ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

জিএইচ গ্রুপ এর নামে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ


জাহিদুল ইসলাম শিশির photo জাহিদুল ইসলাম শিশির
প্রকাশিত: ৪-১-২০২৩ রাত ৮:৫২

পুরানা ঢাকায় গ্রুপ অব কোম্পানীর সাঈন বোর্ড টানিয়ে দেশের চাকুরি প্রার্থিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে শত কোটি টাকা। এমন অভিযোগের অনুসন্ধ্যানে  নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্র মতে, জিএইচ গ্রুপ এর নামে ধারাবাহিক অভিযোগ আসতে থাকায় তদন্ত শুরু করেছে তারা।  

জানা যায়,  ঘরে বসে অনলাইনে আয় করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখানো এ কোম্পানীটি বিশ্বস্ততা অর্জনে মা ছেলে এক সাথে  খুলে বসেছে এ প্রতারণার বাণিজ্য। মা ছেলের যৌথ প্রতারণা সর্বস্ব হারানো বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ এসেছে আমাদের হাতে। সে অভিযোগ ও গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা যায়, প্রতারণার এ বাণিজ্যের মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে পুরানা ঢাকার  লাইজু বেগম ও তার ছেলে  মঞ্জুরুল হাসান সাদী। চায়নায় লেখা পড়া করা  সাদী একজন আইটি এক্সপার্ট। প্রতারণায় ব্যবহার করা হচ্ছে সাদীর তৈরি নিত্যনতুন ‘ফিন্যান্স অ্যাপস’। ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসআপ ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছে এ প্রতারণা। পুরনো ঢাকা ৪৫/১ কেবি রোড, গেন্ডারিয়ার আফসারউদ্দিনের পুত্র এই সাদী। তার প্রতারণার সহযোগী হচ্ছেন, মা নাহিদ আফসার ওরফে লাইজু বেগম।  ভাই কামরুল হাসান ফারহাবি, বোন সাবাহ সাদী, মিথিল। অনলাইনে মাসে লাখ লাখ টাকার স্বপ্ন দেকিয়ে এবং সে ব্যবসা পরিচালনার সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত লাভের নিশ্চয়তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বেকার  যুবক যুবতিদের কাছে থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অর্থ। যারা কম সাহসী তাদেরকে জামানতের বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে চাকুরির নিশ্চয়তা। বলা হচ্ছে জামানত দিলে তার কোম্পানীতে কাজের মাধ্যমে মাসে লাখ টাকা কাজের সুযোগ দিচ্ছেন তিনি। চাকরির বিপরীতে জিএইচ গ্রুপ গ্রাহকের কাছ থেকে জামানত হিসেবে নিচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নেয়া হচ্ছে। 

চাকরি বলতে গ্রাহকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুকে লাইক-পোস্ট দেয়া, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপে জিএইচ গ্রুপের বিজ্ঞাপন, ভিডিওক্লিপ ফরোয়ার্ড করা। বিনিময়ে দৈনিক একজন জামানতদানকারির একাউন্টে চটজলদি প্রবেশ করছে  আড়াইশ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা। নিজের একাউন্টে টাকা জমা দেখার পর আশাবাদী হযে ওটা যুবক যুবতিদের আনা হচ্ছে বিশেষ মোটিভেশনে। বলা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী কাজের বাজারে তার লাখ লাখ লোক দরকার। তাদের মাধ্যমে আনা হচ্ছে নতুন চাকুরি প্রার্থি। এ ভাবেই  রাতারাতি  হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে,  কিছু ডেমো অ্যাপস তৈরি করে এমপ্লয়ীকে দেখানো হয় যে, এই অ্যাপসের অ্যাকাউন্টে পয়েন্ট বা বেতনের টাকা জমা হচ্ছে। কিন্তু কিছু দিন পর দেখা যায়, ওই অ্যাপসটিই গায়েব। প্রথম কয়েকদিন যেতেই চাকরিতে যোগদানকারীকে উদ্বুদ্ধ করা হয় আরও অন্তত ১০ জন গ্রাহককে সম্পৃক্ত করতে। এতে ওই গ্রাহকদের যে বেতন দেয়া হবে, তা থেকে যিনি নতুন গ্রাহক আনবেন তার অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হতে থাকবে ১০% করে।

তথ্যমতে, এ গ্রুপটি এ সময় পর্যন্ত ২ হাজারের বেশী মানুষের কাছ থেকে লাখ রাখ টাকা  হাতিয়ে নিয়েছে।  জানা গেছে জামানতকারিদের  বিশ্বাস ধরে রাখতে এ কোম্পানীটি  বসুন্ধরা সিটিতে কেনা হয়েছে একটি বিদেশি জুতার দোকান, একটি আমদানি-রফতানি প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস একসেসরিজ আমদানির ব্যবসা। আর হাতিয়ে নেয়া অর্থ পাচার হচ্ছে চীনসহ  আরো কয়েকটি দেশে। সূত্রমতে, ব্যাংকে রাখলে টাকার উৎস জানতে চাওয়ার আশঙ্কায় অনেক সময় নিজ বাসায়ই রাখা হয় কোটি কোটি টাকা। আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ও টাকা রাখা হয়। আইটি এক্সপার্ট মঞ্জুরুল হাসান সাদী একাধারে মোটিভেশনাল স্পিকারও। কথার জাদুতে হতাশ মানুষের মনে জাগিয়ে তোলেন আশার সঞ্চার। নিজে নেপথ্যে থেকে প্রায়ই বিভিন্ন অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজন করেন সেমিনারের। ফেসবুক, ইউটিউব কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে বেকার তরুণ-তরুণীদের এসব সেমিনারে জড়ো করেন। সেখানে তার বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে কথিত বিদেশি প্রতিষ্ঠান ‘জিএইচ গ্রুপ’র সদস্য হিসেবে নাম নিবন্ধন করেন। এটির না আছে কোনো অফিস। না আছে ঠিকানা। এ ক্ষেত্রে আগ্রহী ব্যক্তির কাছ থেকে ‘জামানত’ রাখেন ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। মানুষের আস্থা অর্জন এবং ব্যাপক প্রচারের স্বার্থে প্রাপ্ত জামানতের টাকা থেকে চাকরি লাভকারী ব্যক্তিকে দৈনিক ২৫০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ব্যাক করা হয়। এটি আসলে লোক দেখানো। কয়েক দিন যেতেই কথিত চাকরি লাভকারীকে নতুন নতুন সদস্য ভর্তি করাতে চাপ দেয়া হয়। ভর্তি হওয়া নতুন প্রার্থীদের কাছ থেকেও নেয়া হয় অনুরূপ জামানত। এভাবে জামানত বাবদ প্রাপ্ত অর্থ কোটির ঘর ছাড়িয়ে গেলে বাড়িয়ে দেয়া হয় জামানতের অংকও। বেশি জামানতে অধিক টাকা লাভের আশায় তখন বেকার তরুণরা ১০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত রাখে সাদীর ‘জিএইচ গ্রুপ’ এ। জামানত রাখার পর জিএইচ গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে একটি কার্ড দেয়া হয়। বেকার তরুণ-তরুণী ভাবেন তিনি চাকরি করছেন। চাকরি বলতে তেমন কিছু নয়। মঞ্জুরুল হাসান সাদীর জিএইচ গ্রুপের প্রচারণামূলক ভিডিও, স্টিকার, প্রচারপত্র ফরোয়ার্ড, লাইক ও পোস্ট দেয়া। যে যত বেশি প্রচারপত্র পোস্ট করতে পারেন তার পারফরম্যান্স ততো ‘ভালো’ বিবেচিত হয়। কিন্তু সাদীর মূল টার্গেট হচ্ছে জামানতের টাকা। জামানতের টাকা যখন ১০-২০ কোটি ছাড়িয়ে যায়, তখন জিএইচ গ্রুপের কথিত চাকরিদের দৈনিক ক্যাশ ব্যাক দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিকল্পিতভাবে জটিলতা সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে জিএইচ গ্রুপের অ্যাপসে কেউ আর প্রবেশ করতে পারেন না। অন্যদিকে সাদী নতুন অ্যাপস খুলে নব উদ্যোমে নতুন প্রার্থীর কাছ থেকে শুরু করেন জামানত গ্রহণ।

প্রতারণার খপ্পরে পড়ে প্রতি নিয়ত নিঃস্ব ও সর্বশান্ত হচ্ছে বহু মানুষ।জিএইচ গ্রুপ দ্বারা প্রতারিত ও ৩-৪ লাখ টাকা করে খুইয়েছেন এমন কয়েকজন ভুক্তভোগী হচ্ছেন, পুরান ঢাকার কয়েকজন দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, এলাকার পোলা হিসেবে বিশ্বস করে টাকা দিয়েছি। তা ছাড়া তারা মা ছেলে মিলে  যখন কথা বলে, তখন কারো অবিশ্বাস করার কিছু থাকে না। তা চাড়া প্রথম দিকে প্রতিদিনই  অ্যাপস এ টাকা প্রবেশ করে। সে টাকা বিকাশে না নগদের মাধ্যমে তুরে নেয়া যায়। কিন্তু এ যে, এত বড় প্রতারণারণা তা কারো বোঝার উপায় নেই।

প্রতারণার বিষয়ে জানতে সাদীর ব্যবহৃত ০১৯৭০০২৫৬১১ মোবাইল নম্বরে এবং একই নম্বরে খোলা হোয়াটঅ্যাপে কল দেয়া হয়। একই বিষয়ে কোন কথা বরতে রাজি হয়নি তার পরিবারের অপর কোন সদস্যও।

সুজন / সুজন

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর

সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ প্রকোপ হতে পারে

অমীমাংসিত বিষয় সমাধানে বাংলাদেশ-পাকিস্তান একমত

৫ স্মারক ও এক চু‌ক্তি সই করল বাংলাদেশ-পা‌কিস্তান

পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি : সিইসি

একাত্তরের অমীমাংসিত ইস্যুর দুইবার সমাধান হয়েছে

তৌহিদ-ইসহাক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু

১৩ বছর পর ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেঙ্গুতে আরো ৪ জনের মৃত্যু

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনে যেসব ইস্যুতে আলোচনা হবে