ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

কোরবানির পশু জবেহ করার বিধান


আমির হামজা ভূঁইয়া photo আমির হামজা ভূঁইয়া
প্রকাশিত: ৪-৬-২০২৫ রাত ৯:১০

ইসলামের একটি মহান নিদর্শন হলো কুরবানি। আল্লাহ তা'লার নির্দেশ হচ্ছে "তোমরা সালাত আদায় করো ও কুরবানি করো।"আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বন্ধু হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন এবং  ইব্রাহিম আলাই সালাম সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।নিজ পুত্র কুরবানি করার মত পরীক্ষায় অবতীর্ণ  হয়েছিলেন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম। কুরবানী ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের নীতি। নিম্নে এই বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

কুরবানীর শরয়ী মর্যাদা : কুরবানী করা ওয়াজিব। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেছেন সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানীর করবে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর( রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মদিনায় ১০ বছর অবস্থানকালে প্রতি বছর কোরবানি করতেন।ইমাম আবু হানিফা (র:) আবু ইউসুফ (র:) ইমাম নাখয়ী (র:)এর মতে কুরবানী করা সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব।

কুরবানীর ফজিলত :
কুরবানী একটি ফজিলত পূর্ণ ইবাদত। কুরবানীর ফজিলতের ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসে অনেক বর্ণনা এসেছে। হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত।

তিনি বলেন একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাহাবীগণ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কুরবানী কি? এর জবাবে তিনি বললেন এটা তোমাদের পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম এর সুন্নাহ।

তাকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এতে আমাদের কি পূণ্য রয়েছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন, প্রতিটি লোমের পরিবর্তে নেকী রয়েছে। তাকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো,  পশম ওয়ালা পশুদের কি হবে? রাসূল (সা:)বলেছেন পশমওয়ালা পশুর প্রত্যেক পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকি রয়েছে।

কুরবানীর শক্তি হচ্ছে তাক্বওয়া ও ত্যাগ,  যার ভিত্তি হচ্ছে আল্লাহ প্রেম। যে কুরবানীতে লৌকিকতা রয়েছে, গোস্ত খাওয়ার নিয়ত রয়েছে সেই কুরবানী আল্লাহর কাছে কবুল হবে না  । কারণ আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহর কাছে কুরবানীর গোশত ও রক্ত পৌঁছে না পৌঁছে কেবল তোমাদের তাকওয়া।

কুরবানির মাসায়েল 
চার প্রকার লোকের উপর কুরবানি দেয়া ওয়াজিব, 
১/যার উপর যাকাত ওয়াজিব, 
২/ মান্নাতকারীর উপর, 
৩/অছিয়তনামা করা, 
৪/গরীব লোক কুরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করিলে,
কুরবানি কবুল হওয়ার জন্য শর্ত ২ টি:
১/ হালাল উপার্জন, 
২/ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, 
পশুর সাতটি বস্তু খাওয়া হারাম:
প্রবাহিত রক্ত,লিঙ্গ, অন্ডকোষ, প্রসাবের থলি,পিত্ত,চামড়া ও গোস্তের মাঝে জমাট বিচি,হাড়ের ভিতরের সাদা রগ।

লেখক---মুফতি মোহাম্মদ ইসমাঈল ভূইয়া। 
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), তালশহর করিমিয়া ফাযিল মাদ্রাসা।

এমএসএম / এমএসএম