আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনে করছে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বিএনপি লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি দিচ্ছে। তবে আন্দোলনের নামে যে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে ক্ষমতাসীনরা প্রস্তুত বলে জানায় তারা। আগামী ১৯ ও ২০ মে এবং ২৬ ও ২৭ মে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় জেলায় জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর প্রেক্ষিতে শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন করছে, তা কখনো সফল হবে না। আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে কথা বিএনপি বলছে, তাতে জনগণের কোনো সমর্থন নেই। এ কারণেই বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের কথা বলে আসলেও তাতে জনগণ সাড়া দেয়নি এবং আন্দোলনে জনসমর্থন পায়নি। এরপরও বিএনপি আন্দোলনের কথা বলছে এবং সরকারের পতন ঘটানোর ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি দিচ্ছে। আন্দোলনের নামে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পথ খুঁজছে। এ কারণেই দলটির এসব কর্মসূচি বলেও আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিএনপি। দাবি মেনে না নিলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে আসছে উচ্চ আদালতে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরিয়ে আনা হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় নির্বাচিত অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারই বহাল থাকবে। এ অবস্থায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন সংবিধান নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধাকরা বার বার জানিয়ে আসছেন। এই পরিস্থিতিতেও আগামী ১৯ ও ২০ মে এবং ২৬ ও ২৭ মে চার দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
তবে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির এই আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকছে। শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মাঠে রাখছে। আগামীতেও বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে বলেও দলটির নেতারা জানান।
গত রোববার সম্পাদক মণ্ডলীর সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা নাকি আন্দোলনের ঝড় সৃষ্টি করবে, আর সেই ঝড়ে নাকি সরকারের পতন হবে। বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি’র ঝড় তোলার কোনো সামর্থ নেই, তাই গলাবাজি দিয়ে নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে চাইছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও গণআন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে কখনো তা সফল হয়নি। বিদেশি দূতাবাসগুলোতে নালিশ করে দেশকে ছোট করছে। আমরা একটা কথা বার বার বলেছি, পরিষ্কার বলছি, তাদের (বিএনপি’র) কর্মসূচির পাল্টাপাল্টিতে আমরা নেই। আমরা একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। সে কারণে আমরা শান্তির সমাবেশ করছি।
তিনি বলেন, তারা হুমকি দিচ্ছে নির্বাচন করতে দেবে না। নির্বাচনে তারা আসবে না এটা তাদের ইচ্ছা, নির্বাচন হতে দেবে না এমন ধরনের যে সংকল্প ব্যক্ত করে তারা রুখে দাঁড়াবে, আমরাও দেখবো, কে কাকে রুখে দাঁড়ায়। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে দেশ দুটি ধারায় বিভক্ত। একদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারা, অপরদিকে সাম্প্রদায়িক ধারা যার নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি’র রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচিতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়নি। আজকে তাদের নেতাকর্মীরা বুঝে গেছে মুখের গলাবাজি বাস্তবে মরীচিকা। আন্দোলনের পথরেখা থেকে নিজেরা সরে গেছে। তাদের জোটে অনৈক্য। উইকেটের পতন ঘটছে। এখন ১৪/১৫ টা দল আছে মনে হয়। তাদের নেতা নেই। নেতা ছাড়া আন্দোলন দুঃস্বপ্ন। জিয়াউর রহমানের নামে হত্যা মামলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মামলা দল বা সরকার দায়ের করেনি। একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা করেছেন।
নেতারা জানান, আন্দোলনের নামে বিএনপি দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার ও আওয়ামী লীগকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। এ কারণেই যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ মাঠে আছে, আগামীতেও থাকবে। পাশাপাশি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির কোনো চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা জানান, বর্তমানে বিএনপি যেভাবে কর্মসূচি পালন করছে, সেটা কোনো সমস্যা না। কিন্তু এই অবস্থায় থাকবে এ নিশ্চয়তা নেই। অতীতের মতো সহিংসতা, নাশকতার পথ বেছে নিতে পারে সরকারের এমন আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে আওযামী লীগের কর্মীদেরও পাল্টা অ্যাকশনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।
গত ১৩ মে যুবলীগের শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের বক্তব্যেও এটা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে যদি বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার আছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আর রাজনৈতিকভাবেও আওয়ামী লীগ জবাব দেবে।
এদিকে বিএনপির কর্মসূচি ও আওয়ামী লীগের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী বলেন, বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মসূচি দিতেই পারে, সেটা কোনো সমস্যা না। তবে আন্দোলনের নামে তারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতে পারে, এ জন্য আমরা সতর্ক আছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে, আগামী দিনেও থাকবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিহত করবো। সরকার আছে, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আছে, তারাও ব্যবস্থা নেবে।
বিএনপির কর্মসূচী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি শান্তি সমাবেশ। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে দেশের ও দেশের মানুষের শান্তি বজায়ে রাখার ব্যাপারে আমাদের উপরও কিছু দায়িত্ব বর্তায়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সে দায়িত্বটুকু পালন করে মাত্র।’ ঢাকা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঢাকা দেশের রাজধানী। অনেক কিছুর চালিকাশক্তি ঢাকা ঘিরে। ফলে যেকোনো ঝুট-ঝামেলামুক্ত রাখার জন্য সরকার সবসময়ই সচেষ্ট থাকে।’
এমএসএম / এমএসএম

জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে

প্রশাসনের কর্তৃত্ব না থাকায় ধর্ষণ বেড়ে যাচ্ছে : রিজভী

আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তিন মানুষ মা, স্ত্রী ও কন্যা

বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে

জাতীয় নির্বাচন আগে চাইঃ শরীফ উদ্দিন জুয়েল

আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না: সারজিস

‘পুরোনো সংবিধান ও শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়’

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়ন প্রাথমিক লক্ষ্য

দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করলেন নাহিদ ইসলাম, যা যা রয়েছে...

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ; আহ্বায়ক নাহিদ, সদস্য সচিব আখতার

‘লক্ষ্য ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া’
