বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সফলভাবে শেষ হলো রিহ্যাব ফেয়ার-২০২২
ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন রিহ্যাব মেলা।শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে এ মেলা। গত ২১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া ৫ দিন ব্যাপী মেলা শেষ হয় ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ২টায়। রিহ্যাব এর পক্ষ থেকে মেলা শেষে সংবাদ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ মেলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয় “মেলা আজ ২৫ ডিসেম্বর রাত ৯ টা পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকার কারণে মেলা আজ ২ টার মধ্যে শেষ করতো হলো। তবে নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘন্টা আগে মেলা শেষ করা হলেও যে উদ্যেশ্য নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয় সেটা সফল হয়েছে বলে জানান আয়োজক কারীরা।
এই কয়েক দিনে ঢাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া আবাসন খাতকে উৎসাহিত করেছে, আশান্বিত করেছে। মেলায় বিক্রির চেয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান আসে ব্র্যান্ডিং এর জন্য। তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে মনে করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড় সহ নানা ধরনের অফার দিয়েছে, মেলা শেষ হলেও আরো কয়েকদিন এই সুযোগ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানগুলো দিতে পারবে। ক্রেতারা তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেলার আসল উদ্দেশ্য ব্রান্ডিং করা। এখানে যে সকল ক্রেতা দর্শনার্থী এসেছেন তারা সকলেই ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয় করবেন। কেউ হয়তো এখন ক্রয় করবেন আর কেউ হয়তো সামনের বছরগুলোতে ক্রয় করবেন। মেলায় যারা এসেছেন তারা আসলে সবাই ক্রেতা। কারণ এই মেলায় বিনোদনমূলক কিছু নেই, যারা মেলায় টাকা দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করেছেন তারা সবাই ক্রেতা। মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় আসা ক্রেতা নিকট তাদের পন্যের মান সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। তারা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নার্সিং করবেন আর ক্রেতারা যে প্রডাক্ট দেখে গেলেন তা যাচাই বাছাই করবেন এবং পরবর্তীতে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিবেন। এক সাথে অনেকগুলো ক্রেতা পাওয়া একমাত্র রিহ্যাব ফেয়ারেই সম্ভব।
রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২ এ দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩৫১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট, প্লট এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি এবং বুকিং হয়েছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি এবং বুকিং হয়েছে ১৬৮ কোটি টাকা। প্লট- ৮০ কোটি এবং বাণিজ্যিক স্পেস ৫৩ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার বুকিং এবং বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে ১৬ হাজার ১৩২ জন।
এ বছর অনেক অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের পণ্য তুলে ধরেছেন। বিদেশ থেকেও প্রবাসীরা তাদের পণ্য সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছেন। এবছর মেট্রোরেলের কারণে উত্তরা এবং মিরপুর এর দিকে ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। কারণ আর দুই দিন পরেই মেট্রোরেলের আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এবং আগামী বছর মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই এলাকার নাগরিকরা সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন ফলে সেখানে ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে। এ বছর ফ্ল্যাটের দাম আগের চেয়ে তুলনামূল বেশি। রড-সিমেন্ট সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, ড্যাপ এ ফার হ্রাসসহ নানা কারণে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ড্যাপে ফার এর পরিমান বাড়ানো হবে এমন প্রত্যাশা করে আবাসন খাতের জন্য নীতি সহায়তা চাওয়া হয় সরকারের কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব এর ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম) কামাল মাহমুদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) এবং মেলা কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা, রিয়াদ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ লায়ন শরীফ আলী খান, রিহ্যাব প্রেস-মিডিয়া কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক মোঃ সুলতান মাহমুদ, রিহ্যাব পরিচালক মো কামরুল ইসলাম( ইসলাম), রোটারিয়ান এস এম এমদাদ হোসেন, ড. এএফএম কামাল উদ্দিনসহ রিহ্যাব পরিচালনা পর্ষদের অন্য পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রিহ্যাব ফেয়ার ২০২১ এ প্রায় ৩৯৭ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট, প্লট এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি এবং বুকিং হয়। এর মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি এবং বুকিং হয় ১৯৮ কোটি টাকা। প্লট- ১২৫ কোটি এবং বাণিজ্যিক স্পেস ৭৪ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার বুকিং এবং বিক্রি হয়। এ ছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে ১৯ হাজার ২৩৭ জন।সর্বসাফল্য ক্রমে মেলায় আশা সকল দর্শনার্থী সংবাদকর্মীসহ সকল’কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রিহ্যাব এর ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম) কামাল মাহমুদ।
এমএসএম / এমএসএম