিয়ে যাতে এই ব্যবস্থার ওপর কোনো চাপ তৈরি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যাংক ব্যবস্থায় জোর না দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেওয়াটাই অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ পরিস্থিতির জন্য সুখকর হবে।
উৎস করহার শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে এক শতাংশ করায় রফতানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বাজেট পাশের আগে প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় এ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’


মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ : বিসিআই
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার এই বাজেট আশাব্যঞ্জক হলেও সুশাসন, যথাযথ মনিটরিং, দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও যথাযথ পরিকল্পনা নিশ্চিত করা না গেলে বাস্তবায়নে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বর্তমান সংকটময় বিশ্ব অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক শিল্পের ন্যায় সব ধরনের রফতানিমুখী কোম্পানির করহারও ১২ শতাংশ করা হয়েছে যা বিসিআই’র দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিফলন। তবে রফতানির ক্ষেত্রে উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে যা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে রফতানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ পুনর্বহাল করার প্রস্তাব করছি। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্রদানকে আমরা স্বাগত জানাই। প্রয়োজনে ডলারের মূল্য পুননির্ধারণ করে প্রবাসী আয়কে আরও উৎসাহিত করা জরুরি।

বিসিআই মনে করে- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫.৬ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা উল্লেখ করা হলেও তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা জোরদার করা এবং বাজেটে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা দরে চাল সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। আমরা এই চালের দর পূর্বের ন্যায় ১০ টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

বিসিআই মূলত তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মাইক্রো ও স্মল শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার নিয়ে কাজ করে চলেছে। বিসিআই মনে করে মাইক্রো ও স্মল শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি, সব ধরনের ইউটিলিটির উপর মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছে। স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের টার্নওভার করহার শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করায় আমরা স্বাগত জানাই। তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য বাজেটে বিশেষ তহবিল গঠন করে তহবিল বিতরণের জন্য সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করছি।

প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২.৫% কমানো হয়েছে যা বিসিআই স্বাগত জানায় তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্তারোপ করা হয়েছে যা বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী কর বৎসরের ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি। কর ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, দ্রুত, আধুনিক, যুগোপযোগী হয়রানিমুক্ত এবং সকলকে কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কর ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরুপে ডিজিটাল করে কর অ্যাসেসমেন্ট সিসটেম ফ্রেন্ডলি করার প্রস্তাব করছি।

প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্পে কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৭% থেকে কমিয়ে ৪% এবং পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৭% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে। অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও অগ্রিম কর (এটি) বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করছি।

করোনাভাইরাস টেস্টিং কিট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন করার কাঁচামাল আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ককর মওকুফের সুবিধা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে যা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেন (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী।


বাজেটে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ : ডিসিসিআই
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সংগঠনটি বলেছে, প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন প্রভৃতি বিষয়গুলো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করজাল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা, কর কাঠামোর অটোমেশন, যৌক্তিক রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও সরকারি ব্যয়ে সামঞ্জ্যসতা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও বাজেটে আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত বাজেটে আয়-ব্যয়ের ঘাটতি স্থানীয় ব্যাংকিং ও অন্যান্য বৈদেশিক খাত হতে অর্থ সংস্থানের নির্ভরতা তৈরি করতে পারে। ঢাকা চেম্বার মনে করে, বাজেটের আকার বাড়ানোর চাইতে পরিকল্পিত, সময়োপযোগী, ব্যয় কার্যক্রমে দক্ষতা অর্জন এবং বাস্তবায়ন-যোগ্য বাজেট প্রণয়ন একান্ত অপরিহার্য।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের পর গণমাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাঠিয়েছে ডিসিসিআই।

প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, করপোরেট কর হ্রাসের ক্ষেত্রে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০%- এর বেশি আইপিও’র মাধ্যমে বাজারে ছাড়া এবং লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে বার্ষিক সর্বমোট ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ ব্যয় ও বিনিয়োগ ছাড়া সব ধরনের লেনদেন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন না করলে, লিস্টেড কোম্পানির ২৫% হারে কর আরোপের প্রস্তাব পুনঃবিবেচনা করা প্রয়োজন। স্থানীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও বেশি হারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পর্যায়ক্রমে বিদ্যমান করপোরেট কর হ্রাস করা প্রয়োজন বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার।

বেসরকারি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর নতুন করে করের বোঝা আর  না বাড়িয়ে, করজাল বৃদ্ধির জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে অন্যান্য জেলাগুলোতে আয়কর দাতার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করা প্রয়োজন। ব্যক্তি শ্রেণির আয় করে ন্যূনতম সীমা অপরিবর্তিত না রেখে তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

পণ্য জব্দ করার ক্ষমতা ধারা ৮৩, ৮৪ এবং ১০০ নম্বর ধারাগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে করে হয়রানিমুক্ত ভ্যাট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়। প্রস্তাবিত বাজেটে পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল সাপ্লাইয়ে উৎসে কর ৪%-এ নামিয়ে আনার উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়, তবে উৎসে করের হার সব রফতানিকারকদের জন্য সমানভাবে নির্ধারণ করা একান্ত আবশ্যক, এর ফলে তৈরি পোশাক খাতের সঙ্গে সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতের বৈষম্য হ্রাস পাবে।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ও পরিচালন ব্যয় দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাজস্ব সংগ্রহ কাক্সিক্ষত হারে বৃদ্ধি না পেলে সরকারের ব্যাংক নির্ভরতা আর্থিক খাতকে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে। এমন বাস্তবতায় আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য খাতে যেমন- সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ এবং সুদের হারের মধ্যে ভারসাম্য রাখার আহ্বান জানাচ্ছে ডিসিসিআই।

ঢাকা চেম্বার মনে করে, বাজেটে বেসরকারি খাত হতে ২৪.৯% বিনিয়োগ প্রাপ্তির প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নের গতি আশাব্যঞ্জক নয়।

বাজেটে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনার অভাব রয়েছে : সানেম
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জগুলোকে স্বীকার করা হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। তবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ জরুরি, সেখানে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনার অভাব বিদ্যমান। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) পক্ষ থেকে এসব কথা জানানো হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রতিক্রিয়ায় সানেম জানায়, বাজেটে বেশকিছু প্রশংসনীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ উল্লিখিত আছে। যেগুলো আমরা বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বা অন্যান্য সরকারি পরিকল্পনায়ও দেখেছি। কিন্তু তার বাস্তবায়নের জন্য সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার অভাব যথারীতি এই বাজেটেও বিরাজমান। যেমন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা কারিগরি শিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে, বাস্তবায়নের রূপরেখার অভাব বাজেটে পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়নে যে সক্ষমতার অভাব বিদ্যমান, তার সমাধানকল্পে দিকনির্দেশনার অভাব বাজেটে পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষত, শিক্ষার ক্ষেত্রে, অতিমারি পরবর্তী শিখন ক্ষতি মোকাবিলায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে। সম্পূরক বাজেটের পর্যালোচনায় প্রতীয়মান যে বাজেট বাস্তবায়নের জায়গায় যে সক্ষমতার অভাব আমাদের দীর্ঘকালীন একটি সমস্যা, সেখানে আমরা এখনো আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি।

সানেম আরও জানিয়েছেন, বিনিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো, যেমন পিপিপি সংক্রান্ত আলোচনা বাজেটে যথাযথভাবে উঠে আসেনি, বরং গতানুগতিকভাবে বিবৃত হয়েছে।

বাজেটে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় দেওয়া পদক্ষেপগুলোর অধিকাংশই বাস্তবে প্রশ্নসাপেক্ষ অবস্থায় উল্লেখ্য করে সানেম বলছে, যেমন টিসিবির মাধ্যমে বা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছানোর যে উদ্যোগ, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলেই মনে হয়েছে। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলো বিদ্যমান, তার আলোচনার অভাব রয়েছে বাজেট ডকুমেন্টে। আগামী বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা উচ্চাভিলাষী বলে মনে হয়েছে। অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধারের যে দাবি বাজেটে করা হয়েছে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। বিশেষত, সামাজিক পুনরুদ্ধারের গতি দুর্বল, যা বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। এমনকি দারিদ্র্য হারেরও হাল-নাগাদ করা তথ্যের অভাব বিদ্যমান রয়েছে বাজেটে। পাশাপাশি, বর্তমান প্রেক্ষাপট অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধারকে কীভাবে প্রভাবিত করছে সেই সংক্রান্ত আলোচনার অভাব বাজেটে লক্ষণীয়। বাজেটে উল্লেখিত ছয়টি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়ের তালিকায় দারিদ্র্য এবং কর্মসংস্থান সংক্রান্ত আলোচনার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।


কালো টাকা সাদা করার সুযোগ চরম বৈষম্যমূলক : এমসিসিআই
ঘোষিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার (পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা) প্রস্তাবের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মেট্রোপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড এসোসিয়েশন (এমসিসিআই)। সংগঠনটি বলেছে, একটি নির্দিষ্ট কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ চরম বৈষম্যমূলক। এতে সৎ করদাতারা কর পরিশোধে নিরুৎসাহিত হন। এই ধরনের সুযোগ আমাদের আর্থিক ও অ্যাকাউন্টিং চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাছাড়া অতীতে এই ধরনের সুযোগ দিয়ে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায়নি।

ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয় সীমা ২ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে এমসিসিআই। বর্তমানে করমুক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকা, যা ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে কার্যকর আছে। এটিকে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে এমসিসিআই।

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এই প্রস্তাব করেছে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই বাজেট সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেছে।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এমসিসিআই। এ বিষয়ে সংগঠনটি বলেছে, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু একইসাথে বেড়েছে পণ্যমূল্যসহ সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি। তাই এর সাথে সঙ্গতি রেখে করমুক্ত আয়সীমা সমন্বয় করা প্রয়োজন।
এমসিসিআই কর প্রত্যার্পণের এর জন্য প্রতীকী হলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে একটি আলাদা তহবিল রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এ ফোরাম টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে তারা বলেছে, টার্নওভার ট্যাক্স আয়করের মূলনীতির পরিপন্থী। আয়কর নীতি অনুসারে, কোনো প্রতিষ্ঠান মুনাফা বা আয় করলেই কেবল তা থেকে আয়কর আদায় করা যায়; কোম্পানির রাজস্ব বা কোনো তহবিল থেকে নয়।

এমসিসিআই তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হার হ্রাস, রপ্তানীমুখী সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য করপোরেট করের অভিন্ন হার (১২%) নির্ধারণ, মূল্যসংযোজন করের (ভ্যাট) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধনের সুবিধাসহ বেশকিছু প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করেছে।

এমসিসিআই সভাপতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জাতীয় বাজেটের বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়নের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু বিশেষ সময়ের জন্য নয়, সব সময়ের জন্যেই এটি অনুসরণ করা উচিত।

এমসিসিআই মনে করেন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থায় বাংলাদেশ রপ্তানিক্ষেত্রে একটি হাওয়ারহাউজ হিসেবে উঠে আসতে পারে। তার জন্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ, অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সুবিধা বাড়ানো, সাশ্রয়ী তহবিল যোগান ইত্যাদি  উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।


বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার কিছু নেই : পিআরআই
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার কিছু বলা নেই।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে সে বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এ সব কথা বলেন।
বাজেটে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ, কিন্তু বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা গতবারের চেয়ে কম; তাহলে কীভাবে তা অর্জন করা সম্ভব- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

‘আমরা যখন ডিমান্ড কমাব, তখন প্রবৃদ্ধি অবশ্যই কিছুটা স্যাকরিফাইস করতে হবে। সরকার বলছে, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ শতাংশ করা হয়েছিল, সেখান থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আমি মনে করি, সাড়ে ৭ অর্জন করা সম্ভব হবে না।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি যেভাবে যাচ্ছে বা বেশিরভাগ দেশই মন্দার দিতে চলে গেছে। নেগেটিভ না হলেও তারা খুব স্বল্প প্রবৃদ্ধিতে, অর্থাৎ এক, দেড় বা দুই পার্সেন্টে আছে। সেখানে বাংলাদেশে সাড়ে ৭ পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি হবে, এটা আমি মনে করি সঙ্গত নয়।

মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনা। সেটাও কিন্তু স্পষ্ট নয়। এখানে মনিটরিং পলিসি (মুদ্রানীতি) কীভাবে ব্যবহার করবে সরকার, এটাও বাজেটের বলা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার যে এক্সচেঞ্জ রেটকে কীভাবে সাপোর্ট দিবে, মূলস্ফীতি কীভাবে কমিয়ে আনবে, সেগুলো একেবারেই সুস্পষ্ট করা হয় নাই। এই কারণে এই বাজেটের ম্যাক্রো অবজেক্টিভগুলো নিয়ে আমাদের অনেক সন্দেহ আছে।

তিনি বলেন, ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। অনিশ্চয়তা অনেক জায়গাতেই আছে, যেমন- সাবসিডিতে অনিশ্চয়তা আছে। তা ধরা হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। আড়াইটা পদ্মা সেতুর পরিমাণ অর্থ আমরা সাবসিডিতে দিচ্ছি। তারপরেও এটা বেড়ে যেতে পারে।

কারণ এটা বৈশ্বিক মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। সরকার কখন দাম বাড়াবে সেটার ওপরও নির্ভর করবে। অর্থমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, আরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বা আরও বেশি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আহসান এই মনসুর বলেন, তবে বাজেটে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের কিছু ব্যয় আছে যেগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। যেমন- বেতন-ভাতা, পেনশন, প্রিন্সিপাল পেমেন্ট ইত্যাদি পরিশোধ করতেই হবে। সবমিলিয়ে বাজেটে কিন্তু খুব একটা সুযোগ থাকে না বড় কিছু করার।

এ বছর বিশেষ অর্থনৈতিক কারণে আরও সংকুচিত হয়েছে আসছে। কারণ এ বছর বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি হবে, আগামী বছরেও হবে।

তিনি বলেন, এতে সরকারকে সেভাবে সংযত হতে হয়েছে। এডিপির সাইজটাও সেরকমভাবে বাড়ে নাই। হয়তো জিডিপির তুলনায় কমেছে এবং বড় কোনো প্রকল্প হাত দেয়া হয় নাই এবং হয় নাই, সেটাই কাম্য।

সাদিক পলাশ / সাদিক পলাশ

সরকারের অগ্রগতি অন্তর্দৃষ্টিতে দেখার পরামর্শ অর্থ উপদেষ্টার

৭ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল অর্থনীতি খাতে অবস্থান দৃঢ় করতে চায় বাংলাদেশ

১০ লাখ টাকার বেশি আমানত ও সঞ্চয়পত্রে রিটার্ন বাধ্যতামূলক

১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো

যুক্তরাষ্ট্রের তুলায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কিছুটা শুল্ক ছাড় পাবে বাংলাদেশ

‘সবজিই যদি এত দামে কিনে খেতে হয় তাহলে মাছ-মাংস কিনবো কিভাবে’

ব্র্যাক ব্যাংকের এএমডি হলেন মাসুদ রানা

শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ: বাণিজ্য সচিব

বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনবে সরকার : বাণিজ্য সচিব

মাথায় হাত বুলিয়ে, ধমক দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

বাজারে সবজির দাম নাগালের বাইরে, বৃষ্টি হলে আরও বাড়তে পারে দাম

৬০ থেকে ৮০ টাকার ঘরে সব সবজি

কর্মীদের পোশাক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা প্রত্যাহার