ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরির চিকিৎসা


সকালের সময় ডেস্ক photo সকালের সময় ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮-৫-২০২৪ দুপুর ৪:৬

হাঁটু শরীরের বড় ও ওজন বহনকারী জোড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম। হাঁটুর জোড়া উপরের দিক থেকে ঊরুর হাড় (ফিমার) ও প্যাটলা এবং নিচের দিক থেকে লেগের হাড় (টিবিয়া)- এই তিনটির সমন্বয়ে গঠিত। হাঁটুতে চারটি প্রধান লিগামেন্ট থাকে। এগুলো হলো- ইলাসটিক টিস্যু, যা এক হাড় অন্য হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে, জোড়ার শক্তি প্রদান ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

হাঁটুর লিগামেন্ট : এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (অঈখ), পোসটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (চঈখ), মিডিয়ার কোল্যাটারাল লিগামেন্ট (গঈখ), ল্যাটারাল কোল্যাটারাল লিগামেন্ট (খঈখ)।

লিগামেন্ট ইনজুরি : হঠাৎ মোচড়ানো গতির মাধ্যমে এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্টে সবচেয়ে বেশি ইনজুরি হয়। আঘাত, রিকশা থেকে পড়ে পাওয়া, গাড়ি বা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় লিগামেন্ট ইনজুরি হয়। ফুটবল, বাস্কেটবল, কাবাডি ও হা-ডু-ডু খেলোয়াড়দের লিগামেন্ট ইনজুরি বেশি হয়। মই থেকে পড়ে গেলে, উপর থেকে লাফ দিয়ে পড়লে, গর্তে পড়ে গেলে, সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক স্টেপ ভুল করলে লিগামেন্ট ইনজুরি হয়।

লিগামেন্ট ইনজুরির লক্ষণ : প্রথমে তীব্র ব্যথা, পরে ধীরে ধীরে ব্যথা কমে আসে। ব্যথা হাঁটুর বাইরের পাশে ও পেছনে অনুভূত হবে। হাঁটু ভাঁজ বা সোজা করতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়। আঘাতের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যেই হাঁটু ফুলে যায়। ফোলা ও ব্যথার জন্য হাঁটু নড়াচড়া করা যায় না। দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হবে হাঁটু ছুটে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে। আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারবে।

সঙ্গে মেনিসকাস ইনজুরি থাকলে, রোগী বেশিক্ষণ বসলে হাঁটু সোজা করতে কষ্ট পাবে। অনেক সময় হাঁটু আটকিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে লিগামেন্ট ইনজুরি থাকলে হাঁটুর পেশি শুকিয়ে যায় এবং হাঁটুতে শক্তি কমে যায়। উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে এবং বসলে উঠতে কষ্ট হবে। হাঁটু ইনসিকিউর বা অস্থিতিশীল মনে হবে।

চিকিৎসা : হাঁটু পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। বরফের টুকরা টাওয়ালে বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগালে ব্যথা বা ফোলা কমে আসবে। প্রতিঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দুই ঘণ্টা পর পর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। তবে এটা সহ্যসীমার মধ্যে রাখতে হবে। এই পদ্ধতি আঘাতের ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে। হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে হাঁটু হার্টের লেবেল থেকে উঁচুতে রাখলে ফোলা কম হবে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এনালজেসিক বা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে ৭ থেকে ১০ দিন।

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা : প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও ফোলা সেরে ওঠার পর হাঁটুর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে কি কি লিগামেন্টে ইনজুরি হয়েছে এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করা যায়। এক্স-রে ও এমআরআইয়ের সাহায্য নিতে হবে। প্রয়োজনে সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে।

করণীয় : হাঁটুর লিগামেন্ট আপনাআপনি জোড়া লাগে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাঁটুর পেশির ব্যায়াম ও দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়।

 

Israt / Israt