প্রেসিডেন্ট পার্কে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের বাসভবন প্রেসিডেন্ট পার্ক'কে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের আখড়ায় পরিনত করেছেন, তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে যিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে দেখভালের নাম করে ট্রাস্টকৃত সম্পদে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক বসবাস করছেন। আর তখন থেকেই প্রেসিডেন্ট পার্কে শুরু হয়েছে অসামাজিক, অনৈতিক ও সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড।
শুধু তাই নয়, রাজনীতির মোড়কে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সমাজের উচুতলার এক শ্রেণীর ক্ষমতালোভি ব্যক্তিদের নিয়ে খুলে বসেন মদের জলসা। প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রতি রাতেই চলে অনৈতিক ও অসামজিক কর্মকাণ্ড। কখনও কখনও এসব অপকর্মে জোরপূর্বক এরশাদপুত্র এরিককেও জড়ানোর চেষ্টা করা হয়। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট পার্ককের এক মদের জলসার খন্ডিত ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। জানা গেছে ভিডিওটি ধারণ ও প্রকাশ করেছেন বিদিশা নিজেই। ভিডিওটি ধারণের উদ্দেশ্য ছিল, তার অপকর্মে জড়িয়ে যাওয়া মানুষগুলো যেনো কখন তার বিপক্ষে অবস্থান না নেন। এসব ভিডিও দেখিয়ে তাদের ব্লাকমেইল করতেন বিদিশা। হাতের শক্তি বানিয়ে রাখতেন তাদের। নিজের চকে আঁকা নীলনকশা অনুযায়ী তাদের ব্যবহার করতেন তিনি। কেউ তার কর্মকাণ্ডের বিরোধীতা করলে তাকে এসব ভিডিও দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিতেন তিনি। সম্প্রতি তেমন এক দীর্ঘ ভিডিওর খন্ডিত অংশ প্রকাশ করে তা দিয়ে তারই এক সময়কার বিশ্বস্ত এরশাদ ট্রাস্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুবায়েত হাসান সায়েমকে ডিবি পুলিশে ধরিয়ে দেন বিদিশা। যে ভিডিওতে দেখা যায় মদে মাতাল সায়েম, কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শাহজাহান সিরাজ ও মেজর ওয়াদুদ, একজন আরেকজনকে গাল মন্দ করছেন। গ্লাসে মদ ঢালছেন আর একজন আরেকজনকে বিএনপিপন্থী লোক দাবি করে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নোংরা ভাষায় কটুকথা বলছেন। ওই সময় দূর থেকেই এসব ভিডিও করেন বিদিশা নিজে। যা পরবর্তিতে বিভিন্ন সময় ব্লাকমেইল করতে কাজে লাগান। কিন্তু বিধি বাম, এক সময় তার এসব কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে চলে যান অ্যাডভোকেট সায়েম। যিনি মদে মাতাল অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি করা ওই ভাইরাল ভিডিওর মামলায় জেলে আছেন।
ভাইরালকৃত ভিডিওটি খুঁজতে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় নতুন নতুন তথ্য। কেঁচ খুড়তে বেরিয়ে আসে সাপ। জানা যায়, ভাইরালকৃত ভিডিওটি বড় একটি ভিডিওর খন্ডিত অংশ মাত্র। যেখানে মাতাল অবস্থায় হঠাৎ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন সায়েম। তার আগে পরে কি কথা হচ্ছিল মদের আড্ডার অপর দুই সহযোগি মেজর অবসরপ্রাপ্ত ওয়াদুদ ও কর্নেল শাহজাহান সিরাজের সঙ্গে, তা কিন্তু নেই। ভিডিও পর্যালোচনায় বলার অপেক্ষা থাকে না যে, ভিডিওটি শুধুমাত্র অ্যাডভোকেট রুবায়েত হাসান সায়েমকে ফাঁসাতেই ব্যবহার করেছেন বিদিশা। তবে ধারণকৃত পুরো ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া গেলে জানা যাবে আগে-পরে, কি বক্তব্য বা মন্তব্য ছিল সায়েম ও তার আড্ডার সহযোগিদের।
তবে সায়েমের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বাইরে ভিডিওতে অন্য একটি তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, যা রাজনৈতিক। কর্নেল সিরাজ নিজেকে ও সায়েমকে বিএনপির লোক বলে দাবি করেন। এছাড়া আরো কিছু নোংরা অশালীন কথাবার্তা বলেন তারা। জানা যায়, মদের ওই জলসায় আরো ছিলেন মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিকদার আনিসুর রহমান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠসহচর লন্ডন প্রবাসী বিদিশার বন্ধু মোরশেদ মঞ্জুরসহ আরো অনেকে। মোরশেদ মঞ্জুর দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট পার্কেই অবস্থান করছেন।
এদিকে ভিডিওর সত্যতা খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় সরকার ও রাজনীতি বিরোধী লোমহর্ষক সব তথ্য। গেলো ১৫ মার্চ সরকারের উচ্চমহল বরাবর হারুন অর রশিদ নামে এক মুক্তিযোদ্ধার লিখা চিঠি থেকে জানা যায় ওইসব তথ্য। এতে দেখা যায়, বিদিশা প্রেসিডেন্ট পার্ককে বসে নিয়মিত সরকার ও রাজনীতি বিরোধী নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে লিপ্ত রয়েছেন। সরকার উক্ষাৎ, বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে হত্যা পরিকল্পনাসহ নানা অপকর্মের তথ্য রয়েছে ওই চিঠিতে। যেখানে ওই মুক্তিযোদ্ধা তথ্য প্রমাণ হিসেবে টেলি কমিউনিকেশনস স্বচিত্র, জিএম কাদেরকে গুলি করে হত্যা পরিকল্পনা, প্রধানমন্ত্রী, কয়েকজন মন্ত্রী ও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে গালমন্দ এবং বিভিন্ন মিটিং ও অসামাজিক কার্যক্রমের তথ্য সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে জমা দেন।
ওই চিঠিতে আরেকটি লোমহর্ষক তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়, আর তা হলো দেশে অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'র সঙ্গে অর্থায়ন সহযোগিতার আদান প্রদান কর্মকাণ্ড চলছে বিদিশার নেতৃত্বে। জানা যায়, নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের প্রধান শামীম মাহফুজ একাধিকবার প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশার সঙ্গে মিটিং করেছেন। এছাড়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ও আতংক সৃষ্টি করে রাজনীতির নামে অবৈধ কমিটি বাণিজ্যের মাধ্যমে বিদিশা বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রনালয়ে লিখা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, এরশাদের মৃত্যুর পর বিদিশা সিদ্দিক নিজেকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। যার কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। বিদিশা অবৈধভাবে মেজর সিকদার আনিসুর রহমান, দয়াল কুমার বড়ুয়া গংদের সঙ্গে নিয়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে অবৈধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ, সরকার বিরোধী কার্যক্রম, ভূয়া পদ বাণিজ্য, পদ দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনকে এনে নির্যাতন ও অস্ত্রের হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ রাখেন বিদিশা সিদ্দিক।
এমএসএম / এমএসএম
এই অথর্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : নাহিদ
ন্যাশনাল ব্যাংকের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
হাদির গুলির মতো ঘটনা আরও ঘটার আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের
এভারকেয়ারে হাদি
তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর
ঢাকা-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন আসিফ মাহমুদ
আগামী নির্বাচন যত সহজ ভাবছেন, তত সহজ নয়: তারেক রহমান
খুব শিগগিরই আমাদের নেতা দেশে আসবেন : মির্জা ফখরুল
এনসিপির লক্ষ্য গণভোট, কয়টা আসন পাবে সে হিসাব করছে না: নাহিদ
ঢাকা-১১ নাহিদ ও ঢাকা-১৮ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রার্থী ঘোষণা
প্রথম ধাপে ১২৫ জনের নাম ঘোষণা করলো এনসিপি
তিন অক্সফোর্ড ডিগ্রিধারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন
ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রিকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে : সালাহউদ্দিন
Link Copied