ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

দ্রুত পণ্য খালাস বিধিমালা বিরোধী আন্দোলনে সিএন্ডএফ


নিজস্ব সংবাদদাতা photo নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ২৭-৭-২০২৪ বিকাল ৭:১০

দেশের আমদানি রপ্তানি খাতকে গতিশীল করার জন্য 'পণ্যচালান দ্রত খালাসকরণ বিধিমালা- ২০২৪' বাস্তবায়ন করতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জাতীয় রাজস্ব বিভাগ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই খাতের সাথে জড়িত সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কর্মচারিরা এই বিধিমালার বিরোধীতা করছেন। এজন্য  গত ১৫ জুলাই থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর এলাকায় আন্দোলন করছে। এর ফলে বিমানবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি হয়েছে। আন্দোলন চলাকালে কাস্টসম বিভাগে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের মারধর করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিমান বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ন স্থানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যবসায়ীরা দ্রুত এর সমাধান দাবী করেছেন।

বিদেশি পণ্যের বড় একটি অংশ আমদানি হয় বিমানবন্দর দিয়ে। পরিমাণ বেশি হলে তা আসে কাস্টমসের কার্গো শাখার মাধ্যমে। অল্প হলে আসে কুরিয়ারের মাধ্যমে। এতদিন দুই ধরনের পণ্য খালাসে দলিলপত্র জমা দিত অনুমোদিত সিএন্ডএফ এজেন্ট। প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধে কুরিয়ারের পণ্য খালাসে গ্রাহক হয়রানি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, কর ফাঁকিসহ নানা অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপি কুরিয়ারের পণ্য খালাস করে কুরিয়ার কোম্পানি নিজেই। বাংলাদেশেও এ ব্যবস্থা চালুর তাগিদ ছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার।

এমন প্রেক্ষাপটে কাস্টমস ব্যবস্থার আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে দ্রুত পণ্য খালাসের এক্সপ্রেস বিধিমালা জারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। যা সম্প্রতি কার্যকর হয়। এতে বন্ধ হয় কুরিয়ারে সিএন্ডএফ এজেন্টদের কাজের সুযোগ।

আন্দোলনকারীরা বলছে, সম্প্রতি কুরিয়ার শাখা থেকে দ্রুত পণ্য খালাসে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়াডিং অ্যাসোসিশনের (বাফা) নেতা ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যোগসাজসে নতুন একটি আইন পাস হয়। এই আইনটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রায় পাঁচ হাজার কর্মচারী সদস্য বেকার হয়ে পড়বে। আইনটি বাতিলের জন্য এরই মধ্যে ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, কুরিয়ারের পণ্য খালাসের সুযোগ পাচ্ছে ৩০টি কোম্পানি। সিএন্ডএফ নেতাদের হুঁশিয়ারি, সমান সুযোগ না থাকলে কাউকে কাজ করতে দেয়া হবে না।

জানা গেছে, এসব জটিলতায় কুরিয়ারের পণ্য খালাস প্রায় বন্ধ। একদিকে, সিএন্ডএফ এজেন্টদের কাজের সুযোগ নেই। অন্যদিকে, বিধিমালা অনুযায়ী এসাইকুডা সিস্টেমে পরিবর্তন না আসায় কুরিয়ার কোম্পানিগুলো নথি জমা দিতে পারছে না। ঢাকা কাস্টম হাউসের হিসাবে, কুরিয়ারে দিনে গড়ে দুই হাজার চালান খালাস হয়। সি এন্ড এফ এর আন্দোলনের ফলে সারাদেশে চলমান জাতীয় সংকটের মধ্যে নতুন করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পণ্য খালাসের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী ও গ্রাহকেরা। আন্দোলনকারীরা কাস্টমস বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছেন।

কাস্টমস হাউজে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের উপর হামলা, মারধর, নগদ অর্থ  ও মোবাইল ছিনতাই এর  অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জুলাই ফেয়ারডিল শিপিং লিমিটেড এর সুপারভাইজার মোঃ ইলিয়াস আলী তাঁর প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য বিমান বন্দর থানাধীন কাস্টমস হাউজে গেলে তার উপর হামলা করেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া দূর্বৃত্তরা। এ সময় দুর্বৃত্তরা মোঃ ইলিয়াস আলীর কাছে থাকা ৭২ হাজার টাকা ও একটি আইফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে ইলিয়াস আলী শযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থানায় অভিযোগ করেন। তবে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে আন্দোলনকারীরা।

আন্তর্জাতিক এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি কবির আহমেদ সময়ের আলোকে বলেন, পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য স্যাম্পল প্রোডাক্ট' বা নমুনা পণ্য আনা নেওয়া করা হয় আন্তর্জাতিক এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস এর মাধ্যমে। গ্রাহকের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ও ভোগান্তি হ্রাসের কথা বিবেচনা করে জরুরি পণ্য, জরুরি ওষুধ, নমুনা পণ্য, উপহার সামগ্রী স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দ্রত খালাস করা যাবে। তিনি বলেন- মানুষ প্রত্যাশা করে পণ্যটি দ্রুত খালাস হোক। পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রীতার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সরকার এ দীর্ঘসূত্রতা দূর করার জন্য ৩০ কেজির নিচের পণ্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে খালাস করতে চায়। এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস নিজেদের দায়িত্বে কাস্টমস সিস্টেমে পেমেন্ট জমা দিয়ে দ্রুত খালাস করতে পারবে। এটি এমন এক প্লার্টফর্ম, যেখানে সকল পক্ষ স্বচ্ছ পদ্ধতিতে দেখতে পারবে পণ্যটির অবস্থান। ব্যংকের মাধ্যমে অনলাইনে পেমেন্ট দেওয়ার ফলে সরকার যথাযথ রাজস্ব পাবে। রাজস্ব বিভাগও দেখতে পারবে পণ্যটির সর্বশেষ অবস্থান। এ কাজের সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সরকার যখন তা বাস্তবায়ন করতে শুরু করল, তখন সি এন্ড এফ এর পক্ষ থেকে বাঁধা সৃষ্টি করা হলো। তারা এটিকে কালো আই বলে বিরোধিতা করছে।

এ বিষয়ে কথা হয় সি এন্ড এফ এর সভাপতি মিজানুর রহমান এর সাথে। তিনি সময়ের আলোকে, ই কর্মার্সের নামে কুরিয়ার সার্ভিস পন্য নিয়ে আসে আমরা ক্লিয়ারিং করি। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী এখন কুরিয়ার সার্ভিস সেই পন্য এনে ক্লিয়ার করবে। ৬৬ বছর ধরে এ কাজ সি এন্ড এফ করে আসছে। সি এন্ড এফকে বাদ দিয়ে এয়ার সার্ভিস পোস্টাল এর নিবন্ধন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে পণ্য খালাস করানোর বিরোধী আমরা।

তিনি বলেন, আমাদের ৬ হাজারের মতো লোক এখানে কাজ করে। তাদের বাদ দিয়ে ৩০ জনের এক সিন্ডিকেটকে কাজ দেয়া হচ্ছে, এটা রাষ্ট্রের জন্য কোনোভাবেই এটা ভালো না। আমরা মেনে নেবো না।

তিনি বলেন, যেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা, ট্যাক্স ফাকির অভিযোগ রয়েছে সেগুলো বাদ দিয়ে কাজ দেয়া হোক। দ্রুত পণ্য খালাস হোক, এটি আমরাও চাই। আমরা দিতে প্রস্তুত। না পারলে অন্য কাউকে দেয়া যেতে পারে।

বাজেটের পর থেকেই সংশ্লিস্টদের চিঠি দেয়া সহ আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি। গ্রাহকদের মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি দাবী করেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

Sunny / Sunny

ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন: এনবিআর চেয়ারম্যান

শাহজালালে নারী যাত্রীর লাগেজ থেকে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন জব্দ

চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়বে ৪১ শতাংশ, বৈঠকে বসছে নৌ মন্ত্রণালয়

ইলিশের দেখা মিললেও দামে হাত পোড়ার জোগাড়

৮০ টাকার নিচে নামছেই না সবজি

এক মোটরসাইকেলে ৪ জন, প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ৩

পেঁয়াজের ঝাঁজে পুড়ছে ক্রেতার পকেট, খুচরায় কমেনি দাম

আন্দোলনের জেরে এনবিআরের আরও ৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত

সরবরাহ বাড়ার পরও ইলিশের কেজি ২ হাজারের বেশি

জ্বালানি তেল কিনে গত বছর সাশ্রয় ১৪০০ কোটি টাকা: ফাওজুল কবির

বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই

প্রথম ১০ দিনে ১ লাখ করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল

চাপে ভারতের অর্থনীতি, বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড