ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

আজ আওয়ামী লীগের শক্তি পরিমাপের দিন


শামীম আহমদ photo শামীম আহমদ
প্রকাশিত: ৪-৮-২০২৪ রাত ১২:০

৭৫ বছর রাজপথে সংগ্রাম করা দলটি হঠাৎ এমন একটি সংকটে পরবে তা কেহই ভাবতে পারেনি। খোদ দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেও এমন কঠিন আন্দোলন মোকাবিলা করেনি। ৪৫ বছরের সভাপতির চেয়ার ধরে রেখে ৪ বার প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করছেন তিনি। দুর্দিনে আওয়ামী লীগের সত্যিকারের নেতা কর্মীর তাদের ত্যাগের পরীক্ষা দেবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের চলমান আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা ও ঢাকার বাইরের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের মহল্লায় মহল্লায় বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি সকল ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান করতে নির্দেশ দিয়েছে। পার্টির শীর্ষ নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী আজ ৪ আগষ্ট দিনটি হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শক্তি পরিমাপের দিন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুতেই বাংলাদেশ ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালিয়ে গিয়েছে। একই সাথে রাতের অন্ধকারে বোরকা পরে ইডেন কলেজের দুই নেত্রী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কলেজ ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রী নেত্রীকে হলের খুঁটির সাথে বেঁধে সাধারণ ছাত্রীরা মারধর করছে। বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের ছাত্রী নেত্রীকেও হলের খুঁটির সাথে বেঁধে মারধর করে ছেড়ে দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া সাধারণ ছাত্রীরা। কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক কক্ষ ভাংচুর করে সাধারণ ছাত্ররা তার কক্ষ থেকে সকল আসবাপত্র ভাংচুরকরে। সাধারণ সম্পাদকের সেই আবাসিক রুম থেকে নানাধরণের অস্ত্র উদ্ধার করে। সেই সময় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র এলাকায় দেখা গিয়েছিল। অবশেষে সেই যুবলীগ নেতাদের আর দেখা যায়নি। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের মধ্যে বহু লোক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। কিছু ব্যবসায়ী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হয়েছে, সেই উপদেষ্টা আবার বিশেষ বিবেচনায় শতো শতো কোটি টাকা বিশেষ বিবেচনায় ব্যাংক ঋণ নিয়েছে। অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক অন্যের সম্পদ দখল করে নিজেদের পকেট ভরিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টাইলে কোট পরা নেতারা আজ কতোটুকু পারবে তাদের শক্তি জানান দিতে?

শুরুতে আন্দোলন সভা-সমাবেশের মধ্যে স্থির থাকলেও ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তব্যে কোটা আন্দোলনকারীদের “রাজাকারের নাতি-পুতি” হিসেবে অভিহিত করেন, তিনি বলেন, "মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা চাকরি পাবে না, তাহলে চাকরি পাবে রাজারের বাচ্চারা"? প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ব্যাঙ্গ করে “তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার; কে বলেছে? কে বলেছে? স্বৈরাচার, স্বৈরাচার” এবং “চাইতে গেলাম অধিকার; হয়ে গেলাম রাজাকার” স্লোগান দেয়। এর পরেরদিন ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা, মন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ নষ্ট করার অভিযোগ আনেন। একই দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের উপর রড, লাঠি, হকি স্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। একই সাথে পুলিশও লাঠি, রাবার বুলেট দিয়ে হামলা করে। প্রতিবাদে আন্দোলনকারীও তাদের দিকে ইটের টুকরা ছুড়ে ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসব হামলায় ১৬ জুলাই থেকে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু সাইয়িদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে আন্দোলন স্ফুলিঙ্গের মত পুরো দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনান্য সংগঠন, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ দিয়ে ও ইন্টারনেট বন্ধ করেও আন্দোলন থামাতে কার্যত ব্যর্থ হলে সরকার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে এবং মাঠে সেনাবাহিনীকে নামায়। এইসব ঘটনায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী আহত হওয়ার পাশাপাশি ২৬৬ জনের অধিক নিহত হন এবং পুলিশ ৫০০ মামলা করে ১০,৫০০-এর অধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করে। ২১ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে ও সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। ২৩ জুলাই এই বিষয়ে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে।

একদিন আগে আন্দোলনকারীদের ৬ সমন্বয়ককে ডিবি পুলিশ ছেড়ে দিলে তারা বিবৃতি দিয়ে বলে ডিবি পুলিশ জোর করে তাদের দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার পত্র লিখেয়েছে। তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেনি। গতকাল ৩ আগষ্ট শনিবার প্রধানমন্ত্রী দলীয় ও জোটের নেতাদের সাথে জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, আন্দোলনকারীদের জন্য গণভবনের দরজা খোলা তারা যদি আমার সাথে আলোচনা করে তাহলে সমস্যার সমাধান হবে, প্রয়োজনে ছাত্ররা তাদের অবিভাবকের সাথে আলোচনা করুক আমার সাথে। আমি সংঘাত চাই না। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। একইদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে আন্দোলনকারীরা বক্তব্য দিয়ে বলে, আমরা ছাত্রদের জেলে বন্দি রেখে আলোচনায় যেতে পারিনা। আলোচনার সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন আর ৯ দফা নেই। এখন ১ দফা, তা হচ্ছে- "স্বৈরশাসক খুনী শেখ হাসিনার পদত্যাগ"। সেই বক্তব্যের সময় ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক সাধারণ মানুষ চার দিক থেকে সমুদ্রের জলের মতো মিশতে থাকে। সাইন্সল্যাবরেটরী শাহবাগ নীলক্ষেত চানখারপুল পুরো থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার পাশে মানুষ দাঁড়ানোর তিল ঠাই নেই।

রাজধানীর ঢাকা চট্টগ্রাম সড়ক, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, সংসদ ভবন, মিরপুর, গুলশান, বাড্ডা, রামপুরা, পল্টন ও মতিঝিল সরজমিন পরিদর্শন করে দৈনিক সকালের সময় পুরো শহরের পরিস্থিতি থমথমে অবস্থায় পেয়েছে। জনসাধারণের কোন যানবাহন চলতে দেয়নি আন্দোলনকারী ছাত্ররা। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু জরুরি যানবাহন সড়কে অবস্থানকারী ছাত্রদের কাছে কৈফিয়ত দিয়ে চলতে দেখা গেছে। সাইনবোর্ড থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি জীপে কিছু সেনা সদস্য অস্ত্র সম্মুখে তাক করে আসতেছিলো। সেই অবস্থায় ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনীর গাড়ি গতিরোধ করে তাদের অস্ত্র নামিয়ে যেতে বাধ্য করে। সেনা সদস্যরা তাদের অস্ত্র নামিয়ে ফেলার সাথে সাথে ছাত্ররা মিছিল দিয়েছে- "এইমুহুর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার" সেই স্লোগানে সেনা সদস্যরা ছাত্রদের স্যালুট প্রদর্শন করে এবং হাসি মুখে তাদের জীপে বসে চলে যেতে দেখা যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক শহীদ মিনারের ছাত্রদের সেই মঞ্চে বক্তব্য দিয়ে বলছেন, আজ থেকে এই তরুণ যুবক ছাত্ররাই আমাদের নেতা। এই আন্দোলনকরী শিক্ষার্থীরাই আমার ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপকার। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, আমরা যা এতোদিন পরিনি তা তোমারা পেরেছো। তোমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। আজ থেকে তোমরাই নতুন বাংলাদেশ।

এমএসএম / এমএসএম

রমজানের এক সপ্তাহ আগে নির্বাচনের প্রত্যাশা সালাহউদ্দিনের

রুমিন ফারহানাসহ যে কোনো নারীর প্রতি স্লাটশেমিংয়ের বিরুদ্ধে হাসনাত

শোকজের জবাব দেবেন বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান

কাঠামোগত পরিবর্তন না এলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করব: নাহিদ ইসলাম

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ফিরোজায় পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী

পাঞ্জাবি পরা একজন আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছেন : রুমিন ফারহানা

বিএনপির আ.লীগ বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা : হাসনাত আবদুল্লাহ

রাষ্ট্রের সিস্টেমটাই হয়ে গেছে ‘দখলের’ : মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনী স্বীকৃতি দিতে হবে, সংস্কার না করে পুর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পরে না-পীর সাহের চরমোনাই

যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র ফিরবে না: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সতর্ক থাকতে বললেন গয়েশ্বর

এনসিপির নেতার কথোপকথন ভাইরালঃ ‘দেখো আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না’