সচ্চরিত্রের অধিকারী পুরুষের মর্যাদা
ইসলামে চরিত্র সুন্দর করার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। যার চরিত্র আদর্শ ও উত্তম হবে তার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে পুরস্কার। স্ত্রীর সঙ্গে সদাচরণকারী পুরুষ জান্নাতি হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সৎভাবে জীবনযাপন করো’ (সুরা নিসা : ১৯)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সমগ্র পৃথিবীই সম্পদ। আর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে সতী-সাধ্বী নারী’ (বুখারি ও মুসলিম সূত্রে মেশকাত : ৩০৮৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আদর্শ মানুষ ও পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার ওই ব্যক্তি, যার চরিত্র সুন্দর এবং সে তার স্ত্রীর কাছে ভালো’ (রিয়াজুস সালেহিন : ২৭৮)। মহানবী (সা.) উত্তম চরিত্র বিষয়ে আল্লাহর কাছে বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট হেদায়েত, আল্লাহর ভয়, সচ্চরিত্র ও অভাব মুক্তির প্রার্থনা করছি।’ (মুসলিম : ৪৮৯৮)
হজরত আবু সুফিয়ান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, ‘রোমান বাদশাহ হিরাক্লিয়াস তাকে নবীজি (সা.) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, মুহাম্মাদ তোমাদেরকে কী করার আদেশ দেয়? আমি বললাম, নবীজি বলেন, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করো না। তোমাদের পূর্বপুরুষ যা বলতেন তোমরা তা ছেড়ে দাও। আর আমাদের নামাজ, সততা, সচ্চরিত্র ও আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার আদেশ করেন।’ (বুখারি : ৪৫৯৩; মুসলিম : ১৭৭৩; তিরমিজি : ২৭১৭)
নৈতিকতা ও উত্তম চরিত্রের নির্দেশে পবিত্র কুরআন বলছে, ‘হে নবী! আপনি মুমিন পুুরুষদের বলেন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি নিচু করে রাখে এবং তাদের গোপনাঙ্গ হেফাজত করে। এটিই তাদের জন্য পবিত্র পন্থা। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের কর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত’ (সুরা নুর : ৩০)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘চোখের ব্যভিচার হলো অন্যায় দৃষ্টিপাত।’ (মুসলিম : ৬৯২৫)
আদর্শ পুরুষের প্রধানতম চরিত্র হলো-অন্তরে আল্লাহর ভয়। কুরআনুল কারিমের ঘোষণা হলো-‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যতটা ভয় তাঁকে করা উচিত। আর তোমরা খাঁটি মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা আলে ইমরান : ১০২)
আদর্শ পুরুষের অন্যতম গুণ, বিনয় ও লজ্জা। এ বিষয়ে হজরত ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে মহানবী (সা.) বলেন, ‘লজ্জা ও ঈমান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সুতরাং এর একটি তুলে নেওয়া হলে অন্যটিও তুলে নেওয়া হয়’ (মেশকাত : ৫০)। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘লজ্জা ও অল্প কথা বলা ঈমানের দুটি শাখা। আর অশ্লীলতা ও বাকপটুতা মুনাফেকের শাখা’ (তিরমিজি : ২০২৭)। মুসলিম শরিফে ইয়াজ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একদিন রাসুল (সা.) আমাদের বললেন, আল্লাহ তায়ালা আমার কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন, যাতে তোমরা বিনয়ী হও। একে অন্যের ওপর গর্ব করবে না এবং রাগও করবে না।’ মসনাদে আহমাদ গ্রন্থে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালার জন্য যে যতবেশি নিচু হবে, নিজেকে বিনয়ী করে রাখবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ততবেশি উঁচু করবেন।’ আল্লাহ তায়ালা আমাদের নৈতিক ও চরিত্রবান, বিনয় ও লজ্জাশীল আদর্শ পুরুষ হওয়ার তওফিক দান করুন।
Aminur / Aminur
মুমিন হৃদয়ে আরবি ভাষার ভালোবাসা
সচ্চরিত্রের অধিকারী পুরুষের মর্যাদা
কোরআনের হৃৎপিণ্ড যে সুরা
আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করলেও সওয়াব
সুস্থতার নেয়ামত রক্ষা করা জরুরি
নববী আদর্শের নওজোয়ান: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন-নুমান রিডার
নিরাপদ জীবনের চার উপাদান
ইসলামে মানবাধিকারের শিক্ষা
ঈমান ধ্বংসকারী ফেতনা থেকে আত্মরক্ষা
মানুষের হক নষ্ট করা পাপ
সাহাবিদের মতো জীবন গড়ার শিক্ষা
ভূমিকম্পে ধ্বংসপ্রাপ্ত সামুদ জাতির কাহিনি