জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসক দের ভূমিকা এবং স্বাস্ব্য সেবার ক্ষেত্রে তাদের বর্তমান অবস্থা
এই বিষয় -এ একান্ত সাক্ষাৎ কারে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ড্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটি সংগ্রামি যুগ্ন মহাসচিব এবং ড্যাব ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শাখার সভাপতি এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ রেজওয়ানুর রহমান সোহেল বলেন। জুলাই বিপ্লবের সময় অত্র হাসপাতালে চোখে গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্র জনতাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। আমরা ১৮ জুলাই হঠাৎ করেই দুপুরের পর থেকে জরুরী বিভাগে প্রচুর পরিমানে চোখের গুলিবিদ্ধ রুগী আসতে থাকে, আমি নিজেও ডিউটি শেষ করে বাসায় চলে গিয়েছিলাম। পরে টেলিফোন পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ছুটে আসি। তখন আমি দেখতে পাই অসংখ্য কচি কচি ছেলে ছাত্র ও সাধারণ জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে জরুরী বিভাগে কাতরাচ্ছে জরুরি বিভাগে ইতিপূর্বে একসাথে এত রোগী কখনো জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আসে নাই।কাজেই জরুরী বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দ্রুত হাসপাতলে অতিরিক্ত চিকিৎসকদের বাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আনা হয় এবং টানা ৭২ ঘন্টা অত্র হাসপাতালে ১২টি অপারেশনের টেবিলে একটানা অপারেশন চলে। জুলাই বিপ্লবে যারা চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে তারা সবাই আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং তারা বেশির ভাগই জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিশ্বাসী বা ড্যাবের চিকিৎসক। কারণ দেশে আওয়ামী সরকার যেখানে আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ প্রশাসন কে নির্দেশ দিয়েছিল তেমনি যারা আহত তারা যেন চিকিৎসা সেবা নিতে না পারে বা নিতে এসে যেন বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়।এবং তৎকালীন পেটুয়া বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয় সেই নির্দেশনা ছিল। তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডক্টর রোকেয়া আন্দোলন চলাকালীন সময় যেন আহত ছাত্র জনতাকে ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা প্রদান করা না হয় এবং তারা যেন চিকিৎসা নিতে গেলে বিভিন ধরনের বাধার এবং পুলিশ হয়রানি ও গ্রেফতারের সম্মুখীন হন।সেটা নিশ্চিত করার জন্য এই হাসপাতালের স্বাচিবের নেতৃবৃন্দের সাথে মিটিং করেন এবং আহত ভর্তি ছাত্র জনতাকে দেখে তাদের শাশিয়ে যান এবং যারা চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে বলেন। সেটা একটা ভিতীকর পরিস্হিতি সৃষ্টি হয়ে ছিল। আগেই বলেছি জুলাই আন্দোলন যারা রাজপথে আন্দোলন করেছিল তারা যেমন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আদর্শের বিরোধী ছিল ঠিক তেমনি যারা হাসপাতালে যেসব চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে তারাও আওয়ামী লীগের আদর্শ তথা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের বিরোধী ছিলেন। চিকিৎসকগন বিভিন্ন ঝুকি নিয়ে আহতদের পরিচয় গোপন রেখে তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। এই সকল চিকিৎসকদের বেশির ভাগই জাতীয়তাবাদী আদর্শের চিকিৎসক তথা ড্যাবের সদস্য ছিলেন। কাজেই এখান থেকেই বুঝা যায় যে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ড্যাব) এর চিকিৎসকগণ আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছিলেন। শুধুমাত্র হাসপাতালে নয়, তারা বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যক্তিগত চেম্বার, প্রাইভেট, নিজস্ব ক্লিনিকে তাদের চিকিৎসা সেবা, অস্ত্রপ্রচার করেছেন।বাংলাদেশের ইতিহাসে যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে তার প্রতিটি ৫২এর ভাষাআন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ৭১ মুক্তিযুদ্ধ, ৯০এর স্বৈরাচার বিরধী আন্দোলন সহ সকল সংগ্রামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা ছিল উজ্জ্বল এবং সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। আপনি যেটা বলেছেন চাঁদাবাজি,টেন্ডার বাজি,দালাল চক্র সেই বিষয়ে আমাদের কানে এসেছে। ড্যাব সব সময় এই ধরনের চাঁদা-বাজি,টেন্ডার বাজি সাথে যারা জড়িত তাদের কে প্রশ্রয় দেয় না। এবং আমাদের নিকট এই ধরনের প্রমান কারোর বিরুদ্ধে থাকলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্হা গ্রহনের নির্দেশ সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রয়েছে। আর দালাল চক্রের উচ্ছেদের ব্যাপারে আমারা কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ ভাবে দালালদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিজান পরিচালনা করা হয় এবং তাদের কে আইনের হাতে সোপর্দ করা হয়। গত জুলাই আন্দোলন মোট =১,০৮৭ জন রুগী চোখে গুলিবিদ্ধ হয়। ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহন করেন।এর মধ্যে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,ঢাকা তে ৬৯৯ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল(সিএমএইচ)ঢাকা তে১৩৭ জন,ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনষ্টিটিউট- এর ১২২ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৭ জন,বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর ৩৮ জন,চট্টগ্রামে আই ইনফারমারী এন্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্স -এ১৪ জন।জুলাই বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে এন আই ও তে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ কারীদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণ দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন এক চোখে ৪৯৩ জন,উভয় চোখে ১১জন,গুরুতর দৃষ্টি সন্পতা এক চোখে-৪৭ জন,উভয় চোখে ২৮ জন,দৃষ্টি স্বল্পতা-একচোখে ৪৩ জন।অস্ত্র প্রচার এবং চিকিৎসার পরে উভয় চোখে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন ৫৮ জন।চোখে গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে ২১ জন কে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারী ভাবে এন আই ও থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।এর মধ্যে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউটে ১২ জন, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল ১ জন, বামগ্রুণ্ড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল ১ জন, তুরস্কের আংকারা এটিলিট সিটি হাসপাতালে ৭ জন, উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে চীন,নেপাল,ফ্রান্স, আমেরিকা,সিঙ্গাপুর,লন্ডন, ইংল্যান্ড থেকে আন্তর্জাতিক মানের চক্ষু চিকিৎসক গন জুলাই বিপ্লবের চোখে গুলি বৃদ্ধ জুলাই যোদ্ধাদের উন্নত বিশ্বমানের চক্ষুর চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এসেছেন এবং তারা জুলাই যোদ্ধাদের দেখেছেন এবং অস্ত্রপাচার করেছেন। আমরা হাসপাতাল (NIOH) কর্তৃপক্ষ জুলাই আন্দোলনের এক দম প্রথম থেকেই আন্দোলনকারী জুলাই যোদ্ধাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা,পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন, ঔষধ সরবরাহ করেছি। প্রতিদিন এন আই ও তে ৩ থেকে ৪ হাজার রুগী চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে আসে।তারা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১০ টাকার টিকিট কেটে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।এখানে ক্যাটারাক্ট,জেনারেল অপথালমোলজি,পেডিয়েট্রিক অপথালমোলজি, রেটিনা,কর্ণিয়া,গ্লুকোমা,কমিউনিটি, অপথালমোলজি, নিউরো অপথালমোলজি এই সকল সাব স্পেশালিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৬০থেকে৭০ জন রুগীর ডে -কেস হিসাবে ছানি অপারেশন করা হয়। এ-ই হাসপাতালে বিনা মূল্যে ছানি অপারেশনের লেন্স সরবরাহ করা হয়। এই হাসপাতাল প্রায় শতভাগ দালাল মুক্তএবং পরিস্কার পরিছন্নতা এবং সেবার মান অনেক ভালো।জুলাই আন্দোলনে আহত ছাত্র জনতাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ড্যাব এবং জিয়াউর রহমানফাউন্ডেশন।আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান,পূর্ণবাসন, এবং বিভিন্ন সময় জুলাই যোদ্ধাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে,যার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান এবং নির্দেশনা ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং ড্যাব প্রধান পৃষ্ঠপোষক জনাব তারেক রহমান।ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এ রুগি রা চিকিৎসা সেব গ্রহণ করতে কিছু টা ভোগান্তির স্বিকার হন কথা টা অস্বিকার করার উপায় নেই, এর কারণ সক্ষমতার তুলনায় এখানে রুগির চাপ অনেক বেশি, ঢাকা মেডিকেল থেকে কোন রুগীকে ই ফিরিয়ে দেয়া হয় না, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অ-গনিত রুগিদের চিকিৎসার জন্য শেষ অশ্রয় স্হল ঢাকা মেডিকেল, যেহেতু এখানে রুগির চাপ অনেক বেশি তাই কিছু অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থে অপকর্মের সাথে জড়িত থাকতে পারে, তবে এটার সজ্যা সংখ্যা বাড়ানোর কাজ চলছে, এটা সম্পন্ন হলে রুগিদের ভোগান্তি অনেক কমে যাবে এবং সেবার মান অরো উন্নত হবে।
Aminur / Aminur
জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসক দের ভূমিকা এবং স্বাস্ব্য সেবার ক্ষেত্রে তাদের বর্তমান অবস্থা
রূপগঞ্জে একাধিক মামলার আসামি নাজমুল হাসান টিপু গ্রেফতার
স্যার ফজলে হাসান আবেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা
হাদির জানাজা ঘিরে ডিএমপির নিরাপত্তা বলয়, থাকছে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা
রাজধানীতে ২৪ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দাওয়াতে ইসলামীর ইজতেমা
পোশাক শিল্পে অটোমেটিক সেলাই মেশিন প্রদর্শনী ও অটোমেশন সেমিনার অনুষ্ঠিত
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্তাধীন বিষয়ে দুদকের সংবাদ সম্মেলন
আজ প্রকাশ হয়নি প্রথম আলো-ডেইলি স্টার, বন্ধ অনলাইন
সন্ধ্যায় দেশে পৌঁছাবে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ, শনিবার জানাজা
যাত্রাবাড়িতে টাইলস মিস্ত্রি ফারুক হত্যা মামলার মূল আসামিসহ গ্রেফতার ৩
ঢাকাস্থ চাঁদপুর সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ নূরুজ্জামান হীরা