ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আধুনিক চিকিৎসায় মূত্রনালি ক্যানসারমুক্তি সম্ভব


সকালের সময় ডেস্ক photo সকালের সময় ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯-৪-২০২৪ দুপুর ১২:৯

মূত্রনালি ক্যানসারে প্রাথমিকভাবে অস্ত্রোপচারই নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা। তবে দীর্ঘদিন ধরে আক্রান্ত রোগীর কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। মূত্রনালিতে ক্যানসার শুরুতেই শনাক্ত করা গেলে নিরাময়ও সম্ভব। ষাটোর্ধ্ব যে কারও এ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে ষাটোর্ধ্ব বয়সী নারীর ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

উপসর্গ : মূত্রনালি ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না। পরবর্তী সময় কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবের ধারা চিকন হয়ে যাওয়া ও পরিমাণ কমে যাওয়া, ঘনঘন প্রস্রাবের চাপ অনুভব করা, অজান্তে প্রস্রাব ঝরা, প্রস্রাব করতে কষ্ট হওয়া, ঘনঘন প্রদাহ, মূত্রনালি থেকে রক্ত ও রস ঝরা এবং মূত্রনালি ফুলে যাওয়া।

চিকিৎসা পদ্ধতি : রোগের অবস্থা ও মূত্রনালির কোন অংশ আক্রান্ত, তার ওপর নির্ভর করে এ রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি। রোগীর বয়স, লিঙ্গ, রোগের বিস্তারের ওপর এটা নির্ভরশীল। এ রোগের চিকিৎসার মধ্যে অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি অন্যতম। তবে প্রাথমিকভাবে অস্ত্রোপচারই এ রোগের নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা। কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি দেওয়ারও প্রয়োজন হয়ে থাকে।

শল্যচিকিৎসা : ক্যানসার ছড়িয়ে পড়লে কারও কারও মূত্রথলিসহ মূত্রনালি কেটে ফেলতে হয়। কারও কারও পুরুষাঙ্গের কিছু অংশ ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কারও আবার পুরুষাঙ্গ ও মূত্রনালি অপসারণ করারও প্রয়োজন হয়। অবস্থাভেদে কারও লসিকাগ্রন্থিও ফেলে দিতে হয়। নারীর মূত্রথলি, মূত্রনালি, যৌনদ্বার ফেলে দিতে হয়। মূত্রথলি ফেলে দিলে বিকল্প পথে প্রস্রাব নির্গমনের ব্যবস্থা করতে হয়। তবে শল্যচিকিৎসায় কিছু জটিলতাও তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে অবশকরণজনিত জটিলতা, খাদ্যনালিতে প্যাঁচ লাগা, মূত্র ঝরা ও সংক্রমণ। এছাড়া মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। তবে এ ঝুঁকি কম ১ থেকে ২ শতাংশ। ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগটি আবার ফিরে আসতে পারে, পচন ধরতে পারে, মূত্রনালি সরু হতে পারে। প্রস্তুতকৃত বিকল্প পথ ছাড়া অন্য পথ দিয়ে প্রস্রাব ঝরতে পারে।

রেডিওথেরাপি : শরীরের বাইরে থেকে ও রেডিও অ্যাকটিভ বড়ি বা পিলেট ক্যানসারে আক্রান্ত জায়গায় বসিয়ে দুভাবে রেডিয়েশন দেওয়া হয়। সপ্তাহে পাঁচ দিন হিসাবে ছসপ্তাহ পর্যন্ত দিতে হয় এ থেরাপি। তবে এর প্রভাবে সুস্থ কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমনÑ অন্য জায়গা দিয়ে প্রস্রাব ঝরা, ত্বক জ্বলে যাওয়া, ডায়রিয়া, দুর্বলতা, মূত্রথলির প্রদাহ, অরুচি, চিকন ধারায় প্রস্রাব হওয়া অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

কেমোথেরাপি : ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে অ্যান্টিক্যানসার ওষুধ ব্যবহার করা যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসার নিরাময়ে এ থেরাপি প্রযোজ্য। তবে এতে রক্তশূন্যতা, বমি হওয়া, রুচি কমে যাওয়া, মাথার চুল পড়ে যাওয়া, মুখে ঘা হওয়া ও সংক্রমণের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মনোবল শক্ত করুন। ক্যানসার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ সঠিক চিকিৎসা পেলে মূত্রনালির ক্যানসার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

 

Israt / Israt