মহানবী সা.-এর সাহচর্য লাভই প্রিয় কাজ ছিল যে সাহাবির

মক্কার অদূরে অদ্দান উপত্যকায় বসবাস করতো গিফার গোত্র। মক্কার কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলা এই পথ ধরে সিরিয়া যাতায়াত করতো। এসব কাফেলার নিরাপত্তার বিনিময়ে যে সামান্য অর্থ লাভ হতো এর মাধ্যমেই তারা জীবিকা নির্বাহ করতেন। কোনো কাফেলা তাদের দাবি অনুযায়ী অর্থ না দিলে লুটতরাজ চালাতে। ডাকাতি, রাহাজানিই ছিল তাদের পেশা।
এই গোত্রের সন্তান ছিল জুনদুব ইবনে জুনাদাহ। যিনি আবু জার নামে পরিচিতি। বাল্যকাল থেকেই তিনি অসীম সাহস, প্রখর বুদ্ধিমত্তা ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ছিলেন। জাহিলী যুগের প্রথম ভাগে তার পেশাও ছিল রাহাজানি। গিফার গোত্রের একজন দুঃসাহসী ডাকাত হিসেবেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
তবে জাহেলী যুগ থেকেই তিনি মুর্তিপূজা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতেন। গোত্রের লোকেরা অজ্ঞতাবশত যে মূর্তির পূজা করতো তা কখনোই তাকে প্রশান্তি দিতো না। তিনি এই মূর্তি পূজা ও গোত্রের লুটতরাজ পেশা থেকে সব সময় নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন এবং অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন এমন কোনো মহা মানবের যিনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখাবেন, সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করবেন।
একদিন তিনি শুনতে পেলেন মক্কায় এক ব্যক্তির আবির্ভাব হয়েছে যিনি মানুষকে এক আল্লাহর পথে আহ্বান করছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি নিজের ভাইকে মক্কায় পাঠালেন। কিন্তু তার ভাই ফিরে এসে যে খবর দিলেন তাতে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তাই নিজেই মক্কায় গেলেন।
মক্কার পরিস্থিতি তখন থমথমে। কেউ ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ্যে জানাতে সাহস করতে পারছেন না। কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছেন শুনলেই মক্কার মুশরিকেরা তার ওপর হামলে পড়ছে, অত্যাচার করছে। এই পরিস্থিতিতে মক্কায় কে আল্লাহর রাসূল ও মুসলমানদের বন্ধু আর কে শত্রু তা নির্ধারণ করা মুশকিল । এজন্য আবু জার কাউকে মুহাম্মদ সা. সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার সাহস পেলেন না। সারাদিন মক্কায় কাটিয়ে দিলেন। রাতে মসজিদুল হারামের এককোণে শুয়ে পড়লেন। আলী রা. তাকে দেখে বুঝতে পারলেন লোকটি মুসাফির। তিনি তাকে নিজের বাড়িতে মেহমান হিসেবে নিয়ে গেলেন।
পরদিন আলী রা.-এর বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি আবারো রাসূল সা.-এর খোঁজ করতে লাগলেন, কিন্তু অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে কাউকে জিজ্ঞেস করার সাহস পেলেন না। দিন শেষে আগের রাতের মতো মসজিদুল হারামে শুয়ে পড়লেন। এদিনও আলী রা. তাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। এভাবে দ্বিতীয় দিন কাটিয়ে আবু জার তৃতীয় দিনও আলী রা.-এর বাড়ি থেকে রাসূল সা.-এর খোঁজে বের হলেন। কিন্তু সেদিনও হতাশ হয়ে তিনি মসজিদুল হারামে শুয়ে পড়লেন। এদিনও তাকে দেখে নিজের সঙ্গে নিয়ে গেলেন আলী রা.। তবে প্রথম দুদিন তিনি আবু জারকে তার আগমনের কারণ সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস না করলেও আজ তার মক্কায় আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলেন।
আবু জার তার নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে মক্কায় আগমনের কারণ জানালেন। সব শুনে আলী রা.-এর মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। তিনি তাকে পরদিন সকালেই রাসূল সা.-এর কাছে নিয়ে গেলেন। রাসূল সা. তাকে কোরআনের কিছু আয়াত শুনালেন এবং ইসলামের কালিমা পাঠ করালেন।
ইসলাম গ্রহণের পর আবু জার রা. তার গোত্রে ফিরে যান। খন্দক যুদ্ধে পর তিনি মদিনায় যান। মদিনায় এসে তিনি রাসূল সা.-এর কাছে তার খেদমত করার আবেদন করেন। রাসূল সা. তার আবেদন মঞ্জুর করেন। মদিনায় অবস্থানের পুরোটা সময় তিনি রাসূল সা.-এর সেবায় কাটাতেন। এটাই ছিল তার প্রিয় কাজ। তিনি নিজেই বলতেন, রাসূল সা. এর খিদমত করতাম আর অবসর সময়ে মসজিদে এসে বিশ্রাম নিতাম।
(আসহাবে রাসূলের জীবন কথা, ১/১৬০)
Aminur / Aminur

মক্কা ও মদিনার ইমামদের ফেসবুক আইডি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে

ইফতারির আনন্দ ভাগ করে নেই

মসজিদের ফান্ডের টাকায় ইফতার আয়োজন করা যাবে?

পবিত্র শবে বরাত আজ

কাল থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা, আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা

২৯ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

২৮ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

আজকের নামাজের সময়সূচি

শরীর ও মনকে রমজানের জন্য প্রস্তুত করুন এই উপায়ে

আজকের নামাজের সময়সূচি

০৮ ডিসেম্বর : নামাজের সময়সূচি

০৫ ডিসেম্বরঃ আজকের নামাজের সময়সূচি
