রাজবাড়ীতে পরকীয়ার অপবাদে দুই ইউপি সদস্যকে মারধর ও কোমড়ে দড়ি বেঁধে নির্যাতন
রাজবাড়ীতে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে কোমড়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। এ বিষয়ে শনিবার এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় ৫জনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল সরকার ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে মাজায় দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করছেন বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রায়হান খান। মারধরে হেলেনা বেগম আল্লাহ্ আল্লাহ্ বলে চিৎকার করেন। এসময় কয়েকজন অকথ্য ভাষায় দুই ইউপি সদস্যকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে হেলেনা বেগমের গলা থেকে চেইন খুলে নেন। চেইন খোলার সময় ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে বলতে শোন যায়, 'এটি বিয়ের সময় আমার স্বামী আমাকে দিয়েছে।' দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করার জন্য পাশ থেকে আরও এক যুবককে লাঠি হাতে নিয়ে তেড়ে আসতে দেখা যায়। পাশাপাশি ঘরের মধ্যে অনেক লোকজন দেখা যায়। কয়েকজনকে মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে ব্যস্ত দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার ও হেলেনা বেগম স্থানীয় পূজা মণ্ডপে পূজা দেখেন। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উজ্জল সরকার মোটরসাইকেলে হেলেনা বেগমকে বাজিতপুর গ্রামে হেলেনার স্বামীর বাড়িতে নামিয়ে দিতে যান। এসময় কয়েকজন ওই বাড়িতে গিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে আসেন। পরে তাদের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকান ঘরে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে হেলেনা বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন খুলে নেয়ার পাশাপাশি দুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। হেলেনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত রায়হান খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার বলেন, হেলেনা বেগমের মোবাইল থেকে একটি ফোন আসে সে শিবরামপুরে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ফোন পেয়েই সেখানে যাই। পরে তাকে রিক্সায় করে বাড়ীতে নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে আমাকে কয়েকজন যুবক ওই মহিলা মেম্বারের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে দুজনকে ধরে এনে টাকা দাবি করাসহ কোমড়ে দড়ি বেধে মারধর করে। এ বিষয়ে ৫জনকে অভিযুক্ত করে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, এ বিষয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
T.A.S / T.A.S