ঢাকা বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রফতানির বিপুল সম্ভাবনা


ডেস্ক রিপোর্ট  photo ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৯-৬-২০২১ রাত ১০:৩৭

বিপুল জনসংখ্যার কারণে রফতানির পাশাপাশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও বিশ্বে শীর্ষ দেশ চীন। গত বছর চীন ২ দশমিক ৪৮ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেছে। অথচ এই বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারত্ব মাত্র ০.০৫ শতাংশ। বুধবার ( ৯ জুন) ‘বাংলাদেশ-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড রিলেশনস ইন দ্য আফটারমাথ অব দ্য কোভিড-১৯ গ্লোবাল পেন্ডামিক’ বিষয়ক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড  ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) যৌথভাবে ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (এফটিএ) নিতে পারলে বাংলাদেশের জন্য চীনের বাজারে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের আমদানি বাজারের কেবল ১ শতাংশ দখল করতে পারলেই বাংলাদেশ বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করতে পারবে। দেশটিতে বর্তমানে ১ বিলিয়ন ডলারের কম মূল্যের পণ্য ও সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম ও চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান। আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী, বিসিসিসিআই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা ও সিনিয়র সহসভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহ মো. সুলতান উদ্দীন ইকবাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মূল প্রবন্ধে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতা বলছে ২০২৮ সালে চীন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হবে। অন্যদিকে চীন এখনই বিশ্বের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক দেশ। দেশটি বর্তমান বৈশ্বিক রফতানি বাণিজ্যের এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। রফতানির পাশাপাশি চীনের আমদানি বাজারও বেশ বড়। সর্বশেষ বছরে দেশটি ২.৬৯ ট্রিলিয়ন ডলার রফতানির বিপরীতে ২.৪৮ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। বিপুল ভোক্তার এই বাজারে বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, চীন বৈশ্বিক বাজার থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করছে বাংলাদেশ এখন তার মাত্র ০.০৫ শতাংশ সরবরাহ করছে। এটি যদি ১ শতাংশে উন্নীত করা যায় তবে চীনের বাজারে অতিরিক্ত ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি সম্ভব। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাকের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক বলেন, তৈরি পোশাকের বাজারের জন্য চীন একটি বড় আমদানি কেন্দ্র হিসাবে রূপান্তরিত হচ্ছে। চীনের আরএমজি বাজারের বর্তমানে ৭ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। যেখানে ভিয়েতনামের দখলে ১৯ শতাংশের বেশি। এ খাতে একটু নজর দিলেই বিশাল বাজার খুঁজে পাবে বাংলাদেশ।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে দেশটিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিপুল সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। গত বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১২.০৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি ছিল ১১.৪৯ বিলিয়ন এবং চীন বাংলাদেশ থেকে রফতানি করেছে মাত্র ৬০ মিলিয়ন ডলার। উভয় দেশের বর্তমান বাণিজ্য সম্পর্ক চীনের পক্ষে। ২০২০ সালে চীন আমাদের জন্য ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশও বাণিজ্যে সুবিধা করতে পারবে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে চীনের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীনের সফর বাণিজ্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ওই সফরে উভয় দেশের মধ্যে বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। উভয় সফরেই আমরা এফটিএ নিয়ে কথা বলেছি। এর কিছু অগ্রগতিও রয়েছে। তবে এটি দ্রুত বাস্তবায়নে আমাদের আরও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের আগেই এটি হবে এবং বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ ভালোভাবে মোকাবিলা করবে বলে আমি আশাবাদী।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। চীনে বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা রয়েছে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ৪৫ বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের লেনদেনে সুষম গতি বজায় রয়েছে। অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সহায়তা ক্রমাগত গভীর হচ্ছে। গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে চীন। ফলে চীনের বাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে চীনের পণ্য আমদানি ২৮ শতাংশ বেড়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে চীনের আমদানি আরও বাড়বে। উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়াতে বিদ্যমান শুল্কমুক্ত সুবিধা ছাড়াও এফটিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে আরও বেশি কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি আমাদের অবকাঠামো, টেলি যোগাযোগ, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ প্রায় সব খাতেই চীনের বিনিয়োগ এসেছে। তবে চীনের এখনো বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীর সফরের আলোচনা অনুযায়ী বাংলাদেশে ২৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা ২ বিলিয়ন বিনিয়োগ পেয়েছি।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরোনো। চীনের বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিও আমাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের। চীনের প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড গ্রোথ ইনিশিয়েটিভ’ ঘোষণা করেছেন। এই ইনিশিয়েটিভ চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরে বিনিয়োগের যে প্রতিশ্রুতি এসেছে তা বাস্তবায়িত হলে উভয় দেশের বাণিজ্য নতুন রূপ নেবে। বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমরা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছি।

জামান / জামান

সোনার দাম বেড়ে ভরি ছাড়াল দুই লাখ ১৭ হাজার

টাকা ছাপিয়ে নয়, প্রাকৃতিক উপায়ে মুদ্রা সরবরাহ বাড়াতে হবে: গভর্নর

জেদ্দায় উদ্বোধন হলো 'মেইড ইন বাংলাদেশ' একক এক্সপো- ২০২৫

আমদানির পরও পেঁয়াজে স্বস্তি নেই, নাগালে নতুন আলু

আন্তর্জাতিক অ্যাগ্রোফুড এক্সপো ২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন

এলপিজির দাম বাড়ল ৩৮ টাকা

এক সপ্তাহে ব্রয়লারের দাম বাড়ল ২০ টাকা, মাঝারি ইলিশ ১৫০০

ব্যবসায়ীদের একটু দায়িত্বশীল হতে হবে

বাজারে ভরপুর শীতের সবজি, তবুও কমছে না দাম

স্বল্প ব্যয়ে ন্যানোকণা তৈরিতে ড. আব্দুল আজিজের যুগান্তকারী উদ্ভাবন

নির্বাচনে স্পর্শকাতর জায়গায় বডি ওর্ন ক্যামেরা, কমবে সংখ্যা

Utilization Permission (UP) ইস্যুতে Customs Bond Management System (CBMS) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা