ডা. এনামুল হক টিটুর পরামর্শ : শিশুর প্রথম সলিড খাবার

নতুন মা। চিন্তায় থাকেন শিশুর মুখে কি খাবার তুলে দিবেন। কীভাবে শিশুকে নতুন খাবারে অভ্যস্ত করাবেন। আজ আমরা কথা বলব শিশুর সলিড খাবার নিয়ে। পরামর্শ দিয়েছেন ইয়র্ক হাসপাতাল এর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক।
শিশুর মুখে কখন কোন খাবার দিবেন আর কখন বুকের দুধ আর কখন বাড়তি খাবার? ইত্যাদি বিষয়ে। প্রথমেই বলে রাখি- শিশুর বয়স ৬ মাসের বেশি হলেই তাকে বাড়তি খাবার দিতে হয়। ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ।
শিশুর প্রথম সলিড খাবার শিশুর বয়স ৬ মাস বয়স পর্যন্ত কেবলমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার পরে যখন দুধ ছাড়া অন্য খাবার শুরু করে সেটাকে বলে উইনিং এবং যে খাবার দিয়ে উইনিং শুরু করা হয় সেগুলোকে বলা হয় উইনিং ফুড। উইনিং ঘরের খাবার দিয়ে শুরু করলেই সবচেয়ে ভালো। প্রথম সলিড ফুড হিসেবে আদর্শ কিছু খাবার হচ্ছে- চটকানো পাকা কলা, মিষ্টি আলুর পিউরি, ডালের পানি দিয়ে চটকানো নরম ভাত, ফলের রস (টক জাতীয় ফল বাদে), জাউ ভাত, সবজি সেদ্ধ, আস্তে আস্তে চাল, ডাল ও ২ ধরনের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি।
শিশুর প্রধান ৭ রকমের খাদ্য তালিকা মাছ, মাংস, ডিম, রঙিন শাক সবজি, অন্যান্য শাক সবজি ও ফলমূল, ভাত, রুটি, বাদাম, ডাল জাতীয় খাবার, দুগ্ধজাত খাবার। মনে রাখবেন- শিশুর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রধান ৭ রকমের খাবার থেকে কমপক্ষে ৪ রকমের খাবার অবশ্যই রাখা উচিত। শিশুর প্রথম সলিড খাবার যেভাবে শুরু করবেন?
প্রথম দিন- ১ চামচ, দুপুর বেলা। দ্বিতীয় দিন- ২ চামচ, সকালে ও দুপুরে। তৃতীয় দিন- ৩ চামচ, সকালে, দুপুরে ও রাতে। শিশু রান্না করা খাবার খাওয়া শুরু করলে শিশুর খাবারে ২/৩ চামচ তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। প্রতিদিন ১ পোয়া বাটির হাফ বাটি করে দিনে দু’বার ঘরে তৈরি বাড়তি খাবার এবং ১-২ বার পুষ্টিকর নাস্তা খাওয়াতে হবে। এই সময়ে সারাদিন শিশু ৩ ঘন্টা পর পর খাবে, যার মধ্যে দু’টি বাড়তি খাবার এবং একটি পুষ্টিকর নাস্তা দিতে হবে। যেমন- কলা, ডাবের পানি, ফলের রস, দুধ ইত্যাদি। সকাল শুরু করতে হবে বুকের দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক দিয়ে। ২ বছর পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ দেওয়া যায়।
শক্ত খাবারে অভ্যস্ত হওয়ার পর ফুড চার্ট কেমন হবে? সকাল ৮টা- নরম খিচুড়ি। (খিচুড়িতে যা যা থাকতে পারে- ১ মুঠ চাল, চালের অর্ধেক পরিমাণে ডাল, দুই রকমের সবজি, ২-৩ চামচ তেল, কাঁটা ছাড়া মাছ, চিকেন অথবা কলিজা)। সকাল ১১টা- বুকের দুধ/ফর্মুলা মিল্ক/দুধ দিয়ে রান্না করা সুজি/সেরেলাক/সিজনাল ফল। বেলা ২টা- নরম খিচুড়ি/ডাল দিয়ে নরম ভাত সাথে মাছ বা মাংস এক পিস। বেলা ৫টা- যেকোনো ফল যেমন- পাকা কলা/পাকা পেঁপে/আম অথবা সেদ্ধ ডিমের কুসুম/নরম বিস্কুট/নুডলস। রাত ৮টা- দুপুরের মতো ভাত, সবজি, মাছ। ঘুমানোর আগে- বুকের দুধ/ফর্মুলা মিল্ক। ৬ মাসের পর থেকে বাচ্চাকে পানিও দিতে হবে। অনেকে খিচুড়ির বদলে সকালে বাচ্চাকে রোলড ওটস বা সেরেলাক খাওয়ান, এতেও সমস্যা নেই। তবে বাইরের প্যাকেটজাত ফুড না দিয়ে ঘরে তৈরি খাবার দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে ঘরের খাবারে সে অভ্যস্ত হবে। শিশুর কাছে এই খাবারগুলো নতুন, তাই প্রথমেই সব হজম নাও হতে পারে। তাই সব নতুন খাবার একদিনে দেওয়া শুরু করবেন না। পর্যায়ক্রমে একটা একটা করে আরম্ভ করুন। যদি কোনো খাবার বাচ্চাকে স্যুট না করে বা হজম না হয় অথবা হুট করে আ্যলার্জি হয়, তাহলে সেটা দেওয়া বন্ধ রাখুন।
উইনিং এর শুরুতে যেসব সমস্যা হতে পারে। উইনিং এর সময় নতুন খাবার খেয়ে আপনার শিশুর অ্যালার্জি হতে পারে। বাচ্চার যে যে লক্ষণ দেখে আপনি ফুড অ্যালার্জি বলে চিহ্নিত করতে পারবেন, সেগুলো হলো-পেট ব্যথা সাথে কান্না ও পেট মোচড় দেওয়া, বার বার বমি, গায়ে র্যাশ ওঠা, লালচেভাব দেখা দেওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। এরকম হলে চেষ্টা করুন কোন খাবারে অ্যালার্জি হচ্ছে সেটা বের করতে। সেই খাবারটি দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রাখুন। তারপর কিছু দিন পরে সেটা আবারও দিন। যদি দ্বিতীয়বারও শিশুর অ্যালার্জি হয়, তবে নিশ্চিত ধরে নিন সেই খাবারটিই অ্যালার্জির কারণ।
খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়ে
শিশুর খাবারে সামান্য ঘি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। শিশুর প্রথম সলিড খাবার দেওয়া যখন শুরু হয়, তখন অনেক ক্ষেত্রে শিশুর পটি শক্ত হয়ে যায় বা টয়লেট করতে তার কষ্ট হয়। এক্ষেত্রে তার ফুড মেন্যুতে কাঁচা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়ো রাখতে হবে। জাউ ভাতের সাথে এই সবজিগুলো দিতে পারেন বা খিচুড়ির সাথে এই সবজি মিক্স করতে পারেন। এতে টয়লেট স্বাভাবিক হবে। হজমের সমস্যা হলে ২ বছরের আগে বিফ বা মাটন না দেওয়াই ভালো। আর ২ বছরের আগে সরাসরি গরুর দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।
সব খাবার শিশু শুরুতে পছন্দ নাও করতে পারে। তাকে জোর করে খাওয়াবেন না। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে একবার কোনো খাবার শিশু খেতে না চাইলে যদি সেই খাবারটা তাকে বার বার দেওয়া হয়, আস্তে আস্তে ঐ খাবারের প্রতি তার আগ্রহ হয়। জোর না করে মাকে ধৈর্য রাখতে হবে। খাবারগুলো কালারফুল প্লেটে সার্ভ করলে শিশুর আগ্রহ বাড়বে। সব সময় ব্লেন্ড করে লিকুইড খাবার শিশুকে দিবেন না, এতে সে চিবিয়ে খেতে শিখবে না। শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ঘরে বানানো খাবারে তাকে অভ্যস্ত করে তুলুন, তাকে নিজের হাতে খেতে দিন। খেলতে খেলতেই সে নিজের হাতে খেতে শিখবে! আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
এমএসএম / এমএসএম

স্বাস্থ্যখাতে ‘দুর্নীতির হোতা’ মিঠু গ্রেপ্তার

ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১০০ ছুঁইছুঁই

সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি, নতুন ব্যাখ্যায় নিহত ৩৪

বিএসএমএমইউয়ে নতুন নামের ব্যানার, বাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

মেডিকেলে থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যাচাই-বাছাই ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত

ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৭ রোগী

ডেঙ্গুতে ঢাকায় কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু বেশি

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৮

বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় অশনি সংকেত অটোমেশন; ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ

ক্যানসার রহস্যের জট খোলার নতুন ‘সূত্রের’ সন্ধান মিলেছে
