আজ ১২ মার্চ বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস

১২ মার্চ বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ, চলবে আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত। গ্লুকোমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই পালিত হচ্ছে গ্লুকোমা সপ্তাহ। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে সকাল নয়টায় জনসচেতনতামূলক র্যালী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, গ্লুকোমা সোসাইটির সেক্রেটারী, বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
গ্লুকোমা দিবস সম্পর্কে বাংলাদেশ চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের গ্লুকোমা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: সমরেন্দ্র নাথ অধিকারী বলেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে গ্লুকোমা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। এই রোগকে বলা হয় নিরব ঘাতক। চোখের অভ্যন্তরীণ উচ্চ চাপই এই রোগের প্রধান কারণ, যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোখের স্বাভাবিক চাপেও এই রোগ হয়ে থাকে। চোখের এই অভ্যন্তরীণ চাপ চোখের অতি সংবেদনশীল অপটিক নার্ভ, যার মাধ্যমে চোখ মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে তাকে চিরতরে নষ্ট করে দেয়। যার ফলে মানুষ অন্ধত্ব বরণ করে। গ্লুকোমা রোগ যেকোনো মানুষের যেকোনো বয়সে হতে পারে, তবে ৪০ বছর বয়সের পরে এই রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে জানান গ্লুকোমা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: সমরেন্দ্র নাথ অধিকারী ।
গ্লুকোমায় আক্রান্ত হবার কিছু উপসর্গ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, যে চশমা পরছেন তাতে স্বস্তি না পাওয়া, দৃষ্টির চারপাশে রংধনুর মতো রং দেখা, স্বল্প আলোতে টিভি দেখা, লেখাপড়া বা সেলাই কাজ করতে গিয়ে মাথাব্যথা, চোখব্যথা করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, স্বল্প আলো ছাড়াও চোখব্যথা, মাথাব্যথা ও চোখ লাল হওয়া, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জন্মগত বড় চোখ কিংবা জন্মের পর আস্তে আস্তে চোখ বড় হয়ে যাওয়া, চোখের মণির চারপাশে চোখের সাদা অংশ দেখা বা মণি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া। সবচেয়ে বড় কথা রোগী যদি অনুভব করেন তার চোখের ব্যাপ্তি বা দৃষ্টির চারদিকের পরিসীমা আগের চাইতে অনেক ছোট হয়ে গেছে, তিনি হাঁটতে চলতে বার বার চারপাশের জিনিসের সঙ্গে হোঁচট খাচ্ছেন তখন অবশ্যই গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞের কাছে চোখ দেখাতে হবে গ্লুকোমায় ভুগছেন কি না। এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনার কোন বিকল্প নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ৭ কোটির বেশি মানুষ এই রোগে ভুগছেন। আমাদের দেশে অন্ধত্বের শতকরা ১.২ ভাগ গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগী এবং শতকরা ২.৮ ভাগ মানুষ গ্লুকোমা রোগে ভুগছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস। অন্ধত্ব একজন মানুষের জীবনকে যেমন দুর্বিষহ করে তোলে ঠিক তেমনি এটি একটি অভিশাপ হিসেবে দেখা দেয় পরিবার, সমাজ, কিংবা জাতির জন্য। গ্লুকোমা মানুষের দৃষ্টিশক্তিকে কেড়ে নেয় ঠিক তবে সঠিক সময়ে যদি রোগ নির্ণয় করা যায় কিংবা চিকিৎসা করা যায় তাহলে এই রোগকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
অনেক সময় জন্ম থেকেই শিশুদের শরীরে এই রোগের উপস্থিতি থাকে বলে একে জন্মগত গ্লুকোমা বলা হয়। চোখের স্নায়ুতন্ত্রের এই রোগটি বংশগতও হতে পারে কিংবা চোখের আশপাশে আঘাত, চোখের ড্রপ আকারে স্টেরয়েড নিতে থাকলে এই জাতীয় রোগের সূত্রপাত হতে পারে। এর কোন লক্ষণ নেই তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে।
চোখের সুরক্ষায় নিয়মিত চোখের স্ক্রিনিং করানো খুবই দরকার। অপটিক স্নায়ুর গঠন পরীক্ষার সঙ্গে চোখের অন্যান্য নার্ভের পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। ভিসুয়াল ফিল্ড টেস্টিং, অপটিক নার্ভের স্ক্যানের মাধ্যমে রোগের মাত্রা বোঝা সম্ভব। তবে চোখের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কোন কাজ করা কোনভাবেই উচিত নয়।
এখন পর্যন্ত গ্লুকোমার কোন ট্রিটমেন্ট নেই তবে যাতে এটির মাত্রা বেড়ে না যায় সেটা বিবেচনা করেই বিভিন্ন থেরাপির দ্বারা এই জটিল ব্যাধিটিকে রোধ করা যেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে চোখের ড্রপ ব্যবহার করা সবথেকে ভাল উপায় এবং এটি নিয়মিত ব্যবহার করতে হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অনেকেই অস্ত্রপ্রচার করাতে পারেন তাতে করে কিছুটা হলেও সুরক্ষা হয়। অনেকে আবার লেজার সার্জারিও করে থাকেন। তবে এ জাতীয় ট্রিটমেন্টের পরেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি জীবন যাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুনও মেনে চলা উচিত। যেমন নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো, ছয়মাস পর পর চোখের পরীক্ষা করা, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, ক্যাফেইন বেশি গ্রহন করা। যারা বেশিক্ষণ মাথা নিচু করে থাকেন কিংবা মাথা নিচু করে ব্যায়াম করেন সেটি থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এছাড়া ধূমপান থেকে বিরত থাকা হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। একজন সচেতন ব্যক্তিই পারেন গ্লুকোমায় অন্ধত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে। এই রোগ সম্পর্কে তার সচেতনতাই পারে তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে এবং দ্রুত চিকিৎসা গ্রহনে পদক্ষেপ নিতে।
যেহেতু এই রোগের উপসর্গ বোঝা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব না সেহেতু ৫০ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিই বুঝতে পারেন না তার গ্লুকোমা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে তিনি অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন। এজন্য প্রতি বছর অন্তত একবারের জন্য হলেও চল্লিশোর্ধ্ব মানুষ যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চোখ পরীক্ষা করান তাহলে গ্লুকোমা রোগে চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগেই সেটা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
গণসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ওয়ার্ল্ড গ্লুকোমা অ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্য হল গ্লুকোমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা, গ্লুকোমায় আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া গ্লুকোমা দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
এমএসএম / এমএসএম

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

নতুন দলের নিবন্ধন দিতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি ইসির

পাচার করা টাকা ফেরাতে দ্রুত একটি বিশেষ আইন করা হবে : প্রেস সচিব

৭ মাসে কারাগারে ১২ জনকে চাকরিচ্যুত, শাস্তি পেয়েছে ২৭০

ডিসেম্বর টাইম লাইন যাতে মিস না করি সেভাবেই প্রস্তুতি: সিইসি

শেখ হাসিনা-রেহানা পরিবারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু, সড়ক অবরোধ

১০ বছর বন্ধ দুই পানি শোধনাগার প্রকল্প : প্রধান উপদেষ্টার উষ্মা

ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ

ঈদুল ফিতর : মাস শেষের আগেই বেতন পাবেন সরকারি কর্মচারীরা

৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার করতে হবে : আইন উপদেষ্টা

নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ
