ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ


রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি photo রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮-৯-২০২৪ দুপুর ৪:৯

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবছার উদ্দীনের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। স্কুল প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবছার উদ্দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কিছু নেতার প্রভাবের কারণে স্কুলের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। এসবের মধ্যে রয়েছে স্কুলের ফি ও জোরপূর্বক কোচিং বাণিজ্য, দোকান ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ, স্কুলের জমি বিক্রয়সংক্রান্ত অনিয়ম, নিয়মিত ক্লাস না নেয়া। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, স্কুলের জমি ক্রয় করার টাকার হিসাবও প্রদান করা হয়নি।

শিক্ষার্থী মো. এহেসান জানায়, কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছি। প্রধান শিক্ষক আবছার উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আরেক শিক্ষার্থী হুমাইয়া জান্নাত জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। এবারকার দাবি ছিল এক দফা- দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের পদত্যাগ। পরে দাবি অনুসারে তিনি পদত্যাগপত্র ম্যানেজিং কমিটি বরাবর জমা দিয়েছেন।

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্কুলের পরিচালনায় অনিয়মসহ ১০টি অভিযোগ তুলে ধরে এক দফা দাবিতে স্লোগান দেয় এবং মিছিল করে। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবছার উদ্দিনের পদত্যাগ কার্যকর করার দাবি জানায়। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বলে জানায়।

কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান শিক্ষক আবছার উদ্দিন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তার দুর্নীতির বিষয়সমূহ নিম্নে পেশ করা হলো।

নিয়োগ বাণিজ্য : দিবা প্রহরী রামপদ নাথ ও আয়া শাহিনা আক্তার হতে (১,৫০,০০০ + ১,৫০,০০০) = ৩,০০,০০০/- (তিন লাখ) টাকা ঘুষ গ্রহণ। তাদের অভিযোগপত্র সাথে দেয়া হয়েছে। স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব আজিজুল হক হতে ৪,০০,০০০/- (চার লাখ) টাকা ঘুষ গ্রহণ। স্কুলের অফিস সহায়ক পদে পধান শিক্ষকের সম্বন্ধীর ছেলে কামরুল ইসলাম জিসানকে নিয়োগ দেন। অথচ তিনি নিয়োগের পর থেকে কোনো দিন স্কুলে না এসে ঠিকই বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। যার স্বাক্ষী সকল শিক্ষক ও কর্মচারী বৃন্দ। কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ। যার প্রমান ব্যাংক স্টেটমেন্ট। যার হিসাব নং ১২৯২, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, গর্জনিয়া বাজার শাখা। 

স্কুলের জমি ক্রয় : জমি ক্রয়ের নামে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ২০,০০,০০০/- (বিশ লাখ) টাকা আত্মসাৎ কিন্তু জমির কোনো হদিস নেই। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের আপন শ্যালক নাছির উদ্দিনের ২৭/০১/২০২০ সালের প্রদেয় দলিলে ৮,১৩,০০০/- (আট লাখ তের হাজার) টাকা, জমি ৬৬ শতক। এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের ট্রান্সক্রিপ্ট ও প্রশংসাপত্র বিতরণে অতিরিক্ত ফি গ্রহণ, যার প্রমাণ অভিযোগ উঠলে ২৫০ (দুইশত পঞ্চাশ) টাকা করে মাস্রটা নাছির উদ্দিনের মাধ্যমে ফেরত প্রদান। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরস্কার না দিয়ে পুরস্কারের টাকা আত্মসাৎ। 
সদ্য অপসারিত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিন ছিলেন প্রধান শিক্ষকের আপন শ্যালক,মহিলা শিক্ষিকা রওশন আরা আক্তার ছিলেন তার স্ত্রী। এছাড়া অন্যান্য সদস্যরা তার আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ জন। এর আগের নিয়মিত কমিটির সভাপতিও ছিলেন উক্ত নাছির উদ্দিন ঐ কমিটিতে প্রধান শিক্ষকের সম্বন্ধি সালাহ উদ্দিনও ছিলেন। এভাবে তিনি কমিটিকে আত্মীয় করণ করে দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন।
প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী নিলামে দিয়ে কোন দিন ঐ টাকা বিদ্যালয় ফান্ডে জমা করেননি। বরং ঐ পুরাতন সামগ্রী দিয়ে তিনি বর্তমান বসবাসের বাসা ও ভাড়া বাসা নির্মাণ করে আরামে বসবাস করছেন। যা নৈশ প্রহরী নুরুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা প্রমাণিত হবে। উক্ত নুরুল আলম ঐ পুরাতন সামগ্রী রাতের আধাঁরে তার বাড়িতে পৌঁছিয়ে দিত। প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিনের মাধ্যমে বিভিন্ন সালের পরীক্ষার্থীদের কাছ হতে নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে টাকা নেন এবং ২০২০ সালে প্রায় ৪৪,০০০/-(চুয়াল্লিশ হাজার) টাকা বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য আদায় করে আত্মসাৎ করে। এ ব্যাপারে জনাব নাছির উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলে ঐ টাকা দিয়ে প্রধান শিক্ষক পান খেয়েছেন। এ ছাড়াও তার নামে আরো বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

স্কুলের অন্য শিক্ষকরা জানান, তারা শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আপরান চেষ্টা চালাচ্ছে। আবছার উদ্দীন ছাত্রদের আন্দোলনে মুখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার পরেও আবারো স্কুলের সুষ্ঠ পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৭ আগস্ট সকালে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে শাহ সোজা রোড় প্রায় ২ কি.মি.সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাছে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ চেয়ে আবেদন পত্র জমা দেন ওই শিক্ষক। তিনি স্বেচ্ছায় প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য শিক্ষা অফিসার নিজে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে বলেন আজকে থেকে এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন সহকারি প্রধান। লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এ বিষয়ে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ চেয়েছেন। তার পদত্যাগপত্র পেয়েছি। অভিযোগগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়ার পর তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এমএসএম / জামান

দর্শনা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

ফেনীতে এলজিইডির প্রকল্পে অনিয়ম, নেপথ্যে দীপ্ত বাবু

আদমদীঘিতে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুই কোচ লাইনচ্যুত

লাকসামে শিক্ষক সমিতির ভবনে গরু-ছাগলের বসবাস

কাউনিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিস্কুট জুস ব্যাগ সহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

দাউদকান্দিতে নদী পুনরুদ্ধার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মা‌নিকগঞ্জ প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শাহানুর ইসলাম

দোহারে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় হেল্প ডেস্ক চালু

জয়পুরহাটে ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্রের সহায়তাকারী ও কম্পিউটার কর্মীদের প্রশিক্ষণ

পরিবেশ রক্ষায় ট্যুরিস্ট পুলিশের মতবিনিময় সভা ও বৃক্ষরোপণ

শান্তিগঞ্জের ইমা যাচ্ছেন হকি খেলতে চীনে

জলবায়ু সংকটে বাস্তুহারা বাড়ছে, সমাধান খুঁজতে রাজশাহীতে কর্মশালা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা শুরু