বশেমুরবিপ্রবিতে পলাশের সমারোহে বসন্তের ফাগুন হাওয়া

হে বসন্ত, তুমি কি আমারে তাকাইয়া দেখো নাই! তোমার লাগি যে আমি দিনের পর দিন মাসের পর মাস চাইয়া থাকি, আইবা কবে। শীত রে আমি ধইরা রাখি, ভিজা থাকার লাইগা! যাতে তোমার রঙে আমি রংধনু হইতে পারি। তুমি যে শেষমেশ আইছো, দেখছো আমার রূপ। তোমার মৃদুল হাওয়ায় আমার মন কেমন ফুরফুর হইয়া আছে।
শীতের জড়তা কাটিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে ঘুমন্ত প্রকৃতি উঠলো জেগে।৫৫ একর সাজলো পরী পরলো পরী বসন্তের শাড়ি তরুণ-তরুণী তা দেখে উম্মাদ ভারী। মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পরে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের মান মাতানো নকশা তার সামনেই লাইব্রেরি ভবনের দুপাশে পলাশফুটো ২টি গাছ ক্যাম্পাসের বসন্তকে যেন আঁকড়ে ধরে আছে। পায়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে রংধনুর মায়া। লাল ইটের গঠনে ছড়িয়ে আছে তার রূপের রহস্য। কে না ভালোবাসবে রহস্যময়ী ৫৫ একরের রাণীকে! ক্লাসের বিশাল আকৃতির জানালার দখিনা দুয়ার যখন খুলে দেয় তখন মিষ্টি বাতাস বয়ে যায় নিজ ছন্দে আর বলে যায়, ‘বসন্ত এসে গেছে’।
একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরী ভবনের দুপাশের পলাশ তলায় বিরাজ করেছে বসন্ত। ফুলকুমারী কুড়াচ্ছে ফুল, তুলছে নানান ভঙ্গের ছবি। ডালে ডালে উঁকি মারছে নতুন পাতা,শতাধিক গাছে এসেছে আমের মুকুল। তারই মাঝে পাখিদের খেলার সুরে ভাসছে বসন্তকে নিলাম আমরা বরণ করে। ক্যালিফোর্নিয়া রোডের সাইড দিয়ে সোনালি রোদ্দুরে বসেছে ছোট-বড় গল্পের ঝুড়ি। ভিসি বাংলোর পাশ দিয়ে ছড়িয়ে আছে হলুদ কমলার গাদা ফুলের সারি। লেকপাাড়ে বসেছে আড্ডার হাড়ী। কেউবা পড়েছে রং বেরঙের শাড়ি পাঞ্জাবি, করছে তাদের মুহূর্ত স্মৃতিবন্দী।
পলাশ ফুলের গেলাস ভরি - পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া। চাঁদনি রাতের চাঁদোয়া তলে - বুকের আঁচল দিব পাতিয়া।’ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এমন পলাশ বন্দনা যেন সারাবছর পলাশ ফুলকে ফুটিয়ে রাখে। এমনি এক সৌন্দর্যের সাক্ষী গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সংলগ্ন দুপাশের দুটি পলাশ গাছ।
জ্বলন্ত আগুনের লেলিহান দাবানলের মতো সৌন্দর্যের আগুনের শিখা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে দুপাশের দুটি পলাশ ফুলের গাছ । আই আর চত্বর কিংবা পলাশ তলা যে নামেই শিক্ষার্থীরা গাছটিকে ডাকুক না কেন, বাহারি রূপের মূর্ছনায় যেন কমতি নেই। শীতের বিদায় বেলা থেকে শুরু করে পুরো ফাগুন মাস জুড়ে ছড়াতে থাকে তার মুগ্ধতা। সারাবছরের গাছটির সবুজ কিসলয় বসন্ত আগমনে যেন একেবারে অকৃত্রিম ছুটি নিয়ে নেয়। হাজারও আগুন রঙের বাঁকানো পুষ্পমঞ্জরি পুরো গাছটিকে ছেয়ে রাখে। ফুলের ভিরে যেন পাতা খুঁজে পাওয়া দায়।
বেলা হতে না হতেই ভ্রমর-মৌমাছির গুনগুন শব্দের গুঞ্জন আর পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মেতে ওঠে গাছটির প্রাঙ্গণ। সারাদিন প্রজাপতি আর মৌটুসির মধু নিয়ে কাড়াকাড়ির দৃশ্য যে কারোরই হৃদয়ে মোহিত অনুভূতির সঞ্চার যোগায়। আবার পার্শ্ববর্তী সবুজ বিলের বিশুদ্ধ বাতার এক রত্তি সুখের খোরাক যোগায় সৌন্দর্য প্রেমীদের মনে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সারাদিনের পড়ালেখার ক্লান্তি দূর করতে এই সৌন্দর্যের জুড়ি নেই। সারাদিনের ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব, আস্যাইনমেন্ট আর প্রেজেন্টেশনের ফাঁকে সৌন্দর্যের স্পর্শ নিতে ভুলছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। চত্বরটিতে সকাল থেকে শুরু করে রাতের আঁধার মেখে ঘরে ফেরে তারা। কেউ ছবি তুলতে, কেউ ফুল কুড়াতে, কেউ পূজার অর্ঘ্য জোগাতে, আবার কেউবা প্রিয়জনের খোঁপায় পলাশের ছোঁয়া দিয়ে মাতিয়ে রাখে এই আঙিনা।
জানা যায়, গাছটির রয়েছে একটি ইতিহাস। ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার এক যুগ পূর্তিতে গাছটি নিজ হাতে রোপণ করেন তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গাছটি একই সঙ্গে সাবেক-বর্তমান সবার মনেই স্থান করে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থীবান্ধব প্রয়াত শিক্ষক কাজী মশিউর রহমানেরও গাছটির সঙ্গে অত্যন্ত সখ্যতা ছিল। তার জীবদ্দশায় প্রায়ই গাছটির প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের আদর্শিক কথা শোনাতেন। সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতে তার মৃত্যুর পরে, গাছটির তলায় কাজী মশিউর রহমান স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে এই সময়কার আবেগ, ভালোবাসা, স্মৃতি, বেদনা, আহ্লাদ আর বর্ণিল ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে এই পলাশ গাছের জীবন্ত উপাখ্যান।
এমএসএম / এমএসএম

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় বাকৃবির ১২ গবেষক
