করোনার সুফল, ২৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয়!

বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সরকারের সাশ্রয় হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এই টাকা বরাদ্দ ছিল সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের খরচ মেটানোর জন্য। কিন্তু গত বছরের শুরুতে মহামারির জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ায় মিটিং, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মতো বৈশ্বিক ইভেন্টগুলো স্থগিত হয়ে যায়। ফলে এ বাবদ বরাদ্দ টাকা আর খরচ হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের খরচ মেটানোর জন্য সরকার দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। করোনার কারণে বিদেশ ভ্রমণ সীমিত থাকায় খরচ হয়েছে মাত্র ২০০ কোটি টাকা। বাকি দুই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়নি।এর আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরেও একই কারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ করা সম্ভব হয়নি। দুই অর্থবছর মিলিয়ে সরকারের প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
জানা গেছে, রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট থেকে বিদেশ ভ্রমণের খরচ বরাদ্দ হয়ে থাকে। কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের ঝোঁক অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকার দরুন প্রতি বছর এই খরচ বেড়েই চলেছিল। কিন্তু মহামারি এটাকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে। গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোডিভ রোগী শনাক্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ বাতিলের পাশাপাশি সব রুটিন ট্যুর বাতিলের অনুরোধ জানায়। এতে বলা হয়, কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজন ও অনিবার্য পরিস্থিতিতে এই অর্থ খরচ করা যাবে।
মহামারির কারণে মিতব্যায়িতার আরেকটি উদ্যোগের অংশ হিসেবে একই দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেকটি পরিপত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গাড়ি কেনার জন্য বরাদ্দ খরচ ৫০ শতাংশে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পের কর্মকর্তার প্রতি বছর নানা প্রশিক্ষণ, মিটিং ও সেমিনারে অংশ নেওয়ার জন্য বিদেশে যান। বিদেশ ভ্রমণের ব্যাপারে মন্ত্রীদেরও ঝোঁক দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের যুক্ত করে থাকে। প্রকল্পের জন্য যাদের আসলে কিছুই করার থাকে না।
সরকারি কর্মকর্তাদের এমন ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। দেখা যায়, জনগণের পয়সায় এমন অনেক ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো ফলাফল আসে না। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন ঘন ঘন বিদেশযাত্রার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। করোনাভাইরাস মহামারি গত বছরের পুরো সময় জুড়ে এই ধরনের ভ্রমণ খরচের লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছিল। গত বছরের জানুয়ারিতেই সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের মাত্রা কমে আসতে থাকে। মার্চে দেশে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তা কার্যত বন্ধই হয়ে যায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, দু-একজন মন্ত্রী বাদে এ সময়ের মধ্যে এই খাতে আর কারও তেমন কোনো খরচই হয়নি।’ ওই কর্মকর্তা জানান, গত বছরের মার্চ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোনো ফাইল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করেনি। সাধারণত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের ফাইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সই করেন। এই পদমর্যাদার ওপরের কারও ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর সই দরকার হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, গত অক্টোবরে ভারত মেডিক্যাল ভিসা দেওয়া শুরু করার পর ব্যক্তিগত খরচে দেশটিতে চিকিৎসার জন্য সরকারি ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা কয়েকটি ফাইল অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি জানান, কেবল সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের একটি ফাইল ছাড়া বিদেশ ভ্রমণের আর কোনো ফাইলে তাকে সই করতে হয়নি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি নিজে চিকিৎসার জন্য তিন বার দেশের বাইরে গিয়েছিলাম। কিন্তু এর সব খরচ আমি নিজেই বহন করেছি।’
এ সময়ের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও দু-একবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার অতিরিক্ত খরচের জন্য কর্মকর্তারা এখন আর বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আগ্রহী হচ্ছেন না। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যদিও এলডিসি থেকে উত্তরণের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরে কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের সম্ভাবনা আছে। তিনি মনে করেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দেশের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে। যাতে করে তারা সেখানকার ভালো চর্চাগুলোর বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারে।
নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। তবে এই টাকা খরচের ক্ষেত্রে ১ জুলাই একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এতে বলা হয়, শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ছাড়া ভ্রমণ ব্যয় খাতে বরাদ্দের টাকা খরচ করা যাবে না। সরকারি ভ্রমণের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ বরাদ্দ স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া সকল প্রকার রুটিন ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতসমূহে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রীতি / প্রীতি

পূবালী ব্যাংকে শেখ হাসিনার লকার জব্দ

বরবটি-করলার সেঞ্চুরি, কাঁচা মরিচের ডাবল সেঞ্চুরি

ব্রয়লার ১৬৫, ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম চড়া

৩০ বছর পর মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে সাংহাই-সিঙ্গাপুরের মতো দেখতে চাই

এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩ টাকা

সবজির পর দাম বেড়েছে মুদি পণ্যের, চড়বে আলুর বাজারও

চট্টগ্রাম বন্দরে জট কমাতে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ১০০০ কনটেইনার বিক্রি

ডিজিটাইজেশন না হওয়ায় সময়ের কাজ সময়ে হয় না: এনবিআর চেয়াম্যান

ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন: এনবিআর চেয়ারম্যান

শাহজালালে নারী যাত্রীর লাগেজ থেকে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন জব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়বে ৪১ শতাংশ, বৈঠকে বসছে নৌ মন্ত্রণালয়

ইলিশের দেখা মিললেও দামে হাত পোড়ার জোগাড়
