স্বরুপে ফিরেছে বিএনপি জামায়াত

* ২০১৩-১৪ সালের রুপে তারা* টার্গেট পুলিশ ও সংবাদকর্মী* প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা* ফুটেজ দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে* পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
পুরানো চেহারায় ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও তাদের মিত্র জাময়াতে ইসলামী। আজ ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আবারো স্বাহিংস রুপ দেখিয়েছে তারা। যদিও তারা বার বার বলে আসছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে কিন্তু সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পরে বিভিন্ন যায়গায় সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় দৈনিক বাংলা মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছোরা ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আগ্নি সংযোগ করেছে পুলিশ হাতপাতালে, শিল্পকলা একাডেমীসহ বিভিন্ন যায়গায়। এছাড়া হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছেন প্রধান বিচারপতির বাসভবন।
এই হামলা প্রসঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিলেও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ হাসপাতাল এবং রাষ্ট্রীয় অনেক ভবনে হামলা চালিয়েছে তারা। পুলিশ জনগণের জানমাল রক্ষা করার জন্য পাল্টা অ্যাকশনে গিয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে পল্টনের নাইটেঙ্গেল মোড় পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ডিবি প্রধান বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী কায়দায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সদস্য নিহত
রাজধানীর দৈনিক বাংলার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। বিকেলে সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোড়া একটি ইট নিহত কনস্টেবলের মুখে লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। দুপক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় দৈনিক কালবেলার রাফসান জানি, নিউ এইজের আহমেদ ফয়েজ, বাংলা ট্রিবিউনের সালমান তারেক শাকিল, ফ্রিল্যান্সার মারুফসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। তাদের মধ্যে রাফসান জানিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। অন্যান্য আহত সাংবাদিকরা আশপাশের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আগুন রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। আগন কীভাবে লেগেছে তা জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
শনিবার বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার খবর পায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, আমরা বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আগুন লাগার সংবাদ পাই। ঘটনাস্থলে আমাদের দুটি ইউনিট যাচ্ছে। আগুন লেগেছে নাকি কেউ আগুন লাগিয়েছে সে তথ্য আমাদের কাছে নেই।এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে আগুন দিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টন এবং রাজধানীর অন্যান্য স্থানে বিএনপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় বিএনপির বহু নেতাকর্মীর পাশাপাশি পুলিশ ও সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ৪১ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
রণক্ষেত্র নয়াপল্টন
পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর নয়া পল্টন। কাকরাইলে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের পরপর পুলিশ নয়াপল্টনের সমাবেশে ধাওয়া দেওয়া শুরু করে। ধাওয়া খেয়ে নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টন এলাকা ছেড়ে যায়। পুলিশ টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ফলে নয়াপল্টন এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরের পর কাকরাইল মোড়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বাসভবনে হামলা চালায়। এ সময় একদল লোক প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। তারা বাসভবনের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
কাকরাইল এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। বিএনপি কর্মীরা এ সময় তিনটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা কাকরাইল পুলিশ বক্সেও আগুন দেয়। কাকরাইলের আইডিবি ভবন-সংলগ্ন ব্যাটারি গলিতেও একটি গড়ি ভাঙচুর করে বিএনপি কর্মীরা। এ ছাড়াও রাজধানীর মিন্টো রোডের মুখে একটি বাসে ভাঙচুর করে তারা।
এদিকে সমাবেশের অনুমতি না পেলেও জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সকাল থেকেই জাময়াত কর্মীরা জড়ো হতে থাকে। দুপুর ১টার পর জামায়াত কর্মীরা পুলিশের তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর একটি ভেঙে নটর ডেম কলেজের সামনে চলে যায়।
দুপুর পৌনে তিনটার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে বিজয়নগর এলাকা রণক্ষেত্রে হয়ে ওঠে। সমাবেশে যোগে দেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তারা বিজয়নগর প্রধান সড়ক ও বিভিন্ন গলি থেকে পুলিশের ওপর এই হামলা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। দুপুর আড়াইটার দিকে শিল্পকলা একাডেমির সামনে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীরা। এ ছাড়া বিজয়নগর, নয়াপল্টন, কাকরাইল, আরামবাগ, সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের আক্রমণাত্বক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ২০১৩-২০১৪ সালে বিএনপি জামায়াত যে চেহারায় সেই একই চেহারায় ফিরে আসছে তারা। ইতোমধ্যে রাজধানীর বেশ কয়েক জায়গায় তারা হামলা চালিয়েছে সাংবাদিকদের ওপর। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সমাবেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট শেখ নাসির। বিএনপি কর্মীরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। রাজারবাগ এলাকায় একুশে টেলিভিশনের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর করে জামায়াত-বিএনপির কর্মী। এ সময় আহত হন একুশে টিভির সাংবাদিক তৌহিদুর রহমান ও ক্যামেরাপারসন আরিফুর রহমান। এদিকে আরামবাগ মোড়ে তিনটি কলেজের সামনে বিএনপির কর্মীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হতে হয়েছেন ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ আনিস। তিনি জানিয়েছেন, তাকে মারধর করে ক্যামেরা নিয়ে গেছে যুবদল ও জামায়াত কর্মীরা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পোস্টার ফেস্টুনে রাস্তার মাঝে আগুন দেওয়ার ছবি তুলতে গেলে তারা হামলা চালায়। নয়াপল্টন-সংলগ্ন নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিএনপি কর্মীদের হাতে আহত হয়েছেন সময় টিভির সাংবাদিক মারুফ।
এমএসএম / এমএসএম

গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে সরকারের ভেতরের মহল : ফখরুল

রমজানের এক সপ্তাহ আগে নির্বাচনের প্রত্যাশা সালাহউদ্দিনের

রুমিন ফারহানাসহ যে কোনো নারীর প্রতি স্লাটশেমিংয়ের বিরুদ্ধে হাসনাত

শোকজের জবাব দেবেন বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান

কাঠামোগত পরিবর্তন না এলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করব: নাহিদ ইসলাম

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ফিরোজায় পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী

পাঞ্জাবি পরা একজন আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছেন : রুমিন ফারহানা

বিএনপির আ.লীগ বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা : হাসনাত আবদুল্লাহ

রাষ্ট্রের সিস্টেমটাই হয়ে গেছে ‘দখলের’ : মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি দিতে হবে, সংস্কার না করে পুর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পরে না-পীর সাহের চরমোনাই

যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র ফিরবে না: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
