ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

তাপপ্রবাহ বা হিটওয়েভ মোকাবিলায় যা করবেন


সকালের সময় ডেস্ক photo সকালের সময় ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩-৪-২০২৪ দুপুর ৪:৫২

হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহ এমন এক অবস্থা, যখন একনাগারে বেশ কিছুদিন কোনো স্থানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করে। বৈশ্বিক আবহাওয়া দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বর্তমানে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। দেশের তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করছে। জনজীবনে দেখা দিচ্ছে চরম অস্বস্থি। তাপমাত্রার সঙ্গে জনজীবনের স্বস্থি বা অস্বস্থি কেন বিষয়টি বুঝতে হলে মানবদেহ কীভাবে তাপমাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে আছে, আগে একটু অনুধাবন করা প্রয়োজন। মানবদেহ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সচল থাকে।

ব্যত্যয় হলে দেহ অচল হয়ে পড়ে। দেহের বাইরের তাপমাত্রা যা-ই থাকুক, মানবদেহের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা সবসময় নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকে। সাধারণত ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলো এর গণ্ডি। এ থেকে একটু এদিক-সেদিক হলেই বিপর্যয় নেমে আসে। যেমনটি আমরা জ্বরের সময় অনুভব করি। জ্বরে দেহের অভ্যন্তরস্থ তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়ে পড়ে। মানবদেহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মস্তিষ্কে হাইপোথেলামাস নামক প্রাকৃতিক সেন্সর বসানো আছে।

এটির কাজ হলো, কোনো কারণে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক দেহ থেকে অতিরিক্ত তাপ বের করে দিতে সংকেত প্রদান করা। দেহে তখন প্রচুর ঘাম হয়। ঘাম দেহ থেকে তাপ শোষণ করে বাষ্পীভূত হয়ে বাতাসে বিলীন হয়ে যায়। ফলে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আবার যখন পরিবেশে তাপমাত্রা কমে যায়, তখন সে ত্বকের রক্তনালির সংকোচনের মাধ্যমে তাপ সংরক্ষণ করে। এভাবে দেহ একটি নির্দিষ্ট গণ্ডিতে নিজ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের রাখার চেষ্টা করে। দেহের অভ্যন্তরে তাপের প্রধানতম উৎস হলো মেটাবলিজম বা খাবারের পরিপাক প্রণালী, ইনফেকশন ও কায়িক শ্রম।

এছাড়া বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রাও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। দেহের অভ্যন্তরস্থ বা দেহের বাইরে পরিবেশের তাপমাত্রায় কিছুটা তারতম্য হতে পারে। কিন্তু এই তারতম্য মাত্রাতিরিক্ত হলে দেহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামাল দিতে পারে না। তখনই বিপত্তি দেখা দেয়।তাপপ্রবাহে দেহে যে পরিবর্তনগুলো দেখা দেয়, তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে প্রচুর ঘামের ফলে দেহ থেকে জলীয় অংশ বের হয়ে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। বমিভাব, মাথা ঘোরানো, মাথাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। দেহে ক্লান্তি অনুভূত হয়। পেশিতে খিল ধরে। বেশি পিপাসা পায়। অনেক সময় ত্বকে ফোস্কা পড়ে অথবা পা ফোলে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে। একে বলা হয় হিট স্ট্রোক।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজন ছাড়া রোদে না যাওয়া, প্রচুর পানি পান করা, ঢিলাঢালা পোশাক পরা, হজমযোগ্য খাবার গ্রহণ করা, বাসী খাবার না খাওয়া, তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়া, ডাবের পানি, তরমুজ, শশা শরীরের তাপনিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। গরুর মাংস, গ্রিন টি, ওটস শরীর উত্তপ্ত করে। শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থদের কায়িক পরিশ্রম না করা, অসুস্থবোধ করলে ঘরে ফ্যানের নিচে অথবা সুযোগ থাকলে এয়ার কন্ডিশনে থাকার চেষ্টা করুন। বেশি খারাপ লাগলে হাসপাতালে যাবেন। এ সময়ে সতর্ক থাকুন ও নিরাপদে থাকুন।

 

Israt / Israt