রূপচর্চা ব্যবসায় সফল অপরাজিতা নিসা

পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা শুরু, লেখাপড়া শেষ করে সেই ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে নেওয়া নতুন কিছু নয়। যারা আগে শুরু করেন, তারা একটু এগিয়ে থাকেন। যেমন রূপচর্চা ও ফ্যাশন ব্যবসায় সমসাময়িক ব্যবসায়ীদের থেকে একটু এগিয়ে আছেন বিউটি স্টেশন এর কর্ণধার- অপরাজিতা নিসা।
বিউটি পার্লারের সাথে তার সম্পর্ক ১৯৯৮ সাল থেকে। তার মায়ের একটি পার্লার ছিল। সেখানে বিউটি পার্লারের কাজ দেখে, বিউটি পার্লারের মেয়েদের দেখে ভালো লাগতো। আর এই ভালো লাগা থেকেই বিউটি পার্লার গড়ে তোলার আগ্রহ জন্মে তার। ২০০৯ সালে তিনি শান্ত মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে পড়ার সময় প্রতিষ্ঠা করেন বিউটি পার্লারের ব্যবসা, নাম দেন বিউটি স্টেশন। বর্তমানে মোট ৩টি শাখা বিউটি স্টেশন এর। ২ টি ঢাকায়, ১টি নরসিংদীতে। ঢাকার মধ্যে পুরান ঢাকা ও উত্তরায় রয়েছে বিউটি স্টেশন।
নিজের ব্যবসা শুরু করার বিষয়ে তিনি বলেন- আমার মায়ের বিউটি পার্লারে যে মেয়েরা কাজ করতো, তাদের দেখেই আমার কাজ শেখা। যখন মনে হলো আমি পার্লারের ব্যবসা করব, তখন দেশের বাইরে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি রূপচর্চার উপর। ফ্যাশন ডিজাইনের উপর পড়াশোনা করেছি। ফ্যাশনের সাথে রূপচর্চার একটি সম্পর্ক আছে। সুন্দর থাকার জন্য মানুষ যেমন নানান রঙ ও নকশার জামা পরে, তেমনি রূপচর্চাও করে। রূপচর্চা বিষয়ে কাজ করার আগ্রহ থাকার পরেও ফ্যাশন ডিজাইন এর উপর পড়াশোনা করেছি দুটো বিষয় ভালো করে বোঝার জন্য।
অপরাজিতা নিসা পার্লারে গ্রাহকদের রূপচর্চা বিষয়ে সেবা দেন। আবার পোশাকের নকশা করেন। এক সাথে দুটো পেশায় কাজ করার সুবিধা পেয়েছেন করোনাকালীন। যখন বিউটি পার্লারের ব্যবসায় চরম মন্দাভাব গিয়েছেন, তখন তার ফ্যাশন ডিজাইন এর পেশা তাকে টিকিয়ে রেখেছে। গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক নকশা করার কারণে তার নকশা করা পোশাকের গ্রাহক নির্দিষ্ট। ব্যবসায় এর সুবিধা হচ্ছে তারা সারা বছর বা বহু বছর ধরে তার কাছ থেকে পোশাক নকশা করে নেয়। করোনাকালীন অনলাইনে লাইভ করে সারাদেশে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি গ্রাহক ‘ডেটাবেজ’। বর্তমানে সেসব তার কাছ থেকে নিয়মিত নিচ্ছে রূপচর্চা বিষয়ে সেবা ও নকশা করা পোশাক।
লেখাপড়ার পাশাপাশি যারা ব্যবসা শুরু করতে চান, তাদের জন্য অপরাজিতা নিসা বলেন- ‘ব্যবসা মানেই হচ্ছে চেষ্টা করে যাওয়া। চাকরি করে মাস শেষে একটি বেতন পাওয়া যায়, সেটি যে পরিমানই হোক। ব্যবসা হচ্ছে এই পরিমান অর্থ আয় করে, প্রতিষ্ঠানের খরচ ও কর্মীদের বেতন শোধ করে, তারপর নিজে টাকা পাওয়া। এখানে পরিশ্রম অনেক বেশি করতে হবে। ব্যবসা সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্যেও পরিশ্রম করতে হবে। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন- ‘যখন প্রথম ব্যবসা শুরু করি, তখন এক ধরনের পরিশ্রম ছিল। তখন চেষ্টা থাকত, যে পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছি, সে অর্থ কিভাবে ঘরে ফেরানো যাবে। এখন পরিশ্রম করছি- সেবার মান ধরে রাখার জন্য, ব্যবসা আরও বড় পরিসরে নেওয়ার জন্য।
বর্তমানে যারা ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী, তাদের একটি বিষয় গুরুত্বেও সাথে বিবেচনার পরামর্শ নিসার- ‘এখন প্রতিযোগিতাবেড়েছে। দেশে এবং প্রতিটি এলাকায় বিউটি পার্লারের সংখ্যা বেড়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য সুখবর হলো- গ্রাহকের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন সব বয়সী নারী ও প্রায় সব পেশার নারী বিউটি পার্লার এর সেবা গ্রহণ করেন। বেশি সেবা গ্রহণ করেন কর্মজীবী নারী। তাই যেসব এলাকায় কর্মজীবী নারী বেশি, সেসব এলাকায় নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ব্যবসা শুরু করলেই কি ব্যবসায় লাভবান বা সফল হওয়া যাবে? উত্তরে তিনি বলেন- ‘ব্যবসায় সফলতার শেষ নেই। আজকের দিনে আমার মনে হয় আমি ব্যবসায় সফল। যতটুকু এগিয়েছি তা চেষ্টার কারণে সম্ভব হয়েছে। এখনও চেষ্টা করছি গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা দেওয়ার জন্য।
অনেকে স্বল্পমেয়াদী একটি কর্মশালা বা প্রশিক্ষণ নিয়ে বিউটি পার্লার এর ব্যবসা শুরু করতে চান। নিজের ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে নিসা বলেন-‘বিউটি কোর্স করে রূপচর্চার এ টু জেট শেখা সম্ভব হয় না। এখানে হয়তো একটি ধারণা পাওয়া যায়। বাইরে থেকে একটি কোর্স করে এসেই বাংলাদেশে একটি পার্লার হয়তো আপনি শুরু করে দিতে পারবেন। তবে পার্লারের ব্যবসায় সফলতা পাওয়ার জন্য ডিটেইল কাজ শেখা জরুরি।
রূপচর্চার নিখুঁত জ্ঞান ছাড়াও এখানে গ্রাহক সেবা ও সন্তুষ্টির বিষয় আছে। বিনিয়োগের বিষয় আছে। বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয় আছে। ব্যবসায় লাভ হতে পারে, লোকশান হতে পারে। গ্রাহক ধরে রাখার বিষয় আছে। মাসের লাভ ক্ষতির হিসেব আছে। প্রথম থেকেই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব নাও হতে পারে। ব্যবসায় লোকসান হলে তা মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। পার্লার ব্যবসার মূল শক্তি হচ্ছে ভালোভাবে পরিচালনা করা। সুন্দরভাবে গ্রাহকদের সেবা দেওয়া। গ্রাহক ধরে রাখার বিষয়ে যিনি যত দক্ষ হবেন, যারা যত ভালো মানের সেবা দিতে পারবেন তারা পার্লার ব্যবসা ভালো করতে পারবেন। ব্যবসার এসব খুঁটিনাটি দিক বিবেচনা করেই বিউটি পার্লার এর ব্যবসা শুরু করা উচিত। এরপর আপনি কোন এলাকায় ব্যবসা শুরু করতে চান, সে এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা, চাহিদা,রুচি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে বিউটি পার্লার এর ডেকোরেশন করতে হবে। যাতে গ্রাহকরা বিউটি পার্লারের পরিবেশটিকে তার নিজের পরিবেশ মনে করে।
এমএসএম / এমএসএম

মুখে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে দাঁতের ক্ষয়, বাঁচতে যা করবেন

ক্যান্সার দূরে রাখার ৬ উপায়

দাম্পত্যে ব্যক্তিগত সম্মান কতটা জরুরি?

সকালে যে ৫ পানীয় বেশি উপকারী

ঘুমের সময় মস্তিষ্ক কী কী কাজ করে

দুধ-জুসে কি শিশুর দাঁতে ক্যাভিটি হয়?

সন্তানের হাতের লেখা ভালো করার কৌশল

বয়স ৫০ পেরিয়েও সুস্থ থাকার ৫ উপায়

পুড়ে গেলে কেন বরফ দিতে নিষেধ করেন বিশেষজ্ঞরা

ঢাকাবাসীকে নতুন স্বাদের সব কেবাব দিচ্ছে কেবাব এক্সপ্রেস মোহাম্মাদপুর

রোদে পোড়া ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে যা করবেন

পুরুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাঁচা হলুদের যাদুকরী উপকারিতা
